কেউ কেউ ঘুমের মধ্যে নাক ডাকে কেন?
কেউ কেউ ঘুমের মধ্যে নাক ডাকে কেন? প্রথমেই যে কারণটা আমরা জানি, শোবার বেকায়দার জন্য মানুষ নাক ডাকে। কথা ঠিক, তবে এই শোবার বেকায়দাই একমাত্র কারণ নয়। এমনকি প্রধান কারণও নয়। বরং অনেকগুলো কারণের মধ্যে একটি কারণ।
ওয়েব ডেস্ক: কেউ কেউ ঘুমের মধ্যে নাক ডাকে কেন? প্রথমেই যে কারণটা আমরা জানি, শোবার বেকায়দার জন্য মানুষ নাক ডাকে। কথা ঠিক, তবে এই শোবার বেকায়দাই একমাত্র কারণ নয়। এমনকি প্রধান কারণও নয়। বরং অনেকগুলো কারণের মধ্যে একটি কারণ।
শোবার ভুল পজিশনের কারণে যে নাক ডাকে, সে প্রতিদিন নাক ডাকে না। মানুষ প্রতিদিন একই ভাবে ঘুমায় না, আবার একই ভাবে সারাক্ষণ ঘুমায় না। তাই শোবার বেকায়দায় কিছু সময়ের জন্য নাসিকাগর্জন করতে পারে, কখনোই প্রতিদিন সারারাত নাক ডাকবে না।
নাক ডাকার প্রধান কারণ হলো, গলবিলের সংকোচন (Pharyngeal Occlusion) আমাদের জাগ্রত অবস্থায় গলবিলের পেশী গুলো টানটান হয়ে থাকে। ঘুমের মধ্যে পেশী গুলো শিথিল হয়। একারণে গলবিলের যে রাস্তাটা দিয়ে বাতাস যায় সেই রাস্তাটা সংকুচিত হয়। ফলে শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে কষ্ট হয়, এমনকি যার এসমস্যা আছে তাদের ঘুম পর্যন্ত ভেঙে যেতে পারে। এই অবস্থাকে বলে Sleep Apnoea (সহজ বাংলায় ঘুমের মধ্যে দমবন্ধ হয়ে আসা)
সবার কেন হয় নাঃ সহজ উত্তর, সবার পেশী অত শিথিল হয় না। তবে যাদের হয় তাদের সংখ্যাও কম না : ৪০% পুরুষ আর ২০% মহিলা নাক ডাকেন
tongue emoticon
এর পিছনে কি কি প্রভাব আছে :
১) পুরুষের নাক ডাকে বেশি। আপনি পুরুষ হলে আপনার নাক ডাকার সম্ভাবনা প্রায় দ্বিগুণ।
২) মোটা হলে, তখন গলবিলের আশেপাশের ফ্যাট আপনার গলবিলের ব্যাসার্ধ এমনিতেই কমিয়ে দিবে।
৩) পারিবারিক। পারিবারিক বা জিনগত কারণে আপনার গলবিল ভিন্ন রকম হতে পারে।
৪) অ্যলকোহল কিংবা ঘুমের ঔষধ খেলে এরকম হতে পারে। কারণ আপনার পেশীগুলোকে তারা বেশি শিথিল করে দিবে।
৫) স্ট্রোক হলে।
৬) এক্রোমেগালি (গ্রোথ হরমোন বেশি হলে)
৭) হাইপোথাইরয়েডিজম (থাইরয়েড গ্ল্যান্ড কম কাজ করলে)
৮) এছাড়াও type-ii ডায়াবেটিস, ইন্সুলিন রেজিস্ট্যান্স এর সাথেও সম্পর্ক আছে নাক ডাকার।
গলবিলের কোন গাঠনিক ত্রুটির কারণেও নাক ডাকতে পারে। নাকের কোন পলিপ, নাকের দেয়ালের একপাশে চেপে যাওয়ার কারণেও নাক ডাকতে পারে। তবে এইসব কারণে নাক ডাকার হার খুব কম।
কি কি সমস্যা হতে পারে?
১) ঘুমে ব্যাঘাত হতে পারে, ব্যাপারটা এতোটাই তীব্রপর্যায়ে চলে যায় যে রোগীর স্বাভাবিক জীবনযাত্রা চরমভাবে ব্যাহত হয়।
২) সারাদিন ঝিমুনি ভাব হতে পারে।এর কারণে ড্রাইভিং করা বন্ধ রাখতে হয়, পড়াশুনার ব্যাঘাত ঘটে।
৩) পারিবারিক অশান্তি হয়।
৪) ফুসফুসে অসুখ যেমন COPD থাকলে রেস্পিরেটরী ফেইলর হতে পারে।
কি করতে হবে?
এর খুব ভালো চিকিৎসা আছে। ঘুমের আগে একটা মাস্ক যেটা সার্বক্ষণিক পজিটিভ প্রেসার দিয়ে নালীকে খোলা রাখে। ম্যান্ডিবল এডভান্সমেন্ট ডিভাইসও উপকারি। সার্জারিতে তেমন লাভ হয় না।