নিষেধাজ্ঞা অগ্রাহ্য করে দিল্লি গণধর্ষণের তথ্যচিত্র সম্প্রচার করায় বিবিসিকে আইনি নোটিস কেন্দ্রের
ওয়েব ডেস্ক: নিষেধাজ্ঞা অগ্রাহ্য করে দিল্লি গণধর্ষণের তথ্যচিত্র সম্প্রচার করায় বিবিসিকে আইনি নোটিস দিল কেন্দ্র। নোটিসে চুক্তি ভেঙে বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে তথ্যচিত্র সম্প্রচারের অভিযোগ করা হয়েছে। ইন্টারনেটে যাতে সেটি দেখা না যায় সে জন্য তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রকের দ্বারস্থ হচ্ছে দিল্লি পুলিস। বিতর্কিত তথ্যচিত্র তুলে নেওয়ার জন্য ইতিমধ্যেই ইউটিউবকে নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্র। ছবি নিষিদ্ধ হওয়ায় বাক-স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়ার অভিযোগ করেছেন পরিচালক লেসলি উডইউন। অন্যদিকে, বিতর্কিত এই তথ্যচিত্রটি ইউ টিউব থেকে সরিয়ে ফেলার নির্দেশও দিযেছে কেন্দ্র
দিল্লি গণধর্ষণের ওপর তৈরি এই তথ্যচিত্রে নিষেধাজ্ঞা সমর্থন করছেন না পরিচালক অনুরাগ কাশ্যপ।
ভারত সরকারের আবেদনে কান না দিযে বৃহস্পতিবার সকালে (আইএসটি) ১৬ ডিসেম্বরের গণধর্ষণ কাণ্ড নিয়ে তৈরি তথ্যচিত্র সম্প্রচার করল বিবিসি। ভারতের তরফ থেকে সারা বিশ্বেই এই তথ্যচিত্র সম্প্রচারে নিষেধাজ্ঞা জারি করার আবেদন করা হয়েছিল।
আগামী ৮ই মার্চ, আন্তর্জাতিক শ্রমজীবী নারী দিবসে এই তথ্যচিত্রটি সম্প্রচারিত হওয়ার কথা ছিল। তার আগেই বিবিসি বৃহস্পতিবারই নির্ধারিত সময়ের আগেই এটির সম্প্রচারনে উদ্যোগী হল।
এই তথ্যচিত্রের নির্মাতা ব্রিটিশ পরিচালক লেসলি উডউইন, তিহারের জেলে নির্ভয়ার অন্যতম ধর্ষক, খুনি মুকেশ সিংয়ের সাক্ষ্যাৎকার নিয়েছিলেন। দিল্লি পুলিস লেসলিকে জেরা করার কথা ভাবছে।
নির্ভয়া তথ্যচিত্র ইস্যুতে রাজ্যসভা উত্তপ্ত হয়ে ওঠার পর তথ্যচিত্রের ওপর সরকারি নিষেধাজ্ঞা জারি করেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী রাজনাথ সিং। ব্রিটিশ চলচ্চিত্রকার লেসলি উডউইন তিহার জেলে গিয়ে দিল্লি গণধর্ষণ কাণ্ডে অপরাধী মুকেশ সিংয়ের সাক্ষাত্কার নেন। যেই প্রক্রিয়ায় এই সাক্ষাত্কার নেওয়া হয়েছিল তা আইন বিরুদ্ধ বলে আজ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে রাজ্যসভা। এরপরই তথ্যচিত্রের সম্প্রচারের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে সরকার।
রাজনাথ সিং বলেন, ইন্টারভিউ শুটিং করার সময় শর্ত রাখা হয়েছিল শুধুমাত্র সামাজিক উদ্দেশ্যেই এই সাক্ষাত্কার ব্যবহার করা যাবে। কোনওরকম বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা যাবে না। জেল কর্তৃপক্ষ তথ্যচিত্রের কথা জানার পর এই বিষয়ে আইনি নোটিসও ইস্যু করা হয়। এদিন, রাজ্যসভায় রাজনাথ সিং আশ্বাস দেন সরকার এই তথ্যচিত্র কোনওভাবেই সম্প্রচারিত হতে দেবে না। বলেন, "সরকার ১৬ ডিসেম্বর, ২০১২-র ঘটনার চরম বিরোধিতা করে। আমরা কোনও ব্যক্তি বা দলকে এই ঘটনা বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করতে দেবো না। মহিলাদের নিরাপত্তা ও সম্মান রক্ষায় সরকার দায়বদ্ধ।"
এই ধরণের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হওয়ার আশ্বাস দিয়ে রাজনাথ সিং বলেন, "এই ঘটনা জানার পরেই আমি ব্যক্তিগত ভাবে দুঃখিত হয়ে পড়ি। এরপর কোনওদিন যাতে এইভাবে ধর্ষকদের সাক্ষাত্কার নেওয়ার অনুমতি না দেওয়া হয় সেই বিষয়ে খেয়াল রাখবে সরকার।"
মুকেশ সিংয়ের সাক্ষাত্কার নেওয়া লেসলি জানান, "আমার কাছে এমএইচএ ও তিহার কর্তৃপক্ষের অনুমতি পত্র রয়েছে। আমার এডিট না করা ফুটেজ দেখিয়েছি। জেল কর্তৃপক্ষের নির্দেশ আমরা মেনে চলেছি।
সুশীল কুমার শিন্ডে, যিনি ২০১৩ সালে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী ছিলেন, জানিয়েছেন এই ঘটনার দায় কোনও ভাবেই তাঁর নয়।