জোড়া বিলের ব্যাখ্যা চেয়ে মমতাকে চিঠি রাজ্যপালের, ধনখড়ের পাশে বাম-কংগ্রেস
পশ্চিমবঙ্গ গণপিটুনি প্রতিরোধ বিল,তপশিলি জাতি ও উপজাতিদের জন্য রাজ্য কমিশন গঠন বিল- জোড়া বিল নিয়ে রাজভবন-নবান্নের মধ্যে চলছে কুস্তি।
নিজস্ব প্রতিবেদন: বিধানসভার বিল রাজভবনে আটকে থাকা বিতর্কে নতুন মাত্রা। জটিলতা কাটাতে বৈঠক চেয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। আলোচনা চেয়ে দিয়েছেন, চিঠি বিরোধী দলের জনপ্রতিনিধিদেরও।
পশ্চিমবঙ্গ গণপিটুনি প্রতিরোধ বিল,তপশিলি জাতি ও উপজাতিদের জন্য রাজ্য কমিশন গঠন বিল- জোড়া বিল নিয়ে রাজভবন-নবান্নের মধ্যে চলছে কুস্তি। সোমবার তা নতুন মাত্রা পেল। বিল নিয়ে আলোচনা চেয়ে মুখ্যমন্ত্রী-সহ বিরোধীদের চিঠি দিলেন রাজ্যপাল। বিধানসভার শীতকালীন অধিবেশন শেষ হয়েছে অনেকদিন। গণপিটুনি প্রতিরোধ এবং তপশিলি জাতি ও উপজাতিদের জন্য রাজ্য কমিশন গঠন, দুটি বিল এখনও রাজভবনে আটকে। তৃণমূল শিবিরের অভিযোগ, উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে দুটি বিল রাজভবনে আটকে রেখেছেন রাজ্যপাল।
চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী-সহ বিরোধীদের বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। ১৭ জানুয়ারি দুপুর ১২ টায় রাজভবনে ওই বৈঠক। আলোচনা চেয়ে যে চিঠি রাজ্যপাল দিয়েছেন, তাতে ক্ষোভও প্রকাশ পেয়েছে। জগদীপ ধনকড় লিখেছেন, তিনি খুব মনোযোগ দিয়ে দুটি বিল বিবেচনা করেছেন। রাজ্য বিধানসভা ও রাজ্য সরকারের কাছে দুটি বিলের বিষয়ে কিছু তথ্য জানতে চেয়েছিলেন। তাঁর তরফে বারবার আগ্রহ দেখানো হলেও, প্রয়োজনীয় তথ্য দেওয়া হয়নি।
তপশিলি জাতি ও উপজাতিদের জন্য রাজ্য কমিশন গঠন সংক্রান্ত বিল প্রসঙ্গে রাজ্যপাল চিঠিতে লিখেছেন, সংবিধানের ৩৩৮ এবং ৩৩৮ এ ধারা অনুযায়ী তপশিলি জাতি ও উপজাতিদের জন্য জাতীয় কমিশন আগে থাকতেই রয়েছে। আলাদা কমিশন গঠনের জন্য রাজ্যের আনা বিল কার্যত এক। তাহলে দুইয়ের পার্থক্য কোথায়? রাজ্য সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরের সচিব ও আধিকারিক আলাদা করে কোনও পার্থক্য তাঁকে বোঝাতে পারেননি। তাই এবিষয়ে আরও আলোকপাত প্রয়োজন।
গণপিটুনি প্রতিরোধ বিল নিয়ে বিরোধীদের অভিযোগ ছিল, প্রথমে তাঁদের যে খসড়া দেওয়া হয়, তাতে মৃত্যুদণ্ডের বিধান ছিল না। কিন্তু স্পিকার যে খসড়া বিল পড়ে শোনান তাতে মৃত্যুদণ্ডের উল্লেখ ছিল। তাঁদের অন্ধকারে রেখে, রাজ্য সরকার ওই সংযোজন করে বলে অভিযোগ বিরোধীদের। সোমবারের চিঠিতে সেই প্রসঙ্গ উল্লেখ করে রাজ্যপাল লিখেছেন, গণপিটুনি প্রতিরোধ বিল নিয়ে বিধানসভার অধিবেশনে শেষ পর্যন্ত কী সিদ্ধান্ত হল, বারবার অনুরোধের পরেও তাঁকে তা জানানো হয়নি। উল্টে বিষয়টি নিয়ে অচলাবস্থা তৈরি করা হয় যা একেবারেই অসমর্থনীয়।
বিল নিয়ে আলোচনা চেয়ে রাজ্যপাল যে চিঠি দিয়েছেন তাতে আমন্ত্রিত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, বিরোধী দলনেতা আবদুল মান্নান, সিপিএম বিধায়ক সুজন চক্রবর্তী ও বিজেপি বিধায়ক মনোজ টিগ্গা। এছাড়াও রয়েছেন আরও কয়েকজন বিরোধী নেতা। বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তীর কথায়,''রাজ্যপাল ব্যাখ্যা চাইলে দিতে আপত্তি কোথায়? কেন্দ্রীয় কমিশন থাকা সত্ত্বেও অনেক রাজ্যেই তপশিলিদের জন্য আলাদা গঠন করা হচ্ছে। সেটা রাজ্যপালকে জানাক রাজ্য। বিরোধী দলনেতা আবদুল মান্নান বলেন,''স্পিকারের অনুমতিসাপেক্ষে বিরোধীদের অন্ধকারে রেখে বিলের বয়ান বদলানো যায় না। বিল পাশের আগে বিধায়কদের দেখানো বিলই পেশ করা উচিত বিধানসভায়। ''
আরও পড়ুন- কুমারগঞ্জ-কাণ্ডে মশাল মিছিল ঘিরে বিজেপির মহিলা মোর্চা-পুলিস ধুন্ধুমার