Kolkata: মেয়ের মরদেহের সঙ্গেই 'সহ-বাস' মায়ের! ফিরল ভয়ংকর রবিনসন স্ট্রিটের স্মৃতি...
প্রতিবেশীরা জানাচ্ছেন, মা-মেয়ের কোনও রোজগার ছিল না। এক আত্মীয় তাঁদের রোজ খাবার পাঠাতেন। সেই খাবারের উপরই বেঁচে ছিলেন তাঁরা।
রণয় তেওয়ারি: মেয়ে আর বেঁচে নেই। মৃত্যু হয়েছে মেয়ের। কিন্তু সেকথা বোঝার মত মানসিক স্থিতি নেই মায়ের। তাই মেয়ের মরদেহের সঙ্গে বাস করছিলেন মা। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে খাস কলকাতায়। রবিনসন স্ট্রিটের ছায়া এবার দক্ষিণ কলকাতার বিজয়গড়ে।
জানা গিয়েছে, মৃতার নাম সঞ্চিতা বাসু। বয়স ৩৮ বছর। দক্ষিণ কলকাতার যাদবপুর থানা এলাকার বিজয়গড়ে মায়ের সঙ্গে থাকতেন সুচরিতা। মা ও মেয়ে, দুজনেই মানসিকভাবে অসুস্থ ছিলেন। মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন দুজনেই। এরপরই এদিন দুপুরে ঘর থেকে উদ্ধার হয় সুচরিতার মৃতদেহ। দেখা যায়, মেয়ের মরদেহের সঙ্গেই দিন কাটাচ্ছিলেন মা দিপালী বসু।
বিজয়গড়ের একটি তিনতলা আবাসনের দোতলায় থাকতেন মা ও মেয়ে। মা দিপালী বসুর বয়স হয়েছে ৬৮ বছর। মায়ের সঙ্গে থাকতেন মেয়ে সুচরিতা। ২০০৬ সালে ফ্ল্যাট কিনে থাকতে শুরু করে ওই পরিবার। ৩ বছর আগে বাবা মারা যায়। তারপর থেকে মা-মেয়ে একাই থাকতেন। প্রতিবেশীরা জানাচ্ছেন, মা-মেয়ের কোনও রোজগার ছিল না। এক আত্মীয় তাঁদের রোজ খাবার পাঠাতেন। ফুড ডেলিভারি বয় প্রত্যেকদিন সেই খাবার দিয়ে যেত। সেই খাবারের উপরই বেঁচে ছিলেন তাঁরা।
অন্যদিনের মত আজও মা-মেয়েকে খাবার দিতে আসে এক ফুড ডেলিভারি বয়। কিন্তু আজ ফুড ডেলিভারি বয় খাবার দিতে এসে দেখে খাবার সব বাইরে পড়ে রয়েছে। সে-ই প্রথম দুর্গন্ধ পায়। ফ্ল্যাটের ভিতর থেকে দুর্গন্ধ বেরিয়ে আসতে দেখে প্রতিবেশীদের খবর দেয় সে। তারপর প্রতিবেশীরা-ই খবর দেন যাদবপুর থানায়। খবর পেয়ে পুলিস আসে। কিন্তু বাইরে থেকে ডাকাডাকিতেও সাড়া না মেলায়, শেষে পুলিস দরজা ভাঙে। আর দরজা ভাঙতেই থ হয়ে যায় পুলিস।
পুলিস দেখে, মেয়ের পচন ধরে যাওয়া মরদেহের পাশে বসে মা। প্রাথমিকভাবে অনুমান, ২ থেকে ৩ দিন আগেই মৃত্যু হয়েছে মেয়ের। কিন্তু মানসিক ভারসাম্যহীন মা মেয়ের মৃত্যুর কথা কাউকেই বলেননি। পুলিস দেহ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য এসএসকেএম-এ পাঠিয়েছে। মৃত্যুর কারণ এখনও অজানা। রিপোর্ট এলে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে। ওদিকে মায়েরও চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন, ১২৫ বস্তা কয়েনে ৩ লাখ টাকা মিলল ভুটভুটিতে, আসল গল্প ফাঁস হতেই তাজ্জব পুলিস!