পেসমেকার
শিপ্রা ভৌমিক
আমাদের ফ্ল্যাটের পাশের ফ্ল্যাটটাই চিত্রা দিদুনদের। দিদুন এখনও পঁয়ষট্টি বছরের যুবতী। আমি কলেজে পড়ি। বি.এ ফার্স্ট ইয়ার।
চিত্রা দিদুন আমার খুব ভালো বন্ধু। সেদিন আমাকে বললেন,'জানিস খুকু,আমার নিজেকে বুড়ি বুড়ি ভাবতে একটুও ভালো লাগে না। পরিবারে আমি ঠাকুমা হলেও, মনে মনে এখনও বেথুনের ছাত্রীটিই আছি। এই দ্যাখ না, এই পালাজোটা এবার সেলে কিনেছি। স্লিভলেস কালো কুর্তির সঙ্গে পড়ব।'
'তোমাকে যা লাগবে না,ফাটাফাটি! একটা ডুয়ালফি তুলব কিন্তু! আচ্ছা দিদুন, তোমার বয়ফ্রেন্ডের খবর কী? 'দিদুন লাজুক হেসে বললেন, কাল আমাকে নিয়ে খুব সুন্দর একটা প্রেমের কবিতা পোস্ট করেছে। দাঁড়া, তোকে দেখাচ্ছি। এই দ্যাখ....।'
'বা! বেশ রোমান্টিক তো! দিদুন বললেন,'সবই ঠিক আছে,কিন্তু ভদ্রলোক কদিন ধরেই খুব দেখা করতে চাইছেন।কী করি বল তো? দেখা করাটা কি ঠিক হবে? কবিতার সঙ্গে যদি
কবি-মানুষটা না মেলে!'
আমি বললাম,'তোমারও কি ওকে দেখতে ইচ্ছে করে? দিদুন বললেন,'প্রোফাইলে তো ওর কোনো ছবি নেই,তাই একবার দেখা হলে মন্দ হত না! '
'তার মানে, মিঁয়া বিবি রাজি! আমি তোমাদের শুভদৃষ্টির ব্যবস্থা করে দিচ্ছি! কবে, কোথায় ডেটিং করবে বলো? '
'সামনের রোববার হবে না। পেসমেকার বসানোর আগের চেক আপ আছে। গুডফ্রাইডের দিন হতে পারে।'
'দিদুন,আমার মনে হয় তোমার আর পেসমেকারের প্রয়োজন হবে না। প্রেমই তো সবচেয়ে ভালো 'পেসমেকার'।