মাওবাদীদের নতুন শর্ত
ওড়িশায় মাওবাদীদের হাতে পণবন্দি দুই ইতালীয় নাগরিকের মুক্তি নিয়ে অচলাবস্থা এখনও কাটেনি। বসচুসকো পোলো এবং ক্ল্যানডিও কোলানজিলোর মুক্তির বিষয়টি নিয়ে যথেষ্ট চাপে নবীন পট্টনায়েক সরকার। একদিকে আজই শেষ হচ্ছে শর্তপূরণের সময়সীমা। অন্যদিকে, দাবি পূরণের জন্য সরকারের ওপর চাপ বাড়িয়েই চলেছে মাওবাদীরা।
ওড়িশায় পণবন্দিদের মুক্তির জন্য নতুন দাবি পেশ করল মাওবাদীরা। আজ মাওবাদী রাজ্য সম্পাদক সব্যসাচী পাণ্ডা অডিও টেপটি প্রকাশ করেন। জেলবন্দি ৪২৭জন আদিবাসীদের মুক্তির দাবি জানিয়েছে মাওবাদীরা। জেলে বন্দিদের মৃত্যুর জন্য দায়ী ব্যক্তির শাস্তির দাবিও করেছে তারা। এই দুটি দাবি মানলে একজন নাগরিককে ছাড়া হবে বলে মাওবাদীরাদের তরফে জানানো হয়েছে।
মাওবাদীদের দেওয়া পাল্টা শর্তের মধ্যেও সুর চড়া করেছে প্রশাসন। অপহরণ কাণ্ডে ২৬ জন মাওবাদীর বিরুদ্ধে এফআইআর করেছে পুলিস। গত রবিবার বসচুসকো পোলো এবং ক্ল্যানডিও কোলানজিলো নামের দুই ইতালীয়কে অপহরণ করে মাওবাদীরা।
বসচুসকো পোলো এবং ক্ল্যানডিও কোলানজিলোর মুক্তির বিষয়টি নিয়ে যথেষ্ট চাপে নবীন পট্টনায়েক সরকার। একদিকে আজই শেষ হচ্ছে শর্তপূরণের সময়সীমা। অন্যদিকে, দাবি পূরণের জন্য সরকারের ওপর চাপ বাড়িয়েই চলেছে মাওবাদীরা। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রের পরামর্শ, মাওবাদীদের দাবি মেনে ওড়িশা সরকার যেন কোনও বন্দিকে মুক্তি না দেয়। সেই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়কের তোলা নিশ্চেষ্টতার অভিযোগ অস্বীকার করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদাম্বরম অপহৃতদের মুক্তির বিষয়ে সম্ভাব্য সমস্ত রকম সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন ওড়িশা সরকারকে।
মঙ্গলবার ফের অপহৃতদের মুক্তির আবেদন জানিয়েছেন নবীন পট্টনায়েক। মুখ্যমন্ত্রীর প্রস্তাব মেনে নতুন মধ্যস্থতাকারী হিসাবে বিডি শর্মা ও প্রফুল্ল সামন্তরায়ের নাম করেছে মাওবাদীরা। কিন্তু প্রফুল্ল সামন্তরায় জানিয়েছেন, শুধু মাওবাদীরা বললে তিনি আলোচনায় বসবেন না।
গত কয়েক মাসে ওড়িশা পুলিসের বিশেষ মাওবাদী দমন বাহিনী `স্পেশাল অপারেশন্যাল গ্রুপ`(এসওজি)-এর লাগাতার অভিযানে যথেষ্ট কোণঠাসা হয়ে পড়েছে সিপিআই (মাওবাদী)-র গেরিলারা। চলতি বছরেই অন্ধ্র পুলিসের `গ্রে হাউন্ড` বাহিনীর দ্বারা প্রশিক্ষিত এসওজি বাহিনীর জওয়ানরা পিপল্স লিবারেশন গেরিলা আর্মির জাঞ্জাবাটি-শ্রীকাকুলামের এরিয়া কমান্ডার চিত্রকম রেড্ডি এবং রায়গড়া জেলার মাওবাদী সংগঠনের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা কমরেড সতীশকে খতম করেছে। এই পরিস্থিতিতে নিজেদের অস্তিত্ব জাহিরের উদ্দেশ্যেই মাওবাদীরা দুই ইতালীয় পর্যটককে অপহরণ করেছে বলে রাজনৈতিক মহলের ধারণা।