অধিকার খর্বে ক্ষুব্ধ সরকারি কর্মচারীরা
সরকারি কর্মচারীদের ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকার খর্ব করতে চলেছে রাজ্য সরকার। এর জন্য ১৯৮১ সালের সার্ভিস রুল বুকের সংশোধনী পরিবর্তন করা হবে বলে জানিয়েছেন শ্রমমন্ত্রী পুর্ণেন্দু বসু।
সরকারি কর্মচারীদের ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকার খর্ব করতে চলেছে রাজ্য সরকার। এর জন্য ১৯৮১ সালের সার্ভিস রুল বুকের সংশোধনী পরিবর্তন করা হবে বলে জানিয়েছেন শ্রমমন্ত্রী পুর্ণেন্দু বসু। পরিবর্তে সরকারি কর্মচারীদের শুধু সমিতি করার অধিকার থাকবে বলে জানিয়েছেন তিনি। ১৯৮১ সালে সার্ভিস রুল বুকে সংশোধনী এনে সরকারি কর্মচারীদের ট্রেড ইউনিয়নের অধিকার দিয়েছিল তত্কালীন বামফ্রন্ট সরকার। গত মঙ্গলবার মহাকরণেই পুর্ণেন্দুবাবু বলেছিলেন, ওই সংশোধনী বেআইনি। তাঁর বক্তব্য ছিল ট্রেড ইউনিয়ন অ্যাক্ট সরকারি কর্মচারীদের জন্য প্রযোজ্য নয়। বৃহস্পতিবার তিনি বলেছেন একাশি সালের বিধি ফের সংশোধন করবে রাজ্য সরকার। ফলে সরকারি কর্মচারীরা আর ট্রেড ইউনিয়ন করতে পারবেন না। তবে তাদের সমিতি গঠনের অধিকার থাকছে। শ্রম মন্ত্রীর এই ঘোষণার পর সরকারি কর্মচারীদের পাশাপাশি প্রতিবাদে সরব হয়েছেন বামেরাও।
পূর্ণেন্দুবাবুর বক্তব্য, ডানলপ করখানায় 'স্ক্র্যাপ' বিক্রি করে কর্মীদের বেতন দেওয়া হচ্ছে। কর্মীসংখ্যা ১২০০ থেকে ৭৮৫তে নেমে গেছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও সকলে পিএফ, পিএসআই, গ্রাচুয়িটির বকেয়া টাকা পাচ্ছেন না। এই অবস্থায় লাভ হচ্ছে কোথা থেকে? উত্পাদনও ভালো হচ্ছে না। এইসব ক্ষেত্রে সংস্থগুলির পুনরুজ্জীবনের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থের সংস্থান করবে সরকার। ইউনিয়ন প্রতিনিধি, মালিক পক্ষের প্রতিনিধি এবং সরকারি প্রতিনিধিদের নিয়ে কমিটি গড়ে নিজেদের মধ্যে আলেচনা করে 'রিভাইভাল প্যাকেজ'কে কার্যকরী করা হবে। সিটু সহ ৪টি শ্রমিক ইউনিয়ন এবং মালিক পক্ষের সঙ্গে ইতিমধ্যেই আলেচনা হয়েছে। খুব শীঘ্রই সরকারি প্রতিনিধিরা পরিদর্শনে যাবেন এবং তাঁদের রিপোর্টের ভিত্তিতেই ঠিক হবে পরবর্তী কর্মসূচী।
একাধিক সমিতি নয়, সব রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের একটা সমিতির আওতায় থাকা উচিত। শ্রমমন্ত্রীর এই ঘোষণার পরই ক্ষোভে ফেটে পড়েন সরকারি কর্মচারীরা। তাদের অভিযোগ, সরকার তাদের আন্দোলন করার অধিকারে হস্তক্ষেপ করছে। শ্রমমন্ত্রীর এই সিদ্ধান্ত তারা মানবেন না বলে জানিয়েছেন সরকারি কর্মীরা। পুলিসকে রাজনৈতিক প্রভাব মুক্ত করতে আগেই পুলিসের সংগঠন ভেঙে দিয়েছে রাজ্য সরকার। এবার কোপ পড়ল সরকারি কর্মচারীদের ওপর। শ্রমমন্ত্রী আগেই সতর্ক করেছেন, এই ইস্যুতে মহাকরণে কোনও আন্দোলন, বিক্ষোভ হলে ১৪৪ ধারা জারি করা হবে। তবে বৃহস্পতিবার পুর্ণেন্দু বসুর ঘোষণার পর বৃহত্তর আন্দোলনের হুমকি দিয়েছেন সরকারি কর্মচারীরা।