Independence Day 2022: লালকেল্লা থেকে পরিবারতন্ত্রকে নিশানা মোদীর, পাল্টা দিলেন সোনিয়া-সহ বিরোধীরা
ফিরহাদ হাকিম বলেন, আমার পরিবার নেই কিংবা আমি আমার স্ত্রীকে নিয়ে চলি না তার মানে এটা নয় যে সবার পরিবার খারাপ হয়ে যাবে
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: লালকেল্লায় স্বাধীনতা দিবসের ভাষণে পরিবারতন্ত্রকে চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণ করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। স্বাধীনতা দিবসের মতো এমন একটা দিনেও কেন এমন একটা বিষয়ের অবতরণা তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা। প্রধানমন্ত্রী এদিন বলেন, পরিবারতন্ত্রের লক্ষ্যই হল পরিবারের লাভ লোকসান। তার সঙ্গে দেশের ভালোর কোনও সম্পর্ক নেই। পরিবারবাদের কথা বললেই লোকে ভাবে আমি রাজনীতির কথা বলি। কিন্তু শুধু তা নয়। রাজনীতির সেই কালোছায়া ভারতের অনেক সংস্থায় পড়েছে। এর জন্য দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। এই পরিবারবাদ থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। দেশের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য এটা দরকার। দেশের রাজনীতির শুদ্ধকরণের জন্যও পরিবারবাদ থেকে মুক্ত হতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর ওই মন্তব্যের সমালোচনা করেছেন সোনিয়া গান্ধী। তিনি বলেন, স্বাধীনতার এই কবছর আমরা অনেক অর্জন করেছি। বর্তমানে আত্মকেন্দ্রীক সরকার তা মানতে রাজী নয়। স্বাধীনতা সংগ্রামীদের অবদান মানতে রাজী নয়। এটা একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়।
আরও পড়ুন- অরবিন্দ অ্যাক্রয়েড ঘোষ থেকে শ্রীঅরবিন্দ: এক অনন্য আলোকযাত্রা
কংগ্রেসের পাশাপাশি মোদীর ওই বক্তব্যের বিরোধিতা করে মুখ খুলেছে তৃণমূল কংগ্রেস। দলের তরফে বলা হয়েছে, অনেক বিজেপি নেতার সন্তান ভালো পদে রয়েছেন। রাজনীতিতে মানুষই শেষকথা পরিবার নয়। দলের সাংসদ সৌগত রায় বলেন, ওরা কংগ্রেসের দিকে তাকিয়ে এসব কথা বলছে। পরিবারতন্ত্র তো ওদের দলেও রয়েছে। অনেক নেতার ছেলে ভালো পদ রয়েছেন। ব্যপারটা তা নয়। পরিবারতন্ত্র জোর করে চাপানো যায় না। যে কেউ পরিবার থেকে গেলেও মানুষের কাছেই ভোট চাইতে হয়। নরেন্দ্র মোদী স্বাধীনতা দিবসের মতো এমন এক গুরুত্বপূর্ণ দিনে এসব রাজনৈতিক কথা কেন বললেন তা বোঝা গেল না।
অনদিকে, এনিয়ে ফিরহাদ হাকিম বলেন, যদি কোনও পরিবারের কেউ সেই পরিবারের আদর্শ নিয়ে রাজনীতিতে নামেন আমি তাতে কোনও অন্যায় দেখি না। মতিলাল নেহরু, জওহরলাল নেহরু, ইন্দিরা গান্ধী-সবাই দেশের জন্য কাজ করেছেন। এরকম অনেক মানুষ আছেন যারা দেশের জন্য কাজ করেছেন। আমার পরিবার নেই কিংবা আমি আমার স্ত্রীকে নিয়ে চলি না তার মানে এটা নয় যে সবার পরিবার খারাপ হয়ে যাবে।
পরিবারের কেউ যদি যোগ্য হয় তাহলে তাকে অস্বীকার করা যায় না। এমনটাই মন্তব্য করলেন কংগ্রেস নেতা প্রদীপ ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, নরেন্দ্র মোদীকে বলব ৭৫ বছরের এই স্বাধীনতা দিবসে আপনি প্রতিজ্ঞা করুন দেশের কোনও সম্পদ বিক্রি করবেন না। দেশের কোটি কোটি মানুষের মুখে খাবার নেই। তাদের মুখে খাবার তুলে দিন। বেকারদের চাকরি দিন। তার পরিবর্তে এসব কী বললেন?
পরিবারতান্ত্রিক রাজনীতির বিরুদ্ধে মোদীর বক্তবের পাশেই দাঁড়ালেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। প্রধানমন্ত্রী বাংলার শুরু নয়, দেশের যুব সমাজের মনের কথা বলে দিয়েছেন। স্বাধীনতার পর আমাদের দেশে যেন একটা অলিখিত ব্যাপার হয়ে গিয়েছে। রাজনৈতিক পরিবার মানে তাদের বিপুল সম্পত্তি থাকবে। সেই সম্পত্তির কোনও হিসেব থাকবে না। কেউ কাউকে বিরক্ত করব না। একে অপরের পিঠ চুলকে দেব। দেশের রাজনৈতিক পরিবারগুলির মধ্যে এই যে নেক্সাস তৈরি হয়েছে তা বন্ধ হওয়া উচিত।