ভাঙা পায়েই ২৪০ কিলোমিটার হেঁটে বাড়ি ফিরতে হবে, প্লাস্টার কেটে ফেললেন শ্রমিক
"আমি জানি সতর্কতার কারণেই পুলিশ সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছে। কিন্তু আমার কী করার আছে বলুন?" পায়ে প্লাস্টার ছাড়াতে ছাড়াতেই বলছিলেন ভানওয়ারলাল
নিজস্ব প্রতিবেদন: "কাজ বন্ধ, টাকা বন্ধ, বাড়ি ফিরতেই হবে," রোদে ঝলসে যাওয়া হাইওয়ের উপর বসেই বলছিলেন ভানওয়ারলাল। কাঁচি খুঁচিয়ে দিয়ে ভাঙা পায়ের প্লাস্টার ছাড়িয়ে নেওয়ায় হাত তখন ব্যস্ত। ২৪০ কিলোমিটার হেঁটে গ্রামের বাড়ি পৌঁছতে হবে যে!
ধু ধু করছে ফাঁকা হাইওয়ে। রাস্তায় বসেই পায়ের প্লাস্টার খুলে ফেলছেন এক শ্রমিক। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া অভিবাসী শ্রমিকদের দুর্দশার ছবির লিস্টে নতুন সংযোজন। এই ভিডিয়ো যেন আরো একবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল লকডাউনের ফলে বাড়ি থেকে দূরে গিয়ে থাকা শ্রমিকদের দুর্দশা। গাড়িতে ৫০০ কিলোমিটার এসেছেন। কিন্তু যান চলাচল বন্ধ মহারাষ্ট্র-রাজস্থান সীমান্তে। ফলে রাজস্থানে বাকি ২৪০ কিলোমিটার হেঁটে গ্রামের বাড়ি পৌঁছনো ছাড়া কোন উপায় নেই ভানওয়ারলাল ও তাঁর সহকর্মীদের কাছে।
Desperate migrant, cuts off his Plaster, starts walking towards Rajasthan to reach home @ashokgehlot51 @INCIndia @SachinPilot @ChouhanShivraj @RahulGandhi@soniandtv @ndtv @NPDay@delayedjab #lockdownindia#MigrantsOnTheRoad #covid #Coronavirustruth pic.twitter.com/AY2cpEcj08
— Anurag Dwary (@Anurag_Dwary) March 31, 2020
"আমি জানি সতর্কতার কারণেই পুলিশ সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছে। কিন্তু আমার কী করার আছে বলুন?" পায়ে প্লাস্টার ছাড়াতে ছাড়াতেই বলছিলেন ভানওয়ারলাল। মহারাষ্ট্র ঠিকাশ্রমিকের কাজ করার সময়ই কয়েকদিন আগে বাঁ পায়ের তিনটে আঙ্গুল ভেঙেছে। চোট লেগেছে গোড়ালিতেও। প্লাস্টার আরও বেশ কিছুদিন রাখার কথা। কিন্তু এক পায়ে ভারী প্লাস্টার নিয়ে তো আর এতটা পথ হাঁটা যায় না। ফলে কেটে ফেললেন তিনি। রাস্তার একপাশে দাঁড়িয়ে হাঁ করে দেখছিলেন তাঁর সঙ্গীরা।
আরও পড়ুন- রাজ্যে করোনা আক্রান্তে 'তৃতীয় মৃত্যু'? 'লক' করা হতে পারে হাওড়া জেলা হাসপাতাল
মধ্য প্রদেশের রণবীর সিং ২০০ কিলোমিটার হাঁটার পরও পথে মৃত্যু হয় তাঁর। লকডাউনের পরে দেশজুড়ে অভিবাসী শ্রমিকদের দুর্দশার ছবি বেশ প্রকট সোশ্যাল মিডিয়ায়। হাইওয়েতে জিনিসপত্র, শিশু নিয়ে কয়েকশো কিলোমিটার হেঁটে বাড়ি রওনা দিচ্ছেন হাজার হাজার শ্রমিক। ছবিটা একই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। বিভিন্ন রাজ্যে অভিবাসী শ্রমিকদের জন্য বাসের ব্যবস্থা করা হলেও সবাই যে সমান সুবিধা পায়নি। আর এমন পরিস্থিতিতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার নীতিও যে পালন হচ্ছে না তা বলাই বাহুল্য।