বিতর্কের মধ্যেই আজ লোকসভায় পেশ করা হবে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল, ক্ষোভ উত্তরপূর্বের রাজ্যগুলিতে
বিলটির প্রতিবাদে মঙ্গলবার ১১ ঘণ্টার বনধ ডেকেছে নর্থ ইস্ট স্টুডেন্টস ইউনিয়ন। বিলের বিরোধিতার করে রাস্তায় নামার হুমকি দিয়েছে অসমের বেশ কয়েকটি ছাত্র সংগঠন
নিজস্ব প্রতিবেদন: উত্তরপূর্বের রাজ্যগুলির প্রতিবাদ ও বিরোধীদের বিরোধিতার মধ্যেই আজ লোকসভায় পেশ করা হচ্ছে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল। বিতর্কিত এই বিলটি পাশ করানো এখন সরকারের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ।
গত বুধবার বিলটি সংসদে পেশ করার ব্যাপারে সবুজ সংকেত দেয় কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। তার পর থেকেই এর বিরুদ্ধে সোচ্চার হচ্ছে বিরোধীরা। পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে সোমবার থেকে আগামী ৩ দিন দলের সংসদদের লোকসভায় হাজির থাকার জন্য হুইপ জারি করেছে বিজেপি।
লোকসভায় সংখ্যা গরিষ্ঠতা থাকায় সেখানে বিলটি পাশ করানো নিয়ে কোনও সমস্যা হওয়ার কথা নয় সরকারের। তবে রাজ্যসভাতেই হবে মূল লড়াই। বিজেপির দাবি বিলটি পাশ হওয়ার জন্য ১২০ সাংসদের সমর্থন প্রয়োজন। রাজনৈতিক মহলের খবর, বিজেপির সঙ্গে সংঘাত চললেও বিলের পক্ষেই ভোট দেবে শিবসেনা। পাশাপাশি বিজেডি, টিআরএস, এআইএডিএমকের সমর্থন আদায় করার চেষ্টা করছে বিজেপি।
আরও পড়ুন-রাতে মহিলাদের সুরক্ষায় সোশ্যাল মিডিয়ায় ফোন নম্বর দেওয়ার হিড়িক, নয়া ফাঁদ বলছে লালবাজার
ছয় দশক পুরনো এই বিলে সংশোধনী আনা হলে, পাকিস্তান, আফগানিস্থান, বাংলাদেশের হিন্দু, বৌদ্ধ, শিখ, পার্সি, খ্রিষ্টানরা এদেশে নাগগরিকত্ব পেয়ে যাবেন। তবে এর জন্য এদেশে অন্তত ৫ বছর বসবাস করতে হবে তাদের। আগের নিয়ম অনুযায়ী নাগরিকত্ব পেতে গেল অন্তত ১১ বছরে এদেশে থাকতে হতো।
বিলটি সম্পর্কে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী প্রকাশ জাভরেকর বলেন, ‘আশাকরি বিলটি পেশ করা হলে এনিয়ে উত্তরপূর্বের রাজ্যগুলির কোনও আপত্তি থাকবে না।’ তবে জাভরেকর যাই বলুন না কেন বিলটির প্রতিবাদে মঙ্গলবার ১১ ঘণ্টার বনধ ডেকেছে নর্থ ইস্ট স্টুডেন্টস ইউনিয়ন। তাদের দাবি বিলটি ১৯৮৫ সালের অসম চুক্তির বিরোধী। ওই চুক্তিতে বলা হয় ১৯৭১ সালের ২৪ মার্চ পর্যন্ত ধর্ম নির্বিশেষে যাঁরা ভারতে এসেছেন তারা নাগরিকত্ব পাবেন। বিলের বিরোধিতার করে রাস্তায় নামার হুমকি দিয়েছে অসমের বেশ কয়েকটি ছাত্র সংগঠন।
আরও পড়ুন-লাভপুর হত্যামামলায় চার্জশিটে নাম ঢুকল মণিরুল-মুকুলের, খুশি নিহতদের পরিবার
বিলটির বিরোধিতায় সরব হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস, কংগ্রেস, সিপিএম। এনিয়ে কংগ্রেস নেতা শশী থারুর বলেন, ‘সব ধর্মের মানুষকে নাগরিকত্ব দেওয়া হলে তা তা মেনে নেব। কিন্তু ধর্মের ভিত্তিতে কাউকে নাগরিকত্ব দেওয়া হলে তার বিরোধিতা করব। এই বিল একেবারে অসাংবিধানিক।’ বিলটির বিরোধিতা করেছেন তৃণণূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও।
অন্যদিকে, বিলটিকে সমর্থন করছেন অসমের মন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা। সংবাদমাধ্যমে তিনি বলেন, ধর্মের কারণে বিভিন্ন দেশে যাঁরা নিপীড়নের শিকার তাদের রক্ষার জন্য বিলটি আনা হয়েছে। ফলে বিলটি ধর্ম নিরপেক্ষ হবে এটা আশা করা হচ্ছে কীভাবে!