শরীরের করোনার জীবাণু নিয়ে London থেকে Kolkataয় হাজির 'নতুন বিপদ'
আক্রান্ত ২ জনই উপসর্গহীন। স্বাস্থ্যমন্ত্রকের প্রোটোকল অনুযায়ী তাঁদের নিউটাউনের কোয়ারেন্টিন সেন্টারে পাঠানো হয়েছে।
নিজস্ব প্রতিবেদন: ব্রিটেনের করোনার নয়া স্ট্রেন আতঙ্ক এবার খাস কলকাতায়। সম্প্রতি করোনার যে নয়া চরিত্র উদ্বেগ জাগিয়েছে ব্রিটেনে তা নিয়েই কি যাত্রীরা এবার ঢুকে পড়লেন খাস কলকাতায়। বিমানবন্দর সূত্রে খবর, গতকাল সকালে কলকাতায় এসে পৌঁছয় ওই বিমানটি। তাতে ২২২ জন যাত্রী ছিলেন। ২৫ জন যাত্রীকে পরীক্ষার পর ২ জন ব্যক্তির রিপোর্ট পজিটিভ আসে।
আক্রান্ত ২ জনই উপসর্গহীন। স্বাস্থ্যমন্ত্রকের প্রোটোকল অনুযায়ী তাঁদের নিউটাউনের কোয়ারেন্টিন সেন্টারে পাঠানো হয়েছে। তবে তাঁদের শরীরে করোনার সেই নতুন স্ট্রেন রয়েছে কিনা পরীক্ষা না করে জানানো হবে। ওই দুই জনের সংস্পর্শে আসা সমস্ত ব্যক্তিদের হোম কোয়ারেন্টিন যেতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি ওই বিমানের আধিকারিকদেরও কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: PM Modi-র 'পাকিস্তানি বোন'-এর মৃতদেহ উদ্ধার, ISI-এর দিকে সন্দেহের তির
রিপোর্ট অনুযায়ী, ২৫ অক্টোবর থেকে ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিট্রেন থেকে কলকাতায় আসা ৪টি বিমানে এখনও পর্যন্ত ৬ জনের করোনা পজিটিভ রিপোর্ট এসেছে। এর মধ্যে ২০ ডিসেম্বর কলকাতায় আসা ২২৬ জন যাত্রীর মধ্যে ২৬ জনের পরীক্ষা করা হয়। তারমধ্যে দুজনের পজিটিভ রিপোর্ট আসে। জানা গিয়েছে, এই দুইজনের শরীরে করোনা ভাইরাসের নতুন স্ট্রেন রয়েছে কিনা তা জানার জন্য নমুনা পুনেতে পাঠানো হয়েছে। উল্লেখ্য, ২৫ অক্টোবরে ১ জনের, ১৫ নভেম্বর ১ জনের, ৬ ডিসেম্বর ২৪৫ জন যাত্রীর মধ্যে ৫৪ জনের পরীক্ষা হলে ২ জনের করোনা পজিটিভ রিপোর্ট এসেছে।
অন্যদিকে গত শনিবার চেন্নাই বিমানবন্দরে লন্ডন ফেরত ১ যাত্রীর শরীরে মিলেছে করোনার সংক্রমণ। জানা গিয়েছে লন্ডন থেকে দিল্লি হয়ে চেন্নাইয়ে ফেরেন ওই ব্যক্তি। শনিবার অবতরণের পরই তাঁদের করোনা পরীক্ষা হয়। তখনই রিপোর্ট পজিটিভ আসে। তবে এই করোনা স্ট্রেনের ব্রিটেনে ছড়িয়ে পড়া নয়া কোভিড স্ট্রেনের মিল আছে কীনা, জানতে নমুনা পাঠানো হয়েছে পুনের পরীক্ষাগারে। আপাতত ওই ব্যক্তিকে কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হয়েছে।
শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, লন্ডন থেকে আসা প্রায় ২৬৬ জন ব্যক্তি ছড়িয়ে পড়েছেন গোটা দেশে। তাঁদের মধ্যেই ৪ জন করোনা পজেটিভ। বাকিদের পরীক্ষা হয়নি। প্রসঙ্গত, নতুন চরিত্রের করোনা ভাইরাস আতঙ্ক ছড়িয়েছে ব্রিটেনে। পরিস্থিতি ক্রমশ খারাপ হচ্ছে বলেই খবর। সামাল দিতে গতকালই ব্রিটেন থেকে আসা বিমান ওঠা নামা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ব্রিটেনে করোনাভাইরাসের লেটেস্ট স্ট্রেন এক ভয়াবহ মাত্রার সংক্রমণ শুরু করেছে সে দেশে। দেশের করোনা পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণের বাইরে বলে স্বীকারও করেছে ব্রিটেন স্বাস্থ্যমন্ত্রক। সে দেশের স্বাস্থ্যসচিব ম্যাট হ্যানককের মতে, দেশের করোনা পরিস্থিতি এক অবিশ্বাস্য কঠিন পর্যায়ে পৌঁছেছে! এয়ারওয়েজ বন্ধের প্রশ্ন উঠছে কারণ, ইতিমধ্যেই এই নতুন বিপদ থেকে বাঁচতে ব্রিটেনকে 'একঘরে' করেছে তার একাধিক প্রতিবেশী।
এ বার ভারত থেকেও একই দাবি উঠছে। ব্রিটেনের এই নয়া করোনাসংক্রমণের বাড়াবাড়ি নিয়ে ভারতীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক জরুরি বৈঠকও ডেকেছে। আজ, সোমবার দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী কেজরিবাল দাবি করছেন, অচিরেই ভারত-ব্রিটেন বিমান নিষিদ্ধ করা হোক।
রবিবারই ব্রিটেনের স্বাস্থ্যমন্ত্রক জানিয়েছিল, দক্ষিণ ইংল্যান্ডের বেশ কিছু এলাকায় করোনাভাইরাসের নতুন স্ট্রেন মিলেছে। নতুন স্ট্রেনটি আগের চেয়ে ৭০ শতাংশ বেশি গতিতে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে বলে জানান স্বাস্থ্যকর্তারা। পরিস্থিতির মোকাবিলায় রবিবার থেকেই দক্ষিণ-পূর্ব ইংল্যান্ড এবং লন্ডনে লকডাউন ঘোষণা করেন বরিস জনসন। বড়দিনের আগে দক্ষিণ-পূর্ব ইংল্যান্ড এবং লন্ডনে সতর্কতার মাত্রা বাড়িয়ে 'টিয়ার ফোর' করা হয়েছে। যার অর্থ, সংশ্লিষ্ট অঞ্চলে পুরোপুরি লকডাউন।