রেহমানের দাবি মেনে `তথ্যপ্রমাণ` দেবে নয়াদিল্লি

অসমের গোষ্ঠীসংঘর্ষ নিয়ে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে পাকিস্তান থেকে মিথ্যা প্রচারের অভিযোগ নিয়ে পাক অভ্যন্তরীণ বিষয়কমন্ত্রী রেহমান মালিকের দাবি মনে নিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীলকুমার শিন্ডে। অন্যদিকে অসমের গোষ্ঠীসংঘর্ষ সম্পর্কে অসত্য ও বিকৃত ছবি এবং ভিডিও প্রচারের অভিযোগে এদিন ২৫০টি ওয়েবসাইট 'ব্লক' করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।

Updated By: Aug 20, 2012, 12:25 PM IST

অসমের গোষ্ঠীসংঘর্ষ নিয়ে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে পাকিস্তান থেকে মিথ্যা প্রচারের অভিযোগ নিয়ে পাক অভ্যন্তরীণ বিষয়কমন্ত্রী রেহমান মালিকের দাবি মনে নিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীলকুমার শিন্ডে। নয়াদিল্লির অভিযোগের জবাবে রেহমান বলেছিলেন, নয়াদিল্লির তরফে উপযুক্ত তথ্যপ্রমাণ পেশ করা হলে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেবে ইসলামাবাদ। সেই 'তথ্যপ্রমাণ' পেশ করতে সম্মত হয়েছেন শিন্ডে। অন্যদিকে অসমের গোষ্ঠীসংঘর্ষ সম্পর্কে অসত্য ও বিকৃত ছবি এবং ভিডিও প্রচারের অভিযোগে এদিন ২৫০টি ওয়েবসাইট 'ব্লক' করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।
২৬/১১-কাণ্ডের পাক নেপথ্যচক্রীদের বিরুদ্ধে নানা প্রমাণ সম্বলিত একের পর এক ডসিয়ের ইসলামাবাদের হাতে তুলে দিলেও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি সে দেশের সরকার। পাক বিদেশমন্ত্রকের তরফে ইতিমধ্যেই সীমান্তের ওপার থেকে ভিডিও ক্লিপিংস ছড়ানোর অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। দু'দেশের মধ্যে আস্থার ঘাটতির জন্যই এই ধরনের অভিযোগ উঠছে বলে পাক দূতাবাসের তরফে মন্তব্য করা হয়েছে। তবে এ বারও আসিফ আলি জারদারি-রাজা পারভেজ আসরফদের সদিচ্ছার উপর ভরসা রেখে পাকিস্তানের হাতে মিথ্যা প্রয়োজনীয় তথ্যপ্রমাণ তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নর্থ ব্লক। এদিন সুশীলকুমার শিন্ডে জানিয়েছেন, এ ব্যাপারে তথ্যপ্রমাণ পাকিস্তানের হাতে তুলে দেওয়া হবে।
অসমের দাঙ্গা, হিংসা, বিদ্বেষে উস্কানি দিচ্ছে বিভিন্ন ভুয়ো এমএমএস। সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট গুলিতে ভরে যাচ্ছে ভুয়ো ছবিতে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব আর কে সিংয়ের অভিযোগ, এ গুলির উত্‍স পাকিস্তান। এই পরিস্থিতিতে রবিবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীলকুমার শিন্ডে এই বিষয় নিয়ে টেলিফোনে কথা বলেন পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণমন্ত্রী রেহমান মালিকের সঙ্গে। তিনি বলেন, এমএমএস বা সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটগুলির মতো মাধ্যমে এই সব ছবি প্রচারিত হলে তা ভারতে সাম্প্রদায়িক শক্তিগুলিকে উস্কানি দিতে পারে। শিন্ডে এ বিষয় পাকিস্তানের সহযোগিতাও প্রত্যাশা করেন।
অসমের ঘটনা যথেষ্ট উদ্বেগজনক। উত্তর পূর্বাঞ্চলের মানুষের জন্য এই ঘটনা অত্যন্ত লজ্জাজনক। অসম প্রসঙ্গে রবিবার এমন মন্তব্য করেন কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী। দেশের যে কোনও নাগরিক যেখানে খুশি থাকতে পারেন। সেই স্বাধীনতা সকলেরই রয়েছে। অসমের সাম্প্রতিক অশান্তির ঘটনা রীতিমত আশঙ্কায় রেখেছে দেশবাসীকে। অভিযুক্তদের অবিলম্বে শাস্তি পাওয়া উচিত বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

অসমে হিংসার জেরে অন্য রাজ্য থেকে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বাসিন্দারা নিজেদের রাজ্যে ফিরে আসছেন। আতঙ্কে বহু মানুষ ঘর ছেড়ে আশ্রয় নিয়েছেন ত্রাণ শিবিরে। এমএমএস-এর মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া গুজব পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলেছে। শনিবার, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব আর কে সিং জানান, পাকিস্তান থেকে আপলোড করা হচ্ছে এই সমস্ত ভুয়ো ভিডিও ক্লিপিংস। ৩ মাস আগে মায়ানমারের হিংসার ছবি অসমের ঘটনা বলে চালিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এমনকী, ঘূর্ণিঝড়, ভূমিকম্পে মৃত্যু ও ধ্বংসের ছবি ছড়িয়ে দিয়েও চলছে ভ্রান্ত প্রচার। যে সব ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ভুয়ো ভিডিও ক্লিপিংস ছড়ানো হচ্ছে সেগুলিকে ব্লক করার কথাও জানান কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব।
যে সব কম্পিউটার থেকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে ভুয়ো ছবি আপলোড করা হচ্ছে, গুগুলের কাছে সেগুলির আইপি অ্যাড্রেস চাওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। দিল্লির সন্দেহ, ভিডিও ক্লিপিংস ছড়ানোর পিছনে পাক গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-এর হাত রয়েছে। উস্কানি দেওয়ার কাজে জড়িত থাকতে পারে হিজবুল মুজাহিদিন, হুজি ও সিমি-র মতো জঙ্গি সংগঠন। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের প্রাথমিক রিপোর্টে বলা হয়েছে, গত মাসের ১৩ তারিখ থেকে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে ভুয়ো প্রোফাইল তৈরি করে ভিডিওগুলি পোস্ট করা হচ্ছে। অন্যদিকে অসমের গোষ্ঠীসংঘর্ষ সম্পর্কে অসত্য ও বিকৃত ছবি এবং ভিডিও প্রচারের অভিযোগে এদিন ২৫০টি ওয়েবসাইট 'ব্লক' করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।

.