India@75: ছেলেবেলায় বিচ্ছিন্ন দুই ভাইকে ৭৫ বছর পরে মিলিয়ে স্বাধীনতা ৭৫-ই!
এ যেন একেবারে গল্প! আসলে তো গল্প নয়। ঘোর বাস্তব। সাধে বলা হয়, ট্রুথ ইজ স্ট্রেঞ্জার দ্যান ফিকশন। বিস্ময়ের বইকি! এ একেবারে যেন আবার দেখা যদি হল সখা প্রাণের মাঝে আয় কাব্যের বাস্তবরূপ! পরস্পরবিচ্ছিন্ন দুই ভাইয়ের পুনর্মিলনের কাহিনি। সিকা খান আর সাদিক খান।
![India@75: ছেলেবেলায় বিচ্ছিন্ন দুই ভাইকে ৭৫ বছর পরে মিলিয়ে স্বাধীনতা ৭৫-ই! India@75: ছেলেবেলায় বিচ্ছিন্ন দুই ভাইকে ৭৫ বছর পরে মিলিয়ে স্বাধীনতা ৭৫-ই!](https://bengali.cdn.zeenews.com/bengali/sites/default/files/2022/08/14/385503-twobrothers.png)
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: এ যেন একেবারে গল্প! আসলে তো গল্প নয়। ঘোর বাস্তব। সাধে বলা হয়, ট্রুথ ইজ স্ট্রেঞ্জার দ্যান ফিকশন। বিস্ময়ের বইকি! এ একেবারে যেন আবার দেখা যদি হল সখা প্রাণের মাঝে আয় কাব্যের বাস্তবরূপ! পরস্পরবিচ্ছিন্ন দুই ভাইয়ের পুনর্মিলনের কাহিনি। সিকা খান আর সাদিক খান। দুই ভাইয়ের মধ্যে সাদিক বড়, সিকা ছোট। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের সময় যখন দুজন আলাদা হন, তখন সিকার বয়স ছিল মাত্র ছয় মাস, আর সাদিকের ১০ বছর। দাঙ্গার সময় সাদিক চলে যান পাকিস্তানে। সিকা রয়ে যান ভারতে। বহুদিন ধরে একে অন্যের খোঁজ করছিলেন। খোঁজ মেলেনি কারওরই। অবশেষে স্বাধীনতার ৭৫ বছরই যেন এঁদের মিলিয়ে দিল ৭৫ বছর পরে। দেখা হল দুই ভাইয়ের। মূলত পাকিস্তানের ইউটিউবার নাসির ধিলোঁর সহায়তায় সিকা-সাদিকের দেখা। চোখের জলে ভাসছেন দুই ভাই।
ব্রিটিশ শাসনের শেষভাগের ওই সময়ে সিকার মতো অনেক পরিবারই বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। সাম্প্রদায়িক হিংসার শিকার হয় সিকার বাবা ও বোন। ১০ বছরের সাদিক সে সময় কোনও ভাবে পাকিস্তানে পালিয়ে যেতে পেরেছিল। পাকিস্তানের পঞ্জাবে ভাতিন্ডায় একটি বাড়িতে বসে সেসব কথা মনে করছিলেন সিকা। ছোটবেলা থেকেই সিকা জানতেন, তাঁর পরিবারের একমাত্র বেঁচে যাওয়া সদস্য তাঁর ভাই সাদিক। কিন্তু ভাইয়ের কোনো খোঁজ তিনি পাচ্ছিলেন না। তিন বছর আগে প্রতিবেশী এক চিকিৎসক তাঁর ভাইকে খুঁজে দেওয়ার ব্যাপারে সাহায্য করেন। এরপর করতারপুর করিডরে গত জানুয়ারি মাসে দুই ভাইয়ের দেখা হয়।
আরও পড়ুন: India@75: স্বাধীনতা ৭৫-এর লগ্নে একবার ফিরে দেখা অবিস্মরণীয় এই সব নির্মাণের দিকে ...
২০১৯ সালে ওই করিডর খুলে দেওয়া হয়েছিল। এই করিডর খুলে দেওয়ায় বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া পরিবারগুলি ফের একত্রিত হওয়ার সুযোগ পেয়েছিল। হাতে বিবর্ণ হয়ে যাওয়া একটি ছবি ধরে রেখে আবেগমথিত স্বরে সিকা বলেন, আমি ভারত থেকে এসেছি, সাদিক এসেছে পাকিস্তান থেকে। প্রথমবার যখন আমাদের দেখা হল, তখন আমরা একে অন্যকে জড়িয়ে ধরে শুধু কেঁদেছি। ভারত ও পাকিস্তানের বৈরিতা নিয়ে আমরা ভাবি না। ভারত-পাকিস্তানের রাজনীতি নিয়েও আমরা ভাবি না।
ভাইকে খুঁজতে সিকাকে সাহায্য করেছিলেন ৩৮ বছরের ইউটিউবার ধিলোঁ। তিনি পাকিস্তানে পেশায় কৃষক ও আবাসন ব্যবসার এজেন্ট। ধিলোঁ বলেন, ইউটিউব চ্যানেলের মাধ্যমে তিনি প্রায় ৩০০ পরিবারকে এক হতে সহায়তা করেছেন। পাকিস্তানের এক শিখধর্মাবলম্বী ভূপিন্দর সিং তাঁকে সহায়তা করেছেন। ধিলোঁ বলেন, আমি মনে করি, এসব ঘটনা আমাদের নিজেদেরই ঘটনা। অথবা আমাদের পূর্বপুরুষদের ঘটনা। তাই বিচ্ছেদ হয়ে যাওয়া এসব মানুষকে এক করাটা আমাদের পূর্বসূরিদেরই ইচ্ছাপূরণের মতো।
আজাদি কা অমৃত মহোৎসবে এর চেয়ে বড় অমৃতের স্বাদ আর কীসে হতে পারত ? বিচ্ছিন্নতার বেদনার সমস্ত গরল মুছে গিয়ে পুনর্মিলনের অমৃতধারাই যেন এই ঘটনার একমাত্র ক্যাচলাইন।