প্রয়োজনীয় ১০ হাজার কোটি টাকা দিতে অপারগ সাহারা গোষ্ঠী, জামিন হল না সুব্রত রায়ের, অনির্দিষ্টকালের জন্য তিহার জেলের বাসিন্দা সাহারাশ্রী

জামিন হল না সাহারা গোষ্ঠীর প্রধান সুব্রত রায়ের। শীর্ষ আদালত আগে জানিয়েছিল, দশ হাজার কোটি টাকা দিলেই জামিন পাবেন সুব্রত রায়। সাহারা গ্রুপের তরফ থেকে জানিয়ে দেওয়া হল জামিনের জন্য প্রয়োজনীয় ১০ হাজার কোটি টাকা দিতে অপারগ তারা। ফলে আপাতত তিহার জেলের কুঠুরি থেকে মুক্তি পাচ্ছেন না সাহারা সুপ্রিমো। সাহারা গোষ্ঠী উল্টে নতুন প্রস্তাবে শীর্ষ আদালতকে জানিয়েছে এই মুহূর্তে আড়াই হাজার কোটি টাকা দিতে পারবে তারা। সুব্রত রায়ের জামিনের ২১ দিনের মধ্যে সেবিকে আরও আড়াই হাজার কোটি টাকা দিতে পারবে তারা।

Updated By: Apr 3, 2014, 02:02 PM IST

জামিন হল না সাহারা গোষ্ঠীর প্রধান সুব্রত রায়ের। শীর্ষ আদালত আগে জানিয়েছিল, দশ হাজার কোটি টাকা দিলেই জামিন পাবেন সুব্রত রায়। সাহারা গ্রুপের তরফ থেকে জানিয়ে দেওয়া হল জামিনের জন্য প্রয়োজনীয় ১০ হাজার কোটি টাকা দিতে অপারগ তারা। ফলে আপাতত তিহার জেলের কুঠুরি থেকে মুক্তি পাচ্ছেন না সাহারা সুপ্রিমো। সাহারা গোষ্ঠী উল্টে নতুন প্রস্তাবে শীর্ষ আদালতকে জানিয়েছে এই মুহূর্তে আড়াই হাজার কোটি টাকা দিতে পারবে তারা। সুব্রত রায়ের জামিনের ২১ দিনের মধ্যে সেবিকে আরও আড়াই হাজার কোটি টাকা দিতে পারবে তারা।

বিনিয়োগকারীদের ২০,০০০ কোটি টাকা ফেরত না দেওয়ার মামলায় সুপ্রিমকোর্টে নির্ধারিত দিনে হাজিরা না দেওয়ার কারণে তাঁর বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিল শীর্ষ আদালত। সেই মামলার জেরেই আপাতত তিহারের বাসিন্দা সাহারাশ্রী। টাকা ফেরতের জন্য দুই মাস সময় চেয়ে ছিলেন তিনি। টাকা ফেরত দিতে সম্পত্তি বিক্রি করতেও রাজি ছিলেন। এতে অবশ্য চিঁড়ে ভেজেনি। সন্তুষ্ট হইনি সুপ্রিম কোর্ট।

তিন দশকে স্বপ্নের উত্থান। কোন যাদুকাঠির স্পর্শে বিত্ত আর বৈভবের শীর্ষে উঠেছিলেন সাহারাশ্রী সুব্রত রায়? সাফল্যের কাহিনিটা এখনও রহস্যে ঢাকা। ছোট আমানতকারীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা অর্থেই কি তবে সাহারার এই বিরাট সাম্রাজ্য বিস্তার ? উত্তর খুঁজছে গোটা দেশ।

ক্ষমতা, গ্ল্যামার আর তারকাদের দুনিয়া থেকে হঠাত্‍ পতন। আপাতত পুলিস হেফাজতে সাহারাশ্রী সুব্রত রায়। ক্রীড়া জগত্‍ আর বলিউডের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগে জড়িয়ে থাকা সাহারা কর্তার উত্থান যেন সিনেমার নায়কের মতো।

দুহাজার টাকা। পুরনো স্কুটার আর একটা অফিসঘর। উনিশশো আটাত্তরে মূলধন বলতে ছিল এটুকুই। সেই সম্বল নিয়েই প্যারা ব্যাঙ্কিংয়ের ব্যবসায় নেমেছিলেন গোরক্ষপুরের প্রবাসী বাঙালি সুব্রত রায়। শুরু হয় প্রত্যন্ত এলাকার ছোট ছোট আমানতকারীদের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ। এমনই সাড়া সেই আকর্ষণীয় স্কিমে,যে এরপর আর ফিরে তাকাতে হয়নি। সেই ক্ষুদ্র সঞ্চয়ই হল তিল থেকে তাল। তার জোরেই তিনদশক পর দুহাজার আটে সাহারা ইন্ডিয়া ফিনান্সিয়াল হয়ে যায় দেশের সবচেয়ে বড় নন ব্যাঙ্কিং ফিনান্স কোম্পানি।

কিন্তু এধরনের সঞ্চয় প্রকল্পে আইনি ফাঁকফোঁকর ছিলই। প্রথম ধাক্কাটা এল রিজার্ভ ব্যাঙ্কের তরফে। সাধারণ মানুষের কাছ থেকে আমানত তুলতে নিষেধ করা হয় সাহারাকে। এরপরই বদলে গেল কৌশল। আবাসন শিল্পে নতুন দুটি সংস্থা খুলে কনভার্টিবল ডিবেঞ্চারের মাধ্যমে টাকা তোলা শুরু হয়। মিডিয়া, বিনোদন, স্বাস্থ্য, বিমা সহ চার হাজার সাতশো নিরানব্বইটি শাখায় বিনিয়োগ করে সাহারার ব্যবসা ততদিনে ফুলে ফেঁপে উঠেছে। লাফিয়ে বেড়েছে আমানত সংগ্রহও। দুহাজার এগারোর হিসেব অনুযায়ী সাহারার সংগ্রহ করা আমানত মোট দুলক্ষ পঁচিশ হাজার কোটি টাকা।

আর সাহারা গোষ্ঠীর মোট সম্পদের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে আটষট্টি হাজার একশো চুয়াত্তর কোটি টাকা। সাহারাই ততদিনে ভারতীয় ক্রিকেট ও ফুটবল দলের স্পনসর। সুব্রত রায়কে মানুষ চিনছে আইপিএলে পুনে ওয়ারিওর্সের মালিক হিসেবে। হলিউডের এমজিএম স্টুডিও কেনার চেষ্টা বা লন্ডনের অভিজাত হোটেল কিনে দুনিয়াকে তাক লাগিয়ে দিচ্ছেন সাহারাশ্রী। কিন্ত কীভাবে এই বিপুল অর্থ আসছে সেই রহস্য কিছুতেই কাটেনি। এখন দেখার, সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপে সুব্রত রায়ের গ্রেফতারি শেষ পর্যন্ত সেই রহস্য উন্মোচন করতে পারে কিনা।

.