বিপর্যয় বাড়াচ্ছে বিপুল খরচ, বাড়তি টাকা চেয়ে রেল মন্ত্রকের দ্বারস্থ কেএমআরসিএল

কেএমআরসিএল রেল মন্ত্রকের কাছে চিঠি দিয়ে জানিয়েছে তাদেরকে আরও অর্থ দেওয়ার জন্য। প্রায় সম্পূর্ণ এই প্রকল্প শেষ করার জন্য দ্রুত অর্থ বরাদ্ধ করার আর্জি জানানো হয়েছে রেল মন্ত্রকের কাছে। প্রতিবার দুর্ঘটনা ঘটার জেরে থমকে যাচ্ছে প্রকল্পের কাজ। জতদিন কাজ আটকে থাকবে তত বাড়বে সময় এবং জিনিসপত্রের দাম। এইখরচ যোগ হতে থাকবে প্রকল্পের খরচের সঙ্গে। 

Reported By: শ্রেয়সী গঙ্গোপাধ্যায় | Updated By: Oct 28, 2022, 11:26 AM IST
বিপর্যয় বাড়াচ্ছে বিপুল খরচ, বাড়তি টাকা চেয়ে রেল মন্ত্রকের দ্বারস্থ কেএমআরসিএল

শ্রেয়সী গাঙ্গুলি: কয়েকদিন আগেই ফের ভয়াবহ ছবি দেখা যায় বহুবাজারে। বেশ কিছু বাড়িতে আবার দেখা দেয় ফাটল। রাতারাতি ঘরছাড়া হন বহু মানুষ। কিন্তু যে মেট্রো প্রকল্পের জন্য পর পর তিনবার এই বিপর্যয়ের ঘটনা ঘটল এবং একাধিক মানুষ ঘরছারা হলেন সেই ইস্ট ওয়েস্ট মেট্রোর ভবিষ্যৎ কী সেই নিয়ে উঠতে শুরু করেছে প্রশ্ন। তিনবার বিপর্যয়ে খরচ বেড়েছে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর।

হাওড়া ময়দান থেকে এসপ্ল্যানেড পর্যন্ত প্রকল্পের কাজ সম্পূর্ণ করা হয়েছে। অন্যদিকে শিয়ালদহ থেকে সেক্টর ফাইভ পর্যন্ত শুরু হয়ে গিয়ছে ট্রেন চলাচল। মাঝে এই ব্বহুবাজার অঞ্চলের কাজ কত তারাতারি কীভাবে শেষ করা সম্ভব সেই বিষয় আলোচনা চলছে।

এরমধ্যে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল বহুবাজার অঞ্চলে তিনবার এই বিপর্যয় ঘটার ফলে প্রকল্পের খরচ এক ধাক্কায় বেড়ে গিয়েছে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা। ২০২১ সালের ৩০ জুন এই প্রকল্পের কাজ সম্পূর্ণ হবে এমনটা ধরে নিয়েই কিন্তু প্রাথমিকভাবে এই প্রকল্পের খরচের এস্টিমেট করা হয়। এই হিসেবে প্রায় আট হাজার সাতশ বিয়াল্লিশ কোটি টাকা ধার্য করা হয়। বিপরজয়ের ফলে এই খরচ পৌঁছেছে প্রায় দশ হাজার পাঁচশ কোটি টাকায়। অন্যদিকে তৃতীয়বারের বিপর্যয়ের ফলে যে পরিমাণ খরচ বৃদ্ধি হয়েছে তা এখনও যুক্ত করা হয়নি বলেই জানা গিয়েছে।

দ্বিতীয় বিপর্যয়ের পরে মনে করা হয়েছিল ২০২৩ সালের নভেম্বর মাসের মধ্যে শেষ করা হবে এই প্রকল্প। কিন্তু তৃতীয় বিপর্যয়ের পরে সেই সময়সীমা কোথায় যাবে তা এখনও পরিষ্কার নয়। প্রকল্পের বিভিন্ন কাজ বিভিন্ন জায়গায় আটকে রয়েছে। ফলে সময় আরও বাড়বে বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে।

কেএমআরসিএল-এর ফাইনানশিয়াল ডিরেক্টর অংশুমান সরকার জানিয়েছেন, ‘আমাদের কমপ্লিশন ডেট ছিল ৩০ জুন ২০২১। এখন কমপ্লিশন ডেট ২০২৩ সালের নভেম্বর মাস। ফলত কন্ট্রাক্টরকে দেওয়া ৩৭০ কোটির অতিরক্ত খরচ হয়েছে এই বিপর্যয়ের জন্য। কস্ট এটীমেশনে রিভাইসড খরচ হচ্ছে ১০৪৪২ কোটি টাকা। যদিও এই এস্টিমেট ১৪ অক্টোবরের ঘটনার আগে পাঠানো হয়’।

প্রতিবার দুর্ঘটনা ঘটার জেরে থমকে যাচ্ছে প্রকল্পের কাজ। জতদিন কাজ আটকে থাকবে তত বাড়বে সময় এবং জিনিসপত্রের দাম। এইখরচ যোগ হতে থাকবে প্রকল্পের খরচের সঙ্গে। পাশাপাশি প্রতি বিপর্যয়ের পরেই অতিরিক্ত সতর্কতার কারনেও বাড়ছে খরচ। ফলত সামগ্রিকভাবে কাজ থমকে থাকা, জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি পাওয়া এবং যন্ত্রের ক্ষতির ফলে বাড়ছে এই দাম।

আরও পড়ুন: Abhishek Banerjee: ভাইফোঁটায় নেতা নয়, ঘরোয়া অভিষেককে চিনুন?

এই বিপর্যয়ের জেরে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়া প্রায় ৯৮ জন মানুষের ক্ষতিপুরণের টাকা, তাদের বাড়ি ভাড়া এবং তাদের অন্যান্য খরচ কিন্তু এই বর্ধিত দুই হাজার কোটি টাকার মধ্যে যোগ করা হয়নি। এইক্ষেত্রে নির্মাণকারি ঠিকাদার সংস্থার সঙ্গে আর্বিট্রেশন চলছে এই খরচ কারা দেবে সেই বিষয়ে। প্রথম দুই বিপর্যয়ের পরে ক্ষতিপূরণের খরচ হয়েছে প্রায় ১১০০ কোটি টাকা। এর সঙ্গে যুক্ত হবে তৃতীয়বারের বিপর্যয়ের খরচ।

কেএমআরসিএল রেল মন্ত্রকের কাছে চিঠি দিয়ে জানিয়েছে তাদেরকে আরও অর্থ দেওয়ার জন্য। প্রায় সম্পূর্ণ এই প্রকল্প শেষ করার জন্য দ্রুত অর্থ বরাদ্ধ করার আর্জি জানানো হয়েছে রেল মন্ত্রকের কাছে।

(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)                    

.