Mamata Banerjee: 'কোনও কোনও পুলিস চোখ বুজে বেআইনি কাজ দেখছে', বিস্ফোরণকাণ্ডে তীব্র তোপ মমতার
'সব বেআইনি কাজের পিছনেই আছে বেশি লোভ। ফায়ার ক্র্যাকার নয়, সবুজ বাজি তৈরি করুন। জীবনটা তো বাঁচবে।'
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্য়ুরো: তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠাদিবসের সমাবেশ থেকে দত্তপুকুর বিস্ফোরণকাণ্ডে পুলিসকে কাঠগড়ায় তুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়। যিনি নিজে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও বটে! যার হাতে রয়েছে রাজ্য স্বরাষ্ট্র দফতর। নিজের দফতরকেই কাঠগড়ায় তুললেন মমতা। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'কেউ কোনও বেআইনি কাজ করছে। পুলিস চোখ বুজে দেখছে।' যদিও তাঁর দাবি, 'সব পুলিস নয়।' কিন্তু ক্ষুব্ধ মমতা তোপ দাগেন, 'লোকাল থানাগুলিতে যাঁরা দায়িত্বে আছেন, তাঁরা কে কী করছেন, সেটা আমি আর বললাম না!'
হুঁশিয়ারির সুরে এরপরই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'আমি যেমন Anti-Ragging কমিটি করেছি। সেরকম অ্যান্টি-কোরাপসন সেলও তৈরি করেছি। মনে রাখবেন। নজর রাখছি, কে কী করছে না করছে। মানুষ গাড়ি নিয়ে রাস্তায় যাবে, আপনার আইন থাকলে নিশ্চয়ই আপনাকে টাকা দেবে, লাইসেন্স দেবে। কিন্ত আইন যদি না থাকে, তাহলে আপনি নিজে কেন টাকাটা নেবেন? সব বেআইনি কাজের পিছনেই আছে বেশি লোভ।' এদিন টিএমসিপি-র সমাবেশ থেকে মুখ্যমন্ত্রী ফের একবার সবুজ বাজির পক্ষে সওয়াল করেন। বলেন, 'আমরা সবুজ বাজির কারখানা করেছি। ফায়ার ক্র্যাকার নয়, সবুজ বাজি তৈরি করুন। কারণ বাজি শিল্পে লক্ষ লক্ষ পরিবার জড়়িয়ে। তাই তাদের জীবিকাটা বেঁচে থাকুক। এতে রোজগার হয়তো একটু কম হবে। কিন্তু জীবনটা তো বাঁচবে।'
প্রসঙ্গত, ব্যবধান মাস তিনেক। ফের বাজি কারখানায় বিস্ফোরণ! এগরার ভয়াবহ স্মৃতি ফিরল দত্তপুকুরে! রবিবার দুপুরে বেআইনি বাজি কারখানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণে তছনছ দত্তপুকুরের গ্রাম। বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটাই ছিল যে গোটা একটা বাড়ি ধূলিসাৎ হয়ে যায়। উড়ে যায় আশপাশের একাধিক বাড়ির ছাদ। কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় গোটা এলাকা। ঝলসে যায় ওই বাজি কারখানার শ্রমিকরা। ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে দেহ। এমনকি দেহাংশ ছিটকে কয়েকশো মিটার দূরে বাড়ির ছাদে-উঠোনে গিয়েও পড়েছে। আহতদের মধ্যে রয়েছে ৮ বছরের এক বালকও। ঘনবসতিপূর্ণ এলাকাতেই চলছিল এই বাজির কারবার। কিন্তু কীভাবে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় এই বাজির কারবার চলতে পারে, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠেছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, পুলিসকে বার বার জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। পুলিস সব দেখে, জেনেশুনেও চুপ থাকে। অভিযোগ, আগে নিম পুকুরিয়া এলাকায় একটি বাজি কারখানা চালাত কেরামত। এরপর চলতি বছরের মে মাসে যখন পূর্ব মেদিনীপুরের বিস্ফোরণ ঘটে, তখন রাজ্যজুড়ে বেআইনি বাজি কারখানা বন্ধ করতে তৎপর হয় পুলিস। সেইসময়ই গ্রেফতার করা হয়েছিল কেরামতকে। কারণ, ২০২১ সালের পর কেরামতে আর বাজির কারখানার লাইসেন্স ছিল না। কিন্তু জামিন পেয়ে ফিরে দত্তপুকুরের মোচাপোলে ফের বাজি কারখানা চালু করে অভিযুক্ত কেরামত। সেই কারখানাতেই এবার বিস্ফোরণ!
শুভেন্দু দাবি করেছেন,'আরডিএক্স ব্যবহার হয়েছে। মালিক ও মালিকপুত্র তৃণমূলের লোক। দোকান পিছু আইসি ও মন্ত্রী ৫০ হাজার করে তোলা তুলতেন। ৬টা বাজি কারখানা থেকে ৫০ হাজার করে তোলা তোলে। আইসি ও মন্ত্রী অর্ধেক-অর্ধেক করে নেয়।' ওদিকে, ইতিমধ্যেই বিস্ফোরণকাণ্ডে প্রথম গ্রেফতার করেছে পুলিস। বিস্ফোরণের ঘটনায় নীলগঞ্জ থেকে সফিকুল ইসলামকে গ্রেফতার করে পুলিস। ধৃত সফিকুল ইসলাম কেরামতের পার্টনার হিসেবেই পরিচিত। আরও ৪ জনের বিরুদ্ধে রুজু হয়েছে খুন, ষড়যন্ত্র সহ বিস্ফোরক আইনে মামলা।
আরও পড়ুন, Duttapukur Blast: 'রাজমিস্ত্রির কাজে যাচ্ছি' বলে বাজি কারখানায়, ছেলের মৃত্যুসংবাদে সত্যিটা জানল মা!