রাজনৈতিক প্রার্থী খুঁজছে তৃণমূল, খসছে একাধিক তারা!
আর কে কে?
কমলিকা সেনগুপ্ত
আর কে কে? হ্যাঁ, তৃণমূল অন্দরে এখন এই প্রশ্নটাই সব থেকে বেশি ঘুরপাক খাচ্ছে। বিষ্ণুপুরের সাংসদ সৌমিত্র খাঁ এবং বোলপুরের সাংসদ অনুপম হাজরার বহিষ্কারের পর এখন রাজ্যের শাসক দলে লাল কালি পড়ে যাওয়া সাংসদদের নিয়েই সব থেকে বেশি চর্চা চলছে। প্রশ্ন, এরপর কে কে? কাদের তাড়িয়ে দেওয়া হবে? লোকসভা ভোটেই বা কারা টিকিট পাচ্ছেন? শিকে ছিড়বে কোন নেতার? এমন আরও প্রশ্নই ধাঁধার মতো ঘুরছে।
কালীঘাটে কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে, এবার নেত্রী না কি সর্বাধিকার দিচ্ছেন পারফরম্যান্সকেই। ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করারা জন্য রাজনৈতিক প্রার্থীর খোঁজই করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সাংসদ হয়ে কোনও কাজই সেভাবে করেননি, দলকেও সময় দেননি, সংসদেও পারফরম্যান্স খারাপ এমন নেতারা এবার টিকিট পাচ্ছেন না। ঘাসফুলে থেকে যাদের পদ্মে ‘লোভ’ তাদেরকেও চিহ্নিত করে ছেঁটে ফেলা হবে। নজরে রয়েছে মুকুল যোগও।
এদিক থেকে দেখতে গেলে আগামী লোকসভা নির্বাচনে যে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, সৌগত রায়ের মতো সাংসদদের গুরুত্ব যে আরও বাড়ছে সে কথা অনায়াসেই বলা যায়। তাহলে কোপ পড়ছে কাদের উপর?
সৌমিত্র খাঁ (বিষ্ণুপুর) ও অনুপম হাজরা (বোলপুর), বুধবার দুই সাংসদকেই বহিষ্কার করেছে তৃণমূল। দল বিরোধী কাজের অভিযোগ এনেই ছেটে ফেলা হয়েছে তাঁদের। যদিও বহিষ্কারের আগেই বিজেপি-তে যোগ দিয়েছেন সৌমিত্র। ওয়াকিফহাল মহলের একাংশের মতে, লোকসভা ভোটের আগে বিষ্ণুপুরের সাংসদকে গেরুয়া শিবিরে নিয়ে এসে তৃণমূলকে বড় ধাক্কা দিলেন প্রাক্তন টিএমসি সম্পাদক (সর্বভারতীয়) মুকুল রায়। বিজেপি-তে পা বাড়িয়ে রেখেছেন অনুপুমও। সূত্রের খবর, দুই সাংসদের সঙ্গে সম্পর্ক বিচ্ছেদের পর ইতিমধ্যেই না কি আরও ৫ সাংসদের নামে রেড মার্কিং করে ফেলেছে তৃণমূল।
(তাপস পাল)
এই তালিকায় সবার শীর্ষে রয়েছে কৃষ্ণনগরের সাংসদ তাপস পালের নাম। এক সময়ের টলি দুনিয়া কাপানো এই তারকার পারফরম্যান্সে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন খোদ দলনেত্রী। এছাড়াও বেফাঁস মন্তব্য, রোজভ্যালি কাণ্ডে নাম জড়ানো সহ একাধিক ইস্যুতে তাপসের জন্য মুখ পুড়েছে তৃণমূলের। দলকেও সেভাবে সময় দিতে পারেননি তিনি। সব মিলিয়েই এবার তাপস পালের টিকিট সম্ভবত বাতিল করতে চলেছে দল।
(প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়)
দ্বিতীয়, প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়। হাওড়ার এই সাংসদকেও না কি এবার আর টিকিট দেবে না তৃণমূল। মাঝে এমনও শোনা গিয়েছিল, এই কেন্দ্রে না কি দাঁড়াতে চলেছেন বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারেরই একজন। যদিও এই বিষয়ে এখনও কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।
(সন্ধ্যা রায়)
তৃতীয়, সন্ধ্যা রায়। সংসদীয় কেরিয়ারে মেদিনীপুরের সাংসদের পারফরম্যান্স একেবারেই সন্তোষজনক নয়। লোকসভা বিতর্কে নিজেকে সামিল করা তো দূর, সন্ধ্যা দেবী সাংসদে মৌনতাকেই সর্বাধিকার দিয়েছেন।
(মুনমুন সেন)
চতুর্থ, মুনমুন সেন। ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বাঁকুড়া থেকে হেভিওয়েট সিপিআই(এম) সাসংদ বাসুদেব আচারিয়া-কে হারিয়ে লোকসভায় পা রেখেছিলেন এই তারকা। তাঁর পারফরম্যান্সও তেমন আশানুরূপ নয়। দলের একাংশ মনে করছে, এবার আর ‘দুষ্টুমি’ করে ছাড় পাবেন না মুনমুন। তাঁর টিকিটও সম্ভবত বাতিল।
(অপরূপা পোদ্দার)
তারকা না হলেও এই তালিকার শেষে রয়েছেন আরামবাগের সাংসদ অপরূপা পোদ্দার। নারদকাণ্ডে অভিযুক্ত তিনি। তার ওপর এমনও শোনা যাচ্ছে, এই সাংসদ নাকি তলেতলে যোগ রেখেছেন মুকুল রায়ের সঙ্গে। তিনি বিজেপি-তে যাচ্ছেন, এটা পাকাপাকিভাবে এখনই বলা যাচ্ছে না। তবে তাঁর যে এবার আর তৃণমূলের টিকিটে লড়া হচ্ছে না, তা অনেকটাই নিশ্চিত।