থুতু, পান-গুটখার পিক ফেলা রুখতে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গড়ল রাজ্য সরকার
বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট নির্দেশ দেন, বাংলাকে ক্লিন অ্যান্ড গ্রিন করে গড়ে তুলতে আগামিদিনে রাজ্যজুড়ে আরও বড় ক্যাম্পেন গড়ে তুলতে হবে।
নিজস্ব প্রতিবেদন : যত্রতত্র থুতু, পান, গুটখার পিক ফেলা রুখতে মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গড়ল রাজ্য সরকার। থুতু-পান-গুটখার পিক বন্ধের দাওয়াই বাতলাতে মঙ্গলবার নবান্নে জরুরি বৈঠকে বসেন মুখ্যমন্ত্রী। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন উচ্চ পদস্থ কর্তারা। বৈঠকেই কলকাতার দৃশ্য দূষণ রুখতে মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গড়ে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
যত্রতত্র থুতু, পিক ফেলা যেন 'জন্মগত অধিকার'! রাস্তা থেকে স্টেশন, মেট্রো থেকে সিনেমা হল সর্বত্রই লাল পিকের 'উজ্জ্বল' উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। দেখতে দেখতে গা সওয়া হয়ে গিয়েছিল মানুষেরও। পিকের হাত থেকে রেহাই মেলেনি দক্ষিণেশ্বর স্কাইওয়াকেরও। উদ্বোধনের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই নবনির্মিত দক্ষিণেশ্বর স্কাইওয়াক 'রঙিন' হয়ে ওঠে পিকে। সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই ছবি ভাইরাল হতে সময় নেয়নি।
এরপরই শহরজুড়ে ঘুরেছিলেন জি ২৪ ঘণ্টার প্রতিনিধিরা। ক্যামেরায় ধরা পড়ে, পান,আর গুটখার পিকে করুণ অবস্থা মা ফ্লাইওভারের। ধর্মতলা থেকে চোখের নিমেষে এয়ারপোর্ট। শহরের গর্ব মা ফ্লাই ওভার। বিমান বন্দর থেকে এই উড়ালপুল ধরেই শহরে ঢোকেন বিদেশি অতিথিরা। সেই ফ্লাইওভারের গায়ে গায়ে পানের পিকের রকমারি আলপনা। ধর্মতলা, সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ, এক্সাইড মোড় সর্বত্র থুতু আর পিকের ছড়াছড়ি।
আরও পড়ুন, মুখ্যমন্ত্রীর 'ধমক খেয়ে' মন্ত্রিত্ব থেকে ইস্তফা শোভন চট্টোপাধ্যায়ের
একই ছবি ধরা পড়ে হাওড়া ও শিয়ালদা স্টেশনেও। দূরদূরান্ত থেকে মানুষ আসছেন, যাচ্ছেন। স্টেশনের পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখার আর্জি সর্বত্র। বিজ্ঞাপনে শোলের হুমকি কিংবা ফাটাকেষ্টর শাসানিতেও কাজ হয়নি। বিজ্ঞাপন থেকে গেছে বিজ্ঞাপনেই। স্টেশন চত্বরে গুটখা পানের পিক ফেলার বদঅভ্যাস বদলায়নি একফোঁটাও।
পিক ফেলার ছবিটা আলাদা নয় শহরের লাইফ লাইন মেট্রোতেও। প্রতিদিন লক্ষ লক্ষাধিক মানুষ যাতায়াত করেন মেট্রোয়। সেই মেট্রোও কলুষিত পান, গুটখার পিকে। ভুক্তভোগী মেট্রোর কর্মচারীরাও। সিসিটিভি, রেল পুলিসের নজরদারি ডাহা ফেল। মেট্রোর এসক্যালেটর কিংবা সিঁড়ির পাশেই পান বা গুটখার পিক পড়ে থাকার ছবি ধরা পড়ে ক্যামেরায়।
আরও পড়ুন, "এক মহিলার পাল্লায় পড়ে সব শেষ, আমি আজও ওনাকে ভালোবাসি"
সংবাদমাধ্যমে 'অপরিচ্ছন্ন' শহরের সেই ছবি সামনে আসার পরই নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। যেখানে সেখানে থুতু, পিক ফেলা বন্ধ করতে তত্পর হয় প্রশাসন। পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম জানান, এই বিষয়ে নবান্নে আলাদা বৈঠক করবেন মুখ্যমন্ত্রী। এরপরই এদিন বিকালে নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে বৈঠক হয়। বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট নির্দেশ দেন, বাংলাকে ক্লিন অ্যান্ড গ্রিন করে গড়ে তুলতে আগামিদিনে রাজ্যজুড়ে আরও বড় ক্যাম্পেন গড়ে তুলতে হবে।
সরকারি উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন কলকাতার মানুষ। তবে, মানসিকতায় বদল না আসলে শুধু সরকারি উদ্যোগ কতটা হাল ফেরাতে পারবে? সেই প্রশ্নটা উঠছেই।