প্রেসক্রিপশনে হনুমান চাল্লিশা! ডাক্তারবাবুর 'আধ্যাত্মিক ওষুধে' চক্ষু চড়কগাছ
ডাঃ দীনেশ শর্মার লেখা ওই প্রেসক্রিপশনে পরপর চারটি ওষুধের নাম লেখা হয়েছে। আর তারপর পাঁচ নম্বরে হিন্দিতে লেখা রয়েছে, "হনুমান চাল্লিশা"! ডাক্তার শর্মার বক্তব্য, "রোগীর মানসিক শান্তির জন্য আমি হনুমান চল্লিশা পাঠের কথা বলে থাকি"।
নিজস্ব প্রতিবেদন: সারিবদ্ধভাবে বসে রয়েছেন রোগীরা। এক কোণে একটা সেক্রেটারিয়েট টেবিল। টেবিলের একদিকে গলায় স্টেথস্কোপ ঝুলিয়ে খসখস করে প্রেসক্রিপশন লিখছেন প্রবীণ ডাক্তারবাবু। উল্টোদিকের চেয়ারে বসে রয়েছেন রোগী। লেখা শেষে প্রেসক্রিপশনটা হাতে পেলেন রোগী। আর সেই প্রেসক্রিপশনটাই এখন ভাইরাল। কিন্তু কেন?
ডাঃ দীনেশ শর্মার লেখা ওই প্রেসক্রিপশনে পরপর চারটি ওষুধের নাম লেখা হয়েছে। আর তারপর পাঁচ নম্বরে হিন্দিতে লেখা রয়েছে, "হনুমান চাল্লিশা"! অর্থাত্, রোগীর রোগ সারাতে চার রকমের ওষুধের পাশাপাশি, প্রতিদিন হনুমান চল্লিশা পাঠের নিদান দিয়েছেন ডাক্তারবাবু! কিন্তু হঠাত্ এমন কেন?
এই সেই প্রেসক্রিপশন
রাজস্থানের ভারতপুর জেলায় দীর্ঘকাল ধরে চিকিত্সা করছেন প্রাক্তন সরকারি চিকিত্সক দীনেশ শর্মা। ১৯৯৮ সালে চাকরি থেকে স্বেচ্ছাবসর নিয়ে তিনি ব্যক্তিগত ক্লিনিক খুলেছেন ওই এলাকাতেই। রোগী মূলত স্থানীয় কৃষিজীবী। কিন্তু, প্রেসক্রিপশনে হঠাত্ কেন "হনুমান চাল্লিশা" পাঠের পরামর্শ দিয়েছেন ডাক্তারবাবু?
চিকিত্সা বিজ্ঞানের ছাত্র হয়ে রোগীকে প্রেসক্রিপশনে কীভাবে তিনি "হনুমান চল্লিশা" পাঠের পরামর্শ দিলেন? উত্তরে ৬৯ বছরের ডাক্তার শর্মার বক্তব্য, "রোগীর মানসিক শান্তির জন্য আমি হনুমান চল্লিশা পাঠের কথা বলে থাকি। আসলে বহুক্ষেত্রেই দেখা গেছে, আধ্যাত্মবাদের চর্চায় রোগ দ্রুত নিরাময় হয়।'' তবে তাঁর স্বীকারোক্তি, "আমার কাছে আসা অধিকাংশ রোগীই অত্যন্ত গরীব। অসুখ হলে চিকিত্সকের কাছে না গিয়ে হাতুড়ের কাছে যান তাঁরা। অনেক ক্ষেত্রেই এতে রোগ আরও জটিল আকার ধারণ করে। ফলে তাদের সারিয়ে তুলতে সময় লাগে। আর এতেই অনেক রোগী হতাশ হয়ে পড়েন। আর তাই তাঁদের মানসিকভাবে আশাবাদী করে তুলতে হনুমান চাল্লিশা বা মন্দিরে গিয়ে প্রার্থনা করার পরামর্শ দিই"।
তবে ডাক্তারবাবু যাই বলুন, চিকিত্সকের এমন 'পরামর্শে' হতবাক দেশের চিকিত্সক মহল ও বিজ্ঞানমনস্করা।