Municipal Election 2022: পুরভোট পিছতে সায় রাজ্য সরকারের, আজই সম্ভবত নতুন দিন ঘোষণা কমিশনের
যদিও রাজ্য সরকারের তরফে এটাও বলা হয়েছে যে কোভিড পরিস্থিতি মোকাবিলায় সবরকমভাবেই প্রস্তুত ছিল রাজ্য সরকার
নিজস্ব প্রতিবেদনঃ পুরভোট পিছিয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে সায় দিল রাজ্য সরকার। শুক্রবারই নির্বাচন কমিশনের তরফে রাজ্য সরকারের মতামত চাওয়া হয়। সেই বিষয়ে রাজ্য সরকার, শনিবার সকালে নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দিয়েছে যে ভোট পিছনর ক্ষেত্রে তাদের কোনও আপত্তি নেই। যদিও রাজ্য সরকারের তরফে এটাও বলা হয়েছে যে কোভিড পরিস্থিতি মোকাবিলায় সবরকমভাবেই প্রস্তুত ছিল রাজ্য সরকার। নির্বাচন কমিশনকে সাহায্যের জন্য যা যা দরকার সেইসব বিষয়েই প্রস্তুত ছিল তারা। কিন্তু যেহেতু সবপক্ষ চাইছে, তাই নির্বাচন কমিশন যদি চায় তাহলে ভোট পিছিয়ে দিতে পারে। অর্থাৎ নির্বাচন পিছানোর ক্ষেত্রে তাদের সমর্থনের কথাই চিঠি দিয়ে নির্বাচন কমিশনকে জানিয়ে দিল রাজ্য সরকার। এরফলে কমিশন চাইলে এবার ভোট পিছিয়ে দিতে পারে কারণ এইক্ষেত্রে আর কোনও তরফ থেকেই বাধা রইল না।
যদি কবে নাগাদ ভোট হবে সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে নির্বাচন কমিশন। তারা সব পক্ষের মতামত চেয়েছিল। কিন্তু আগামী তারিখ কী হবে সেই বিষয়ে সম্পূর্ণ সিদ্ধান্ত কমিশনই নেবে। সব রাজনৈতিক দলই ছেয়েছে যে ২ থকে ৪ অথবা ৬ সপ্তাহ পিছিয়ে যাক ভোট। তৃণমূলের তরফেও বলা হয় যে ১২ ফেব্রুয়ারি ভোট হলে তাদের কোনও আপত্তি নেই। সমস্ত পক্ষের কথা বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেবে কমিশন। আজই বিজ্ঞপ্তি জারি করে তারা জানিয়ে দেবে কবে আবার নির্বাচন করা হবে।
বর্তমান পরিস্থিতিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত করার ক্ষেত্রে শুধুমাত্র তারিখ চূড়ান্ত করার সিদ্ধান্তই বাকি রয়েছে। যদি কমিশন এখনো তাদের তরফে জানানো হয়নি যে তারা ভোট পিছচ্ছে কিনা। সব পক্ষের মতামত তারা পেয়েছেন এবং এরপরে তারা নিজেরা আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবেন নির্বাচনের বিষয়ে। এবং এই ক্ষেত্রে অবশ্যই রাজ্যের মুখ্য সচিবের সঙ্গেও তাদের আলোচনা হবে। এরপরেই তারা জানাবেন যে আবার কবে ভোট হবে।
আরও পড়ুনঃ Bikaner-Guwahti Train Accident: উত্তরবঙ্গে রেল দুর্ঘটনায় আহত ঠিক কতজন? সংখ্যা ঘিরে জোর 'চাপানউতোর'
একাধিক জায়গা থেকে একেক রকম মতামত উঠে এসেছে। যেমন তৃণমূল কংগ্রেস চাইছে ১২ ফেব্রুয়ারি হোক ভোট। অন্যদিকে বিজেপি চাইছে অন্তত ৪ সপ্তাহ পিছিয়ে যাক ভোট। এই সব মতামতের ভিত্তিতেই আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবে নির্বাচন কমিশন। যদি ফেব্রুয়ারি মাসের আগে যে পুরভোট হচ্ছেনা তা একপ্রকার নিশ্চিত। এরপরে ফেব্রুয়ারি মাসের কোন তারিখে নির্বাচন হবে তা সম্ভবত আজই জানিয়ে দেবে কমিশন।
বাম নেতা বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, "আমাদের পরিষ্কার বক্তব্য ভোট ৪ সপ্তাহ পিছতে হবে। হাইকোর্ট বলেছে ৪ থেকে ৬ সপ্তাহ পিছনো হোক। ২ সপ্তাহের তত্ত্ব যারা হাজির করছেন তারা হাইকোর্টের অর্ডারকে ভায়োলেট করছেন।" তিনি আরও বলেন, "রাজ্য সরকারের ইচ্ছা অনিচ্ছার উপরে এটা নির্ভর করছে না। এটা নির্ভর করছে সম্পূর্ণ স্বাধীন সিদ্ধান্তে উপরে। যে সিদ্ধান্ত নির্বাচন কমিশনকে নিতে হবে হাইকোর্টের নির্দেশে। রাজ্য সরকার কী বলল তা আদৌ কোনও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বলে আমরা মনে করিনা। রাজ্য সরকার বারে বারে বিভিন্ন কর্মসূচী নিয়েছে যার ফলে কোভিড সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে। সুতরাং সেই রাজ্য সরকারের বোধ বুদ্ধির উপরে, আমরা যারা আদালতে মামলা করেছি, তারা ভরসা রাখিনা।"
কংগ্রেস নেতা প্রদীপ ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, "খুবই ভাল কথা। কিন্তু এই ভূমটা এরকটু আগে ভাঙলে খুবই ভাল হত। এতগুলো মিছিল হত না। আমরা খুশি হতাম যদি আরেকটু আগে বন্ধ হত। কিন্তু নির্বাচন কমিশন যদি ১৫ দিনের জন্য বন্ধ করে তাতে কতটা লাভ হবে সেই বিষয়ে সন্দেহ আছে।" তিনি আরও বলেন যে তিনি মনে করেন নির্বাচন দুমাস পিছিয়ে গেলে সব থেকে ভাল হয়।
তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ জানিয়েছেন, "রাজ্য সরকার মাঝে মাঝেই পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেন, নিজেরা দেখেন। মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী এবং প্রশাসন সব বিষয়েরই খবর রাখেন। এর উপর দাঁড়িয়ে, বাস্তবোচিতভাবে, যেটা মনে হয়েছে, সেটা রাজ্য সরকারের তরফ থেকে কমিশনকে জানানো হয়েছে।"
বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, "এটা তো পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার ণয় এটা তৃণমূল কংগ্রেস সরকার। সরকারের মুখপাত্র হিসেবে তৃণমূলের নেতারাই বিভিন্ন সময়ে আক্রমণাত্মক বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন। আমরা বলেছিলাম সংক্রমণ যে মাত্রায় পৌঁছেছে, এই মুহূর্তে সরকারের কোনও পরিকাঠামো নেই সংক্রমণকে রোধ করার, এই আক্রান্ত মানুষের পাশে দাঁড়াবার।" তিনি আরও বলেন যেখানে মানুষ ভীত সেখানে মানুষকে বাদ দিয়ে একজনকে কাউন্সিলর করা, বোর্ড গঠন করা, এটা গণতান্ত্রিক চিন্তাভাবনার পরিপন্থী।