কমনওলেথ শর্ট স্টোরি পুরস্কারের দৌড়ে ৩ ভারতীয়

বিদেশি সাহিত্যে পুরস্কারের মনোনয়ন তালিকায় ৩ ভারতীয়। এমনটা সচরাচর ঘটে না। তবে এই বছর কমনওলেথ শর্ট স্টোরি প্রাইজের মনোনয়ন তালিকায় রয়েছেন ৩ ভারতীয়। সঙ্গে বিশ্বের অন্যান্য ১১টি দেশের ১৯ জন সাহিত্যিক।

Updated By: Apr 13, 2015, 03:09 PM IST
কমনওলেথ শর্ট স্টোরি পুরস্কারের দৌড়ে ৩ ভারতীয়

ওয়েব ডেস্ক: বিদেশি সাহিত্যে পুরস্কারের মনোনয়ন তালিকায় ৩ ভারতীয়। এমনটা সচরাচর ঘটে না। তবে এই বছর কমনওলেথ শর্ট স্টোরি প্রাইজের মনোনয়ন তালিকায় রয়েছেন ৩ ভারতীয়। সঙ্গে বিশ্বের অন্যান্য ১১টি দেশের ১৯ জন সাহিত্যিক।

২০১৫ সালের কমনওলেথ শর্ট স্টোরি পুরস্কারের জন্য জমা পড়েছিল ৪০০০টি মনোনয়ন। জুরিতে ছিলেন শ্রীলঙ্কার ব্রিটিশ বংশোদ্ভূত সাহিত্যিক রোমেশ গানেসেকেরা, সুদানের সাহিত্যিক লেইলা আবৌলেলা, ব্রিটিশ-গিয়েনেজ কবি, ঔপন্যাসিক ও নাট্যকার ফ্রেড ডি' আগুয়ার, কানাডিয়ান ঔপন্যাসিক ও ছোট গল্পো লেখক মারিনা এনডিকট, নিউ জিল্যান্ডের মাওরি সাহিত্যিক উইটি ইহিমায়েরা ও পাকিস্তানি সাহিত্যিক বিনা শাহ।

১৯৯৬ সাল থেকে এই পুরস্কার স্বরূপ প্রতিবছর ৫ জন আঞ্চলিক বিজয়ীর হাতে তুলে দেওয়া হয় ২,৫০০ পাউন্ড। যাদের মধ্য থেকে চূড়ান্ত বিজয়ী পান ৫,০০০ পাউন্ড। ২০১২ সালে ছোট গল্পো রেডিও স্টোরির জন্য এই পুরস্কার পেয়েছিলেন অনুষ্কা জসরাজ। ১৯৩৯ সালের বম্বের প্রেক্ষাপটে লেখা রেডিও স্টোরি।

এই বছর মনোনীত ভারতীয়রা-

দ্য ডেথ অফ আ ভ্যালি গল্পের জন্য মীনাক্ষি গৌতম চতুর্বেদী

মুম্বইয়ের কপিরাইটার মীনাক্ষি শখের সাহিত্যিক। কাশ্মীরের সন্ত্রাস সমস্যা নিয়ে তার রূপকধর্মী ছোট গল্পো দ্য ডেথ অফ আ ভ্যালি। মীনাক্ষি জানালেন, "ধর্ম মানুষের সৃষ্টি, এর উদ্দেশ্য রয়েছে ও ব্যাখ্যা দাবি করে। ভারতে বহু ধর্মের অস্তিত্ব রয়েছে যা দশকের পর দশক ধরে সমাজে দ্বন্দ্ব তৈরি করেছে। কিন্তু যুদ্ধ বা সন্ত্রাস মানুষের মূল্যবোধের ক্ষতি করতে পারেন না। আমার গল্পে এটাই তুলে ধরতে চেয়েছি।" টেলস ফ্রম বুশল্যান্ড ও টেলস অফ ফুলপুর নামের দুটি শিশুসাহিত্যও রচনা করেছেন মীনাক্ষি। নাগপুরে ইন্টটিটিউট অফ সায়েন্স থেকে জুলজিতে স্নাতক ইউজিসির জুনিয়র রিসার্চ ফেলোশিপ নিয়ে গবেষণা করেছিলে ২ বছর। কিছুদিন পরই উত্সাহ হারিয়ে ফেলে মুম্বইতে এসে লিনটাসে কপিরাইটারের কাজ নেন মীনাক্ষি। ৩০ মিনিটের টেলিভিশন কমার্শিয়াল থেকে শুরু করে ৮০,০০০ শব্দের উপন্যাসও লিখেছেন মীনাক্ষি।

দিস ইজ হাউ দ্য ইকোসিস্টেম ওয়ার্কস গল্পের জন্য শাহনাজ হাবিব

কোচি শহরে বেড়ে ওঠা দিল্লি ইউনিভার্সিটি থেকে ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতক শাহনাজ লেখা শুরু করেন মাত্র ৭ বছর বয়সে। গল্প লেখার প্রতিযোগিতা জেতা একটি মেয়েকে নিয়ে তার গল্পো দিস ইজ হাউ দ্য ইকোসিস্টেম ওয়ার্কস মনোনীত হয়েছে কমনওয়েলথ শর্ট স্টোরি পুরস্কারের জন্য। কেরলের প্রেক্ষাপটে খুচরো খুচরো ছোট গল্পের সংকলনের অংশ দিস ইজ হাউ দ্য ইকোসিস্টেম ওয়ার্কস। প্রতিটা গল্পেরই ঘটনাবলী ভিন্ন, চরিত্রও আলাদা, কিন্তু প্রতিটা গল্পোই রচিত হয়েছে কেরলের প্রেক্ষাপটে। শাহনাজ জানালেন, "কেরলে পর্যটন অন্যতম বড় ভূমিকা নেওয়ার পর থেকে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় অনেক পরিবর্তন এসেছে। সেই গল্পোই তুলে ধরেছি লেখায়।" দ্য নিউ ইয়র্কারে বুক রিভিউ কলম লেখার পাশাপাশি বিভিন্ন মালয়লম উপন্যাস ইংরেজিতে অনুবাদ করেন শাহনাজ। এই মুহূর্তে নিউ ইয়র্ক ফাউন্ডেশন অফ আর্টসে গবেষণা করছেন শাহনাজ। ফ্যাশন ম্যাগাজিন লন্ড্র্রির সম্পাদক তিনি। ইউনাইটেড নেশনস অ্যান্ড গোথাম রাইটার্সের ওয়ার্কশপে ফ্রিলান্সও করেন তিনি।

দ্য আমব্রেলা ম্যান গল্পের জন্য সিদ্ধার্থ গিগু

কাশ্মীরের শ্রীনগরে জন্ম সিদ্ধার্থের। ১৯৯০ সালে কাশ্মীর উপত্যকায় সন্ত্রাস হামলার সময় তার বয়স ছিল ১৫ বছর। সেই সময় পরিবারের সঙ্গে জম্মুর ছোট শহর উধমপুরে চলে যেতে হয় তাকে। মানসিক প্রতিবন্ধী এক লোকের ভালবাসার ছাতা নিয়ে ছোট গল্পো দ্য আমব্রেলা ম্যান মনোনীত হয়েছে কমনওয়েলথ শর্ট স্টোরি পুরস্কারের জন্য। গিগু জানান, "আমার গল্পের চরিত্র শুধুই বৃষ্টির প্রতীক্ষায় থাকেন।" ছাত্রজীবনে ১৯৯১ থেকে ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত বহু কবিতা লিখেছিলেন গিগু। রাইটার্স ওয়ার্কশপ, ক্যালকাটা সেইসব কবিতার সংকলন ফল অ্যান্ড আদার পোয়েমস ও রিফ্লেকশ প্রকাশ করে ১৯৯৪-১৯৯৫ সালে। জহরলাল নেহরু ইউনিভার্সিটি থেকে ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতকোত্তর করার সময় লেখা বন্ধ করে দেন গিগু। ২০০৯ সালে লেখায় ফেরেন তিনি। সেই বছরই লেখেন প্রথম উপন্যাস দ্য গার্ডেন অফ সলিটিউড। মার্চ মাসে মুক্তি পেয়েছে তার ছোট গল্পের সংকলন আ ফিস্টফুল অফ আর্থ অ্যান্ড আদার স্টোরিজ।

 

.