শাহের সভার আগের দিনই অসমের নাগরিকপঞ্জির প্রতিবাদে বুদ্ধিজীবীরা
শুক্রবার কলকাতার প্রেস ক্লাবে প্রতিবাদ সভার ডাক দিয়েছেন বিশিষ্টরা।
নিজস্ব প্রতিবেদন: অসমের নাগরিকপঞ্জির বিরোধিতায় এবার আসরে নামছেন তৃণমূলপন্থী বুদ্ধিজীবীরা। শুক্রবার কলকাতার প্রেস ক্লাবে প্রতিবাদ সভার ডাক দিয়েছেন তাঁরা। ওই সভায় থাকতে পারেন মনোজ মিত্র, শাওলি মিত্র, বিভাস চক্রবর্তী, জয় গোস্বামী, কল্যাণ রুদ্র, নৃসিংহ প্রসাদ ভাদুড়ি, আবুল বাশার ও গৌতম ঘোষ প্রমুখ। অসমে নাগরিকপঞ্জির তালিকায় না থাকা মানুষদের পাশে দাঁড়াতে এই সভা বলে জানানো হয়েছে।
১০ অগাস্ট অর্থাত্ শুক্রবার বিকেল ৩টেয় প্রেস ক্লাবে প্রতিবাদ সভায় থাকবেন বিশিষ্টরা। 'অসমের পাশে বাংলা' শীর্ষক প্রেস বিবৃতিতে তাঁরা জানিয়েছেন,'চল্লিশ লক্ষ মানুষ রাতারাতি রাষ্ট্রহীন। নিজের পাড়া, নিজের উঠোনে নিজের বাড়িতে তাঁরা শরণার্থী। তাদের নাম নেই জাতীয় নাগরিকপঞ্জিতে। তাঁরা কোথায় যাবেন, কোন দেশে যাবেন, কেউ জানে না। এই ভয়ঙ্কর অমানবিক ঘটনার জন্য যাঁরা দায়ী তাঁদের জবাব দিতে হবে। এবার সময় হয়েছে পথে নামার। রাস্তাই একমাত্র রাস্তা।' প্রসঙ্গত, ১১ অগস্ট, শনিবার কলকাতায় বিজেপির যুব মোর্চার সমাবেশে আসছেন অমিত শাহ। ওই সভায় নাগরিকপঞ্জি নিয়ে মমতাকে প্রত্যাশিতভাবে আক্রমণ করবেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি। তার আগের দিন বিশিষ্টদের প্রতিবাদ সভা যথেষ্ট তাতপর্যপূর্ণ বলে মত রাজনৈতিক মহলের একাংশের।
অসমে নাগরিকপঞ্জি প্রকাশের পর থেকেই সুর চড়িয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর নির্দেশেই বৃহস্পতিবার শিলচরে যায় তৃণমূলের একটি প্রতিনিধি দল। ওই দলে ছিলেন সাংসদ সুখেন্দু শেখর রায়, কাকলি ঘোষ দস্তিদার, রত্না দে নাগ, মমতা ঠাকুর, নাদিমুল হক ও অর্পিতা ঘোষ এবং বিধায়ক মহুয়া মৈত্র, রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। তাঁদের শিলচর বিমানবন্দরের বাইরে পা ফেলতে দেয়নি অসম পুলিস। মারধর করা হয়েছে বলেও অভিযোগ। পাল্টা অসম পুলিস দাবি করে, তাঁদের দুজন মহিলা কনস্টেবল ও এক পুলিস কর্মীকে শারীরিক হেনস্থা করেন তৃণমূলের বিধায়ক মহুয়া মৈত্র। তৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা তথা জাতীয় মুখপাত্র ডেরেক ওব্রায়েনের কটাক্ষ করেছিলেন, দেশজুড়ে সুপার এমার্জেন্সি লাগু করেছে মোদী সরকার। ডেরেকের সুরেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, ''সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলতে গিয়েছিলেন আমাদের প্রতিনিধিরা। বিজেপির মুখোশ খুলে গিয়েছে। রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে ও সত্য চাপা দিতেই আজ তৃণমূলের প্রতিনিধিদলকে বাধা দেওয়া হয়েছে। বিজেপি সরকারের বলপ্রয়োগের ধরণ দেখে মনে হচ্ছে যেন দেশে সুপার ইমারজেন্সি চলছে।''
অসমে মতো পশ্চিমবঙ্গেও নাগরিকপঞ্জি চালুর দাবিতে দক্ষিণ কলকাতায় মিছিল করেছে বিজেপি। রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রৈপাঠির সঙ্গে দেখাও করেছেন দিলীপ ঘোষরা। তার পাল্টা মমতা বলেছিলেন, ওরা কারা? বাংলার রাজনীতিতে কী গুরুত্ব ওদের? কেউ চেনে না। কয়েকটা গুন্ডার দল। নিজেদের অস্তিত্বই নেই, তারা আবার নাগরিকপঞ্জির দাবি করছে। দেখি কীভাবে বাংলায় নাগরিকপঞ্জী চালু করে। অসমে নাগরিকপঞ্জির বিরোধিতা ও শিলচরে তৃণমূলের প্রতিনিধি দলকে বাধা দেওয়ার অভিযোগে রাজ্যে কালো দিবসও পালন করে তৃণমূল। এবার আসরে নামছেন বুদ্ধিজীবীরা।
আরও পড়ুন- অসম থেকে ফিরছি পর্ব ২: 'জোয়ানদের তুলে নিয়ে গেল পুলিস,' আশঙ্কার প্রহর নেলির রোজনামচায়