মা-মেয়ে দুজনের সঙ্গেই 'ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক' প্রেমিক সৌরভের, গড়িয়াহাট খুনের তদন্তে নয়া মোড়

ফোনে 'হার্টবিট' নামে সৌরভের নম্বর সেভ করে রেখেছিলেন ডিম্পল। খুনের পর প্রথমে দিল্লি হয়ে চণ্ডীগড় উড়ে যায় সৌরভ।

Reported By: সুকান্ত মুখোপাধ্যায় | Edited By: সুদেষ্ণা পাল | Updated By: Dec 14, 2019, 05:21 PM IST
মা-মেয়ে দুজনের সঙ্গেই 'ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক' প্রেমিক সৌরভের, গড়িয়াহাট খুনের তদন্তে নয়া মোড়
ডিম্পল ও গুড়িয়া (বাঁদিকে), সৌরভ পুরী (ডানদিকে)

নিজস্ব প্রতিবেদন : মা ও মেয়ে, দুজনের সঙ্গেই একসঙ্গে 'সম্পর্ক' ছিল ধৃত প্রেমিক সৌরভের। মা ও মেয়ে দুজনের সঙ্গেই 'সেক্স চ্যাট' করত সৌরভ। লিভ-ইন সম্পর্কও ছিল। গড়িয়াহাটে বৃদ্ধা খুন কাণ্ডের তদন্তে সামনে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, ফেসবুকে প্রথম গুড়িয়ার সঙ্গে যোগাযোগ হয় সৌরভের। সেখান থেকে ডিম্পলের সঙ্গেও বন্ধুত্ব হয় সৌরভের। ফোনে 'হার্টবিট' নামে সৌরভের নম্বর সেভ করে রেখেছিলেন ডিম্পল। সেই 'হার্টবিট' নাম দেখেই সন্দেহ বাড়ে পুলিসের।

ধৃত সৌরভ পুরীকে জেরা করে পুলিস আরও জানতে পেরেছে, খুনের আগে ৩ মাস ধরে বেশ কয়েকবার কলকাতায় যাতায়াত করে সে। প্রতিবারই কলকাতায় এসে রিচি রোডে ডিম্পলের ফ্ল্যাটেই উঠত। এবার খুনের দিন ১৫ আগে সৌরভ কলকাতায় আসে। তবে পুলিসের দৃষ্টি ঘোরানোর জন্য বুধবার দিল্লির বিমানবন্দর লোকেশনের একটি ছবি ফেসবুকে পোস্ট করে। যদিও সেদিন রাতেই বৃদ্ধা উর্মিলা ঝুন্ডকে খুন করে সৌরভ। বৃহস্পতিবার নিজের ঘরেই উদ্ধার হয় গড়িয়াহাটের গরচা ফার্স্ট লেনের বাসিন্দা বৃদ্ধা উর্মিলা ঝুন্ডের ক্ষতবিক্ষত দেহ। খুনের ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়।

মুণ্ডচ্ছেদ করে নৃশংসভাবে খুন করা হয়েছিল বৃদ্ধা উর্মিলা ঝুন্ডকে। তলপেটে একাধিকবার কোপানোর চিহ্ন ছিল। কিন্তু কোনও গোঙানি বা চিত্‍কারের আওয়াজ পায়নি কেউ। আর এটাই মূল চাবিকাঠি হয়ে ওঠে পুলিসি তদন্তে। শুধুমাত্র লুঠপাট নাকি এর পিছনে অন্য কোনও পারিবারিক বিবাদ রয়েছে? তদন্তে নেমে সেই সূত্র ধরে এগোয় পুলিস। ২৪ ঘন্টা কাটার আগে শুক্রবারই খুনের কিনারা করে ফেলে কলকাতা পুলিস। গ্রেফচার করা হয় বৃদ্ধার পুত্রবধূ ডিম্পল ও অষ্টাদশী নাতনি গুড়িয়াকে। ধৃত এই দুজনকে জেরা করেই উঠে আসে সৌরভ পুরীর নাম।

আরও পড়ুন, 'সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করলে, ছাড়া হবে না', বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে কড়া বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর

জেরায় জানা যায়, খুনের সময় উপস্থিত ছিলেন না ডিম্পল। তবে খুনের আগে বৃদ্ধার সঙ্গে ডিম্পলকে মোবাইল ফোনে কথা বলানো হয়। পুলিস আরও জানতে পারে বৃদ্ধার মুণ্ডচ্ছেদ করে সৌরভ। পুত্রবধূ ডিম্পল ও নাতনি গুড়িয়াকে জেরা করেই সৌরভের গতিবিধি জেনে যায় পুলিস। জানতে পারে, সেদিন উর্মিলা ঝুন্ডকে খুনের পর গরচা রোডে বৃদ্ধার ঘরের আলমারি থেকে নগদ এক লাখ টাকা নিয়ে বেরয় সৌরভ। এরপর রিচি রোডের ফ্ল্যাটে এসে গুড়িয়াকে দিয়ে অনলাইনে বিমানের টিকিট কাটে। তারপর প্রথমে দিল্লি হয়ে চণ্ডীগড় উড়ে যায় সৌরভ। ডিম্পলের মোবাইলে 'হার্টবিট' নাম দেখেই সন্দেহ হয় পুলিসের। সেই সূত্র ধরেই গতকাল রাতে পঞ্জাব থেকে প্রেমিক সৌরভ পুরীকে গ্রেফতার করে পুলিস।

.