সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ, তবু ধর্মতলা থেকে বাস স্ট্যান্ড সরানোর উদ্যোগ নেই
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ। তবু ধর্মতলা থেকে বাস স্ট্যান্ড সরানোর ব্যাপারে এখনও কোনও উদ্যোগ নেই রাজ্যের। ময়দানের সবুজ ধ্বংস করে 1950 সালে যে বাসস্ট্যান্ড তৈরি হয়েছিল, তার বিকল্প জায়গা বাছাই বা সেখানে আনুষঙ্গিক পরিকাঠামো কবে তৈরি হবে। উঠছে প্রশ্ন।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ। তবু ধর্মতলা থেকে বাস স্ট্যান্ড সরানোর ব্যাপারে এখনও কোনও উদ্যোগ নেই রাজ্যের। ময়দানের সবুজ ধ্বংস করে 1950 সালে যে বাসস্ট্যান্ড তৈরি হয়েছিল, তার বিকল্প জায়গা বাছাই বা সেখানে আনুষঙ্গিক পরিকাঠামো কবে তৈরি হবে। উঠছে প্রশ্ন।
বিশ্বের সমস্ত এ ওয়ান শহরে রয়েছে একটি করে সবুজ ফুসফুস। নেই শুধু কলকাতায়। ময়দান এলাকায় যে ২৭ লক্ষ বর্গমিটার সবুজ রয়েছে তারও ২০ শতাংশ দখল হয়ে গেছে ধর্মতলা বাসস্ট্যান্ডের সৌজন্যে। একদিকে বাড়ছে দূষণ। অন্যদিকে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল। এই মর্মে দায়ের হওয়া জনস্বার্থ মামলা এবং জাতীয় পরিবেশ ইঞ্জিনিয়ারিং রিসার্চ ইনস্টিটিউট (NATIONAL ENVIRONMENT ENGEERING RESEARCH INSTITUTE)- এর সমীক্ষার রিপোর্ট দেখে কলকাতা হাইকোর্ট বাসস্ট্যান্ড তুলে দেওয়ার নির্দেশ দেয়।
২০০৭ সালের ২৮ শে সেপ্টেম্বর কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি ভাস্কর ভট্টাচার্য ও রুদ্রেন্দ্রনাথ ঘোষের ডিভিশন বেঞ্চের সেই রায়ে বলা ছিল নিউটাউন বা দ্বিতীয় হুগলি সেতুর নিচে অপেক্ষাকৃত ফাঁকা জায়গায় সরাতে হবে বাসস্ট্যান্ড। রাজ্য সরকারকে এই নির্দেশ পালনের জন্য ৬ মাস সময় দিয়েছিল হাইকোর্ট। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যায় রাজ্য। দীর্ঘ শুনানির পর ২০১১ সালের ১২ই সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্টও একই নির্দেশ দেয়। বিচারপতি আর ভি রবীন্দ্রন ও এ কে পট্টনায়েকের ডিভিশন বেঞ্চ অবশ্য নির্দেশ রূপায়নের সময়সীমা তুলে দেয়। তাই রাজ্য সরকার নির্দেশ রূপায়নের কোনও চেষ্টাই করছে না বলে অভিযোগ।
ধর্মতলা বাসস্ট্যান্ড থেকে ছাড়ে বা যাতায়াত করে এরকম বাসের সংখ্যা দৈনিক কমবেশি তিন হাজার। বাসস্ট্যান্ডকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা হোটেলের সংখ্যা ছোটবড় মিলিয়ে ১৩৩। চা সিগারেট পানের দোকান রয়েছে প্রায় দেড়শো। প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ধর্মতলা বাসস্ট্যান্ডকে ঘিরে পেট চলে হাজার পাঁচেক মানুষের। অবস্থানগতভাবেও ধর্মতলার খুব কাছেই হাওড়া ও শিয়ালদা স্টেশন, অফিসপাড়া ডালহৌসি, উত্তর কলকাতার প্রবেশ পথ সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ ও দক্ষিণ কলকাতার প্রবেশ পথ চৌরঙ্গী রোড। শহরে আদৌ ধর্মতলার কোনও বিকল্প জায়গা রয়েছে কিনা, সে প্রশ্ন তুলছে বাস মালিকদের সংগঠনগুলিও।
পূর্বরেলের উদ্যোগে সম্প্রতি শালিমার স্টেশনে যাত্রী ট্রেন পরিবহণ শুরু হয়েছে। চিতপুর স্টেশনকে দেওয়া হয়েছে কলকাতা টার্মিনাসের তকমা। কিন্তু সেখানকার যাত্রীদের অভিজ্ঞতা খুব একটা সুখকর নয়। ধর্মতলার বিকল্প হিসেবে তাই উত্তর বা দক্ষিণ শহরতলীর প্রত্যন্ত কোনও এলাকাকে পরিকাঠামোগতভাবে তৈরি করা যাবে কি? গেলেও কবে যাবে? প্রশ্ন উঠছে।