Firhad Hakim: 'জানতাম-ই না!' পুর নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে বিস্ফোরক ফিরহাদ...
নাম না করে অয়ন শীলের সংস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। পাশাপাশি, পুরসভায় নিয়োগ সংক্রান্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতে যে বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, আজ সেটাও সরকারিভাবে বললেন পুরমন্ত্রী।
মৈত্রেয়ী ভট্টাচার্য: "পুর নিয়োগ দুর্নীতি সম্পর্কে আমি আগে জানতাম না। কোর্টে মামলা হয়েছে শুনে আমি দফতরের প্রিন্সিপ্যাল সেক্রেটারি এবং ডিরেক্টরদের তদন্ত করে রিপোর্ট দিতে বলেছিলাম। কেন একটা বেসরকারি সংস্থাকে দায়িত্ব দেওয়া হল গ্রুপ-ডি নিয়োগের জন্য? তার রিপোর্ট এখনও পাইনি। তার মাঝেই শুনলাম, হাইকোর্ট সিবিআই তদন্ত দিয়েছে। আজ আবার সুপ্রিম কোর্ট সেই নির্দেশে স্থগিতাদেশ দিয়েছে বলে শুনলাম। আমাদের দফতরের তদন্ত চলবে। আমি তো এখনও বুঝতে পারছি না, এই নিয়োগে বেসরকারি সংস্থাকে কেন যুক্ত করা হল? আশা করছি, ডিএলবির তদন্তে সেটা উঠে আসবে! সুপ্রিম কোর্ট স্থগিতাদেশ দিলেও ডিপার্টমেন্টাল এনকোয়ারি জারি রাখছে পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর। কোথা থেকে এল এই সংস্থা? কেন নিয়োগের সঙ্গে যুক্ত করা হল এই বেসরকারি সংস্থাকে? সবটা খোঁজ নিয়ে রিপোর্ট দিতে বলেছি।' নাম না করে এভাবেই অয়ন শীলের সংস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। পাশাপাশি, পুরসভায় নিয়োগ সংক্রান্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতে যে বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, আজ সেটাও সরকারিভাবে বললেন পুরমন্ত্রী।
প্রসঙ্গত, নিয়োগ দুর্নীতি মামলা থেকে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে অব্যাহতির পর সুপ্রিম কোর্ট পুরসভায় নিয়োগ দুর্নীততে কলকাতা হাইকোর্টের সিবিআই তদন্তের নির্দেশের উপরও স্থগিতাদেশ জারি করেছে। ফলে পুর নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে সিবিআই আপাতত স্থগিত হয়ে গেল। একইসঙ্গে স্থগিতাদেশ জারি হয়েছে ইডির তদন্তের উপরেও। একসপ্তাহের জন্য এই স্থগিতাদেশ জারি করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, স্কুলে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির তদন্ত করার সময় তথ্যপ্রমাণ জোগাড় করতে গিয়েই পুরসভাতে নিয়োগেও দুর্নীতির খোঁজ পায় ইডি। কিন্তু নিয়োগ দুর্নীতি মামলা থেকে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায়কে সরানোর পর এবার তাঁর পুরসভায় নিয়োগ দুর্নীতিতে সিবিআই-ইডি তদন্তের নির্দেশের উপরও জারি হল স্থগিতাদেশ।
উল্লেখ্য,সোমবারই পুরসভায় নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এফআইআর রুজু করে সিবিআই। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায়ের নির্দেশ মেনেই এফআইআর রুজু করে সিবিআই। অয়ন সিল সহ অন্যান্যদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করে সিবিআই। অয়ন শীলের বাড়িতে উদ্ধার করা নথির তথ্য মুখবন্ধ খামে আদালতে জমা দিয়েছিল ইডি। ইডির সেই রিপোর্টে মেলে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। অয়ন শীলের বাড়িতে পুরসভায় নিয়োগ সংক্রান্ত একাধিক নথি উদ্ধার হয়েছে বলে রিপোর্টে দাবি করে ইডি। উদ্ধার হওয়া নথিতে কাঁচড়াপাড়া, নিউ ব্যারাকপুর, টিটাগড়, বরানগর, কামারহাটি, হালিশহর, দক্ষিণ দমদম, উত্তর দমদমের মত একাধিক পুরসভার নাম রয়েছে বলে ইডি সূত্রে খবর।
ইডি দাবি করে, অপরাধ সংঘটিত করার পিছনে রয়েছে উচ্চ প্রভাবশালী ব্যক্তি। পুরসভার নিয়োগে রাজনৈতিক নেতাদেরও মদত রয়েছে। ওএমআর কারচুপি করে বেআইনি নিয়োগ করা হয়। চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে কম করে ২০০ কোটি টাকা আয় করেছেন অয়ন শীল। ইডি এই রিপোর্ট জমা দেওয়ার পরই পুর নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে বড় নির্দেশ দেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায়। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, সিবিআই চাইলে পুরসভায় নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তও করতে পারে। কারণ তাঁর মতে, দুর্নীতির জাল অনেক দূর দূর পর্যন্ত ছড়িয়ে। তাই চাইলে ইডির রিপোর্টের সূত্র ধরে এফআইআর দায়ের করে তদন্ত করতে পারে সিবিআই। তদন্ত করে রিপোর্ট জমা দেবে সিবিআই। তারপরই পুরসভা নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অয়ন সিল সহ অন্যান্যদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করেছিল সিবিআই।