কেদারের গর্ভগৃহে
ধ্বংসস্তুপ আর মৃতদেহের মাঝে দাঁড়িয়ে রয়েছে অক্ষত শতাব্দী প্রাচীন কেদারনাথ মন্দির। ভিতরে সুসজ্জিত কেদারনাথ শিবের পবিত্র বিগ্রহ ভোগ মূর্তি। কিন্তু বাইরের পূতিগন্ধময় পরিবেশে বাধা দিচ্ছিল শিবজির অখণ্ড পূজায়। তাই কেদারনাথ মন্দির থেকে ৬১ কিলোমিটার দূরে উকিমঠে বিগ্রহ স্থানান্তর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মন্দিরের রাওয়াল (প্রধান পুরোহিত) ভীমশঙ্কর লিঙ্গ শিবাচর্য।
ধ্বংসস্তুপ আর মৃতদেহের মাঝে দাঁড়িয়ে রয়েছে অক্ষত শতাব্দী প্রাচীন কেদারনাথ মন্দির। ভিতরে সুসজ্জিত কেদারনাথ শিবের পবিত্র বিগ্রহ ভোগ মূর্তি। কিন্তু বাইরের পূতিগন্ধময় পরিবেশে বাধা দিচ্ছিল শিবজির অখণ্ড পূজায়। তাই কেদারনাথ মন্দির থেকে ৬১ কিলোমিটার দূরে উকিমঠে বিগ্রহ স্থানান্তর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মন্দিরের রাওয়াল (প্রধান পুরোহিত) ভীমশঙ্কর লিঙ্গ শিবাচর্য।
ভীমশঙ্করের সিদ্ধান্ত নিয়ে এর মধ্যেই দানা বেঁধেছে বিতর্ক। কর্ণাটকের লিঙ্গায়ত গোষ্ঠী বীরশৈব ৩০০ প্রজন্ম ধরে কেদারনাথ মন্দিরের রাওয়াল। এই বংশদ্ভূত শিবাচর্য মন্দিরের ৩২৪তম রাওয়াল। নিয়ম অনুযায়ী প্রতিবছর শীতকালে তুষারপাতের সময় বিগ্রহ কেদারনাথ মন্দির থেকে নিয়ে যাওয়া হয় উকিমঠের ওঙ্কারেশ্বর মন্দিরে। মে মাসে কেদারনাথ মন্দিরে ফিরিয়ে আনা হয় বিগ্রহ। ধর্মীয় রীতি মেনে প্রতিদিন সকালে মন্দিরের গর্ভগৃহে নিয়ে আসা হয় বিগ্রহ। সন্ধেয় আবার তা নিয়ে যাওয়া হয় পুরোহিতদের গৃহে।
গত ১৬ জুন হড়কা বানের সময় পুরোহিতদের গৃহে ছিল বিগ্রহ। ভগেশলিঙ্গ নামের এক তরুণ পুরোহিত সেইসময় প্রাণশঙ্কার মধ্যেও বিগ্রহ বাঁচিয়ে গর্ভগৃহে নিয়ে আসেন। শিবাচর্য বিগ্রহ উকিমঠে রাখতে চাইলেও মন্দিরের অন্য পুরোহিত শঙ্কারাচার্য স্বরূপনন্দ সরস্বতীর মতে, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব কেদারনাথ মন্দিরেই ফিরিয়ে আনা হোক বিগ্রহ। হরিদ্বারের ধর্মগুরু শঙ্করাচার্য মনে করেন, কেদারনাথ মন্দিরের পুজোর রীতি কোনওমতেই নভেম্বর মাসের আগে উকিমঠে পালন করা সম্ভব নয়। মন্দির চত্বর পরিষ্কার করা হলেই যত দ্রুত সম্ভব বিগ্রহ কেদারনাথে ফিরিয়ে আনতে হবে। অন্যথায়, তা দেশের জন্য বড় ক্ষতি ডেকে আনতে পারে।
তবে শঙ্করাচার্যের বক্তব্যকে বিশেষ আমল দিতে রাজি নন রাওয়াল শিবাচর্য। তাঁর মতে, কেদারনাথ শহর সম্পূর্ণ পরিষ্কার না করে পবিত্র জ্যোতির্লিঙ্গর আরাধনা করা কখনই সম্ভব নয়। এমনকী, মন্দিরের রীতি সম্পর্কে শঙ্করাচার্যের কোনও বক্তব্য থাকতে পারে না বলেও মন্তব্য করেছেন রাওয়াল। ১৬ তারিখ হড়কা বানের সময় একটি বড়সড় মাপের পাথর গড়িয়ে এসে আড়াল করে দেয় মন্দিরের গর্ভগৃহ। ফলে পাথরের দুপাশ দিয়ে বিধ্বংসী হড়কা বান মন্দিরের চারপাশ ধ্বংসস্তূপে পরিণত করলেও অলৌকিক ভাবে বেঁচে যায় মূল কেদারনাথ মন্দির। প্রাণ বাঁচাতে বহু মানুষ সেদিন আশ্রয় নিয়েছিলেন মন্দিরের চত্বরেও। কিছু মানুষ গর্ভগৃহের ঘণ্টা ধরেও ঝুলে পড়েন। মন্দিরে আশ্রয়প্রার্থী সকলে না বাঁচলেও গর্ভগৃহের মধ্যে সেদিন রাতে প্রাণে বেঁচে যান ঘণ্টা ধরে ঝুলে থাকা মানুষগুলি।