অঙ্কের কোচিং
শ্রেয়সী চৌধুরী
গত সপ্তাতেই নতুন অঙ্কের কোচিং সেন্টারে ভর্তি হয়েছে অর্চি। বাড়ি থেকে খুব বেশী দূরে অবশ্য নয় কোচিং সেন্টারটি। পায়ে হেটে এই মিনিট কুঁড়ির রাস্তা। তবে আজ রোববার হওয়াতে একমাত্র ছেলেকে কোচিং থেকে আনার দায়িত্ব বর্তেছে সৃজনের উপরেই। আগে কথাবার্তা বলা থেকে ভর্তি করানো, এমনকি ভোরে কোচিং এ দিয়ে আসা সবই অবশ্য করেছে স্ত্রী ঈষিতা। সৃজন জেনেছে ওই কোচিং এ নাকি বিশেষ যত্ন নিয়ে অঙ্ক শেখানো হয়। একটা ব্যাচে একসাথে কেবল দুইজনকেই পড়ানো হয়। ঈষিতা জানিয়েছে অর্চি ছাড়া ওই ব্যাচে পড়বে ইলিনা নামের একটি মেয়ে। (সিদ্ধান্ত)
ঘড়িতে এখন ঠিক ন টা বাজতে পাঁচ। কোচিং সেন্টার থেকে সামান্য দূরে দাড়াল সৃজন। দেখল, ওর প্রায় সমবয়সী এক ভদ্রমহিলাও একটু সামনেই দাঁড়িয়ে আছেন। বুঝতে অসুবিধা হল না যে, উনি অর্চির ওই ব্যাচের অপর সহপাঠিনীর অভিভাবিকা। মেয়েকে নিতে এসেছেন। সৃজনের ভীষণ যেন চেনাচেনা লাগল ওনাকে! ওর সংশয় কিন্তু সত্যে পরিণত হল ভদ্রমহিলার মুখটি ভালোভাবে নজর করতেই। চোখে চোখ পড়ার আগেই ওখান থেকে একটু এগিয়ে নিজেকে আড়াল করল সৃজন। (ভালোবাসা)
বুকটা তখনও ওর ঢিপঢিপ করছে। মনে পড়ে গেল, ক্লাস নাইনের অঙ্ক কোচিং এ অমৃতার সাথে আলাপের প্রথম দিনটা। আলাপ থেকে ভালোলাগা, তার থেকে প্রেম, প্রেম থেকে বিয়ের সিদ্ধান্ত। না, বিয়েটা তো অমৃতার বাবা হতে দিলেন না। যুক্তি ছিল, সৃজনদের অস্বচ্ছল অর্থনৈতিক অবস্থা। আজ প্রায় সতেরো বছর পর আবার অমৃতার দেখা পেল সুজন। কি অদ্ভুত! আজও মিলনস্থল ক্লাস নাইনের অঙ্ক কোচিং সেন্টার।