ধনেখালি কাণ্ডে সিআইডি তদন্তে খুশি নয় আদালত

ফের কলকাতা হাইকোর্টে ধাক্কা খেল রাজ্য সরকার। ধনেখালিতে পুলিস লকআপে তৃণমূল কর্মী মৃত্যুর ঘটনায় সিআইডি তদন্তে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করল হাইকোর্ট। তদন্তে নাক গলানোর অভিযোগ উঠল স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক অসীমা পাত্রের বিরুদ্ধেও। বিধায়ক যে তদন্তে নাক গলায়, সেই তদন্ত কি ভাবে নিরপেক্ষ থাকে? রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেলের কাছে সে প্রশ্নের জবাবও জানতে চেয়েছে হাইকোর্ট। সোমবার এই মামলার পরবর্তী শুনানি। সে দিন এই ঘটনায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ সংক্রান্ত রায় দিতে পারে আদালত।  

Updated By: May 8, 2013, 04:49 PM IST

ফের কলকাতা হাইকোর্টে ধাক্কা খেল রাজ্য সরকার। ধনেখালিতে পুলিস লকআপে তৃণমূল কর্মী মৃত্যুর ঘটনায় সিআইডি তদন্তে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করল হাইকোর্ট। তদন্তে নাক গলানোর অভিযোগ উঠল স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক অসীমা পাত্রের বিরুদ্ধেও। বিধায়ক যে তদন্তে নাক গলায়, সেই তদন্ত কি ভাবে নিরপেক্ষ থাকে? রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেলের কাছে সে প্রশ্নের জবাবও জানতে চেয়েছে হাইকোর্ট। সোমবার এই মামলার পরবর্তী শুনানি। সে দিন এই ঘটনায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ সংক্রান্ত রায় দিতে পারে আদালত।
 
১৮ জানুয়ারি ধনেখালির তৃণমূল কর্মী কাজি নাসিরুদ্দিনকে গ্রেফতার করে পুলিস। ১৯ জানুয়ারি ভোর রাতে থানার লক আপে তার ক্ষতবিক্ষত মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। নাসিরুদ্দিনের স্ত্রী মানুজা বিবি অভিযোগ করেন, তার স্বামীকে লক আপে পিটিয়ে মেরেছে পুলিস। দলীয় কর্মীর অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় রাজনৈতিক চাপ বাড়তে থাকে দলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির ওপর। তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় সিআইডিকে। সিআইডির জেলা শাখা ডিডিআই শুরু করে তদন্ত। কংগ্রেস নেতা আবদুল মান্নান সেই তদন্তে অনাস্থা প্রকাশ করেন। ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে সিবিআই তদন্ত চেয়ে হাইকোর্টে মামলা দায়ের হয়। প্রধান বিচারপতি অরুণ মিশ্র ও বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির জিভিশন বেঞ্চ শুনানির জন্য এই মামলা গ্রহণ করে।
বুধবার সেই মামলার শুনানির শুরুতেই চাপে পড়ে যায় রাজ্য। আবেদনকারীদের পক্ষ থেকে আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য আদালতকে জানান, তদন্ত চলাকালীন ভারপ্রাপ্ত তদন্তকারী অফিসার এবং ধনেখালি থানার ওসিকে দফায় দফায় ফোন করে তদন্তের কাজ প্রভাবিত করতে চাইছেন ধনেখালির তৃনমূল কংগ্রেস বিধায়ক অসীমা পাত্র। বিচারপতি জয়মাল্য বাগচি রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেলের কাছে জানতে চান, অসীমা পাত্রের বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। অ্যাডভোকেট জেনারেল বিমল চ্যাটার্জি জানান, অসীমা পাত্রের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। প্রধান বিচারপতি জানতে চান, অসীমা পাত্রের সঙ্গে ভারপ্রাপ্ত তদন্তকারী অফিসার এবং ধনেখালি থানার ওসির ফোনে কতক্ষণ কথা হয়েছে এবং কি কথা হয়েছে, তা অ্যাডভোকেট জেনারেল জানেন কি না।
জবাবে নিরুত্তর থাকেন বিমল চ্যাচার্জি। এরপর হাইকোর্ট সিআইডি তদন্তের প্রতি তীব্র উষ্মা প্রকাশ করে। জয়মাল্য বাগচি মন্তব্য করেন, তদন্তের কাজে যদি বিধায়ক হস্তক্ষেপ করেন, তাহলে তা নিরপেক্ষ থাকেকি? আবেদনকারীদের আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্যকে এদিন কার্যত কোনও সওয়াল জবাব করতেই হয়নি। আইনজ্ঞ মহলের ধারণা, আজকের শুনানিতে সিআইডি তদন্তের প্রতি তীব্র অনাস্থা প্রকাশ করে আবেদনকারীদের বার্তা দিতে চেয়েছে ডিভিশন বেঞ্চ। ঠিক কী কারণে ওসি এবং তদন্তকারী অফিসারকে ফোন করেছিলেন অসীমা পাত্র, তার বিস্তারিত কল ডিটেল সোমবার শুনানির সময় আদালতে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কল ডিটেল পাওয়ার পরই আদালত রায় ঘোষণা করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

.