গুলবার্গ গণহত্যা রিপোর্ট, মোদীকে নিষ্কৃতি ঘিরে বিতর্ক
গোধরা পরবর্তী দাঙ্গার সময় তাঁর সরকারের ভূমিকা নিয়ে বুধবার কড়া সমালোচনা করেছিল গুজরাত হাইকোর্ট। কিন্তু ২০০২ সালের দাঙ্গাপর্বের গুলবার্গ সোসাইটি গণহত্যাকাণ্ড নিয়ে বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট)-এর রিপোর্ট স্বস্তি দিল নরেন্দ্রভাই দামোদরদাস মোদীকে।
গোধরা পরবর্তী দাঙ্গার সময় তাঁর সরকারের ভূমিকা নিয়ে বুধবার কড়া সমালোচনা করেছিল গুজরাত হাইকোর্ট। কিন্তু ২০০২ সালের দাঙ্গাপর্বের গুলবার্গ সোসাইটি গণহত্যাকাণ্ড নিয়ে বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট)-এর রিপোর্ট স্বস্তি দিল নরেন্দ্রভাই দামোদরদাস মোদীকে।
বুধবার সুপ্রিম কোর্ট নিযুক্ত 'সিট'-এর তরফে আমদাবাদের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এম এস ভাটের কাছে সিল-বন্ধ খামে গুলবার্গ গণহত্যা মামলার 'ক্লোজার রিপোর্ট' জমা দেওয়া হয়। সংবাদমাধ্যমে গুলবার্গ গণহত্যাকাণ্ডের দায় থেকে নরেন্দ্র মোদীকে রেহাই দেওয়ার কথা প্রচারিত হওয়ার পরই সমাজকর্মী তিস্তা শেতলবাদ এবং মুকুল সিনহা মেট্রোপলিটন আদালতে দু'টি পৃথক আবেদনপত্র পেশ করে সিট-রিপোর্টের কপি চেয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার নিম্ন আদালতে এই মামলার শুনানির সময় বিচারক এম এস ভাট এ ব্যাপারে একটি নোটিস পাঠিয়েছেন সিট'কে। আগামী ১৩ ফেব্রুয়ারি এই মামলার পরবর্তী শুনানি।
গুজরাতের সংবাদমাধ্যমের একাংশের দাবি, মুখ্যমন্ত্রী মোদীর বিরুদ্ধে দাঙ্গায় প্ররোচণা দেওয়া বা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে প্রশাসনকে নিষ্ক্রিয় রাখার অভিযোগ উল্লিখিত হয়নি সিট-রিপোর্টে। অভিযুক্ত অন্য ৫৭ জন রাজনীতিক ও প্রশাসনিক কর্তার বিরুদ্ধেও প্রমাণ সংগ্রহে আপারগতার কথা স্বীকার করেছে সিট। স্বভাবতই মোদীর এই `কলঙ্কমুক্তি`র খবরে স্বভাবতই উল্লসিত বিজেপি শিবির।
২০০২ সালে গুজরাত দাঙ্গার সময় আমদাবাদের গুলবার্গ সোসাইটি গণহত্যায় নিহত হন প্রাক্তন কংগ্রেস সাংসদ এহসান জাফরি। ওই ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন এহসান জাফরির স্ত্রী জাকিয়া জাফরি। তাঁর আবেদনের ভিত্তিতে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তদন্তে নামে গুজরাত-দাঙ্গার বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট)। কিন্তু তাত্পর্যপূর্ণ ভাবে `সিট`-এর রিপোর্টের ভিত্তিতে নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে গুজরাত দাঙ্গা নিয়ন্ত্রণে নিষ্ক্রিয় থাকার অভিযোগ প্রসঙ্গে কোনও রায় দেয়নি শীর্ষ আদালত। `আদালত বান্ধব` রাজু রামচন্দ্রনকে দিয়ে সিট-এর রিপোর্ট পর্যালোচনা করানোর গত ১২ সেপ্টেম্বর বিচারপতি ডি কে জৈনের নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম কোর্টের তিন সদস্যের বেঞ্চ এই মামলার বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণের ভার আমদাবাদের ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের উপর ছেড়ে দেয়।
বস্তুত এই ঘটনার পরই উচ্ছসিত মোদী শিবিরের তরফে দাবি করা হয়েছিল, বিগত এক দশক ধরে `ছোটে সর্দার`-এর বিরুদ্ধে গুজরাত দাঙ্গায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ করা হলেও আজ সুপ্রিম কোর্টের বক্তব্যে প্রমাণিত, সেই ‘প্ররোচনা’র কোনও প্রমাণই নেই। সুপ্রিম কোর্টের বক্তব্যে স্বস্তির শ্বাস ফেলে স্বয়ং নরেন্দ্র মোদী টুইট করে জানান, "ঈশ্বর মহান"। এর পরই গুজরাত বিশ্ববিদ্যালয়ে সদ্ভাবনা অনশনে বসার কথা ঘোষণা করেন তিনি।