'অম্বিকেশ' শুনেই অগ্নিশর্মা অগ্নিকন্যা
দর্শকের অস্বস্তিকর প্রশ্নের মুখে মঞ্চ ছাড়লেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার কলকাতা টাউন হলে একটি বেসরকারি ইংরাজি খবরের চ্যানেলের `টক-শো`তে হাজির ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। দর্শকদের একজন তাঁকে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অম্বিকেশ মহাপাত্রের গ্রেফতারি সম্পর্কে প্রশ্ন করতেই ক্ষুব্ধ হন তিনি।
দর্শকের অস্বস্তিকর প্রশ্নের মুখে মঞ্চ ছাড়লেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার কলকাতা টাউন হলে একটি বেসরকারি ইংরাজি খবরের চ্যানেলের `টক-শো`তে হাজির ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। দর্শকদের একজন তাঁকে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অম্বিকেশ মহাপাত্রের গ্রেফতারি সম্পর্কে প্রশ্ন করতেই ক্ষুব্ধ হন তিনি। উপস্থিত ছাত্রছাত্রীদের মাওবাদী বলে `গালমন্দ` করতে করতে মঞ্চ ছেড়ে চলে যান। তাঁর সাফ কথা, সিপিআইএম ও মাওবাদীদের প্রশ্নের উত্তর দেবেন না তিনি।
সরকারের বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে শুক্রবার টাউন হলে মুখ্যমন্ত্রীর বিশেষ সাক্ষাতকারের আয়োজন করেছিল একটি বেসরকারি খবরের চ্যানেল। অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন কলকাতার বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তিরা। হাজির ছিলেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরাও। অনুষ্ঠান চলছিল ভালই, সঞ্চালিকার বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। গোল বাঁধে দর্শকদের প্রশ্নোত্তর পর্ব শুরু হতেই। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী মুখ্যমন্ত্রীকে অধ্যাপক অম্বিকেশ মহাপাত্রর গ্রেফতারি নিয়ে প্রশ্ন করতেই মেজাজ হারান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজের অবস্থানে অনড় থেকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "ওটা কার্টুন নয়। আমরা কার্টুন ভালোবাসি। কার্টুন জিনিসটা আলাদা। উনি (অম্বিকেশ) সিপিএমের লোক। তিনি ইমেলের অপব্যবহার করেছেন। সোসাইটিকে জিজ্ঞাসা না-করে তিনি ওই ইমেল থেকে ৬০ জনকে মেল পাঠিয়েছেন।" এমনকী যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়নের অধ্যাপক অম্বিকেশ মহাপাত্রকে বুদ্ধিজীবী বলে মানতে অস্বীকার করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "উনি সিপিএমের ক্যাডার। ভোটের পর সিপিএম হাজার হাজার সিডি পাঠিয়েছে। কোনও মহিলা সেই সিডি দেখলে মাথা হেঁট হয়ে যাবে।"
এরপর রাজ্যের মন্ত্রী মদন মিত্র ও প্রাক্তন বিধায়ক তথা ভাঙড়ের তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলামের আচরণ নিয়ে প্রশ্ন করেন প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ছাত্রী তানিয়া ভরদ্বাজ। প্রশ্ন শুনেই তেলে বেগুনে জ্বলে ওঠেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই ছাত্রী সিপিআইএম ক্যাডার বলে দাবি করে তিনি জানান, সিপিআইএম ও মাওবাদীদের প্রশ্নের জবাব দেবেন না তিনি। আয়োজকরা বেছে বেছে মাওবাদীদের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন বলেও অভিযোগ তাঁর। এর পর কলার মাইক্রোফোন খুলে মঞ্চ থেকে হাঁটা লাগান মুখ্যমন্ত্রী। শত চেষ্টাতেও তাঁকে আটকাতে পারেননি অনুষ্ঠানের উপস্থাপক।
ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসতেই গোটা দেশ জুড়ে আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, অস্বস্তিকর প্রশ্ন করলেই প্রশ্নকর্তাকে কি মাওবাদী বলে চিহ্নিত করতে পারেন একটি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী? মাওবাদী চিহ্নিতকরণের এই পদ্ধতি কতটা যুক্তিযুক্ত? প্রাসঙ্গিক প্রশ্নের মুখে জাতীয় টেলিভিশনের মঞ্চ ছেড়ে কি মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের মান বাড়ালেন?