"বিনাশকালে বুদ্ধিনাশ শোভনবাবুর, পারিবারিক বন্ধু নয় বৈশাখী", অকপট রত্না

"ওই মহিলার নাম মুখে আনতেই ইচ্ছে করে না। মাত্র এক-দেড় বছরে কেউ পারিবারিক বন্ধু হয়ে ওঠে না।"

Updated By: Mar 14, 2018, 01:25 PM IST
"বিনাশকালে বুদ্ধিনাশ শোভনবাবুর, পারিবারিক বন্ধু নয় বৈশাখী", অকপট রত্না

নিজস্ব প্রতিবেদন : মেয়র 'মিথ্যেবাদী'! তিনি যা বলছেন, সবটাই মিথ্যে কথা বলছেন। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে দেখুন 'শোভনবাবু'। ২৪ ঘণ্টার মুখোমুখি হয়ে শোভন চট্টোপাধ্যায়কে এই ভাষাতেই সরাসরি আক্রমণ করলেন তাঁর 'প্রাক্তন' স্ত্রী রত্না চট্টোপাধ্যায়।

মঙ্গলবার ২৪ ঘণ্টার কাছে শোভন চট্টোপাধ্যায় তাঁর 'প্রাক্তন' স্ত্রী রত্না চট্টোপাধ্যায়কে 'বিশ্বাসঘাতক' বলে তোপ দেগেছিলেন। সাফ জানিয়েছিলেন, ২৪ বছরের দাম্পত্যে যে বিশ্বাসঘাতকতার সম্মুখীন তিনি হয়েছেন, তারপর আর কোনওভাবেই সে সম্পর্ক জোড়া লাগার কোনও প্রশ্নই ওঠে না।

এদিন রত্না চট্টোপাধ্যায় তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ খারিজ করে দিয়ে স্পষ্ট জানালেন, "আমি কোনও অন্যায় করিনি। আমার সোজাসাপটা জীবন। আয়নার সামনে বরং নিজে দাঁড়ান শোভনবাবু।"

আরও পড়ুন, তৃণমূলের সঙ্গে মেয়র শোভনের বিচ্ছেদ এখন সময়ের অপেক্ষা

২৪ ঘণ্টার মুখোমুখি হয়ে 'নিজে থেকেই' বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে দরাজহস্তে 'সার্টিফিকেট' দিয়েছিলেন মেয়র। মিল্লি আল-আমিন কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপিকা বৈশাখীকে 'পারিবারিক বন্ধু' বলে উল্লেখ করেছিলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। দাবি করেছিলেন, বৈশাখী না থাকলে তাঁকে 'অস্তিত্ব সংকট'-এ ভুগতে হত।

এদিন শোভনের এই মন্তব্য শোনামাত্র কার্যত তেলেবেগুনে জ্বলে ওঠেন রত্না চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, "ওই মহিলার নাম মুখে আনতেই ইচ্ছে করে না। মাত্র এক-দেড় বছরে কেউ পারিবারিক বন্ধু হয়ে ওঠে না। পারিবারিক বন্ধুর মানেই জানেন না শোভনবাবু। গত ২০-২২ বছর ধরে যাঁরা পারিবারিক বন্ধু, তাঁদের আমি খুব ভালোমতো চিনি।"

আরও পড়ুন, আমি আর তোদের নেতা নই : শোভন

মেয়রের চেয়ারে বসে এভাবে ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে সংবাদমাধ্যমে সরব হওয়ার জন্যও এদিন শোভনের 'নিন্দা' করেন তাঁর 'প্রাক্তন' স্ত্রী। চাঁছাছোলা ভাষায় রত্না চট্টোপাধ্যায় বলেন, "বিনাশকালে বিপরীত বুদ্ধি জেগেছে মেয়রের।" আরও বলেন, "একদিন যে চেয়ারে সুভাষচন্দ্র বসুর মতো মানুষ বসেছেন, সেই চেয়ারে বসেই আলফাল বকছেন শোভনবাবু। বোধবুদ্ধি সম্পূর্ণরূপে লোপ পেয়েছে। টিভিতে দেখতে লজ্জা লাগে।"

রত্না আরও জানান, তাঁর মায়ের মৃত্যুর সময় দলের তরফে অনেকে শোভন চট্টোপাধ্যায়কে একবার 'শাশুড়ি'কে গিয়ে দেখে আসার জন্য অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু কারও কোনও কথাই কানে তোলেননি শোভনবাবু। এমনকি মেয়রের দাদা তাঁকে বিদেশ থেকে হোয়াটসঅ্যাপ করে 'শাশুড়ি'কে দেখে আসার কথা বললে, শোভন চট্টোপাধ্যায় তাঁর নিজের দাদাকেও ব্লক করে দেন বলে দাবি রত্নাদেবীর। ২৪ ঘণ্টার কাছে তিনি অনুযোগ করেন, "মানবিকতা নষ্ট হয়ে গেছে মেয়রের।"

আরও পড়ুন, ‘ও বাড়ি শোভনেরই নয়’, চাঞ্চল্যকর দাবি রত্নার

ক্যামেরার সামনে এদিন রত্নাদেবী কবুল করেন, এসব ঘটনায় খুব স্বাভাবিকভাবেই অত্যন্ত মানসিক কষ্টে আছেন তিনি। পাশাপাশি জানান, একদিন 'শোভনবাবু'র উপর তাঁর বাবা, মা প্রচণ্ডভাবে নির্ভরশীল ছিলেন। গর্ব করতেন 'জামাই'কে নিয়ে। কিন্তু আজ পরিস্থিতি সম্পূর্ণ উল্টো। রত্নার মতে, বাপেরবাড়ির লোকজন এখন রাস্তায় মুখ দেখাতে পারছে না। বাড়ির ছেলের এহেন আচরণের জন্য তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকজনও সমানভাবে অনুতপ্ত ও লজ্জিত বলে দাবি করেন কাননের 'প্রাক্তন' স্ত্রী।

আরও পড়ুন, বৈশাখীর উপর আঘাত আসার আগে, সে আঘাত যেন আমার উপর আসে: শোভন

তবে ব্যক্তিগত জীবনে অনেক চড়াই-উতরাইয়ের মাঝেও দল তৃণমূল কংগ্রেস পুরোপুরি তাঁর পাশে রয়েছে বলে স্পষ্ট জানান রত্না চট্টোপাধ্যায়। পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে শোভন চট্টোপাধ্যায়ের কথোপকথন প্রসঙ্গে তাঁকে প্রশ্ন করা হলে রত্নাদেবীর স্পষ্ট জবাব, "আমি শোভনবাবুর কোনও কথা বিশ্বাস করি না। একদিন যে মানুষ একটাও মিথ্যে কথা বলত না, আজ সে যত কথা বলে, তার সবটাই মিথ্যা।" শুনে নিন, রত্না চট্টোপাধ্যায়ের এক্সক্লুসিভ সাক্ষাত্কার-

আরও পড়ুন, বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন? কী বললেন শোভন চট্টোপাধ্যায়

.