সঙ্ঘের মঞ্চে সহিষ্ণুতা-ধর্মনিরপেক্ষতার পাঠ প্রণবের

পাঁচ হাজার বছরের পুরনো সংস্কৃতিকে নষ্ট করার চেষ্টা হয়েছিল, তবে তা ধ্বংস করা সম্ভব হয়নি, বললেন প্রণব মুখোপাধ্যায়। 

Updated By: Jun 7, 2018, 09:29 PM IST
সঙ্ঘের মঞ্চে সহিষ্ণুতা-ধর্মনিরপেক্ষতার পাঠ প্রণবের

নিজস্ব প্রতিবেদন: আরএসএস-এর মঞ্চে ধরা পড়লেন 'চেনা জানা' প্রণববাবু। আরএসএস-এর 'তৃতীয় বর্ষ বর্গে'র সমাবর্তন মঞ্চে এক কথায় সহিষ্ণুতার পাঠই দিলেন প্রণব মুখোপাধ্যায়। প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি এদিন বলেন, ''ধর্মনিরপেক্ষতাই দেশের একমাত্র পরিচয়। সংস্কৃতি ও ধর্মের বিভিন্নতা সত্বেও এক সূত্রে গেঁথে থাকাই ভারতের পরিচয়।'' একইসঙ্গে 'আলোচনার' কথা বলে পোড় খাওয়া এই রাজনীতিক কংগ্রেসকেও বার্তা দিলেন বলে মনে করছে পর্যবেক্ষকদের একাংশ। প্রণববাবু আরও বলেন, ''গণতন্ত্রে সব বিষয়েই মানুষের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা উচিত।''       

সাম্প্রতিককালে জাতীয়তাবাদ ও দেশপ্রেম নিয়ে মাথাচাড়া দিয়েছে বিতর্ক। আর সেই প্রসঙ্গেই বক্তব্যের শুরুতেই সুর বেঁধে দেন প্রণব মুখোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, ''দেশ, জাতীয়তাবাদ ও দেশপ্রেম নিয়ে আমার ধারণা আপনাদের সঙ্গে ভাগ করে নেব। দীর্ঘ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জাতি পরিচয় গড়ে উঠেছে। নানা সংস্কৃতি ও মত আমাদের সহিষ্ণু করে তুলেছে।'' এনিয়ে মহাত্মা গান্ধীর ভাবনা তুলে ধরে প্রণববাবু বলেন, ''জাতীয়তাবাদ আগ্রাসী বা বিধ্বংসী নয়। 'ডিসকভারি অব ইন্ডিয়া' বইয়ে নেহরু লিখেছেন, হিন্দু, মুসলিম, শিখ ও অন্যান্য সম্প্রদায়ের একাত্মকরণের মাধ্যমেই জাতীয়তাবাদ জাগ্রত হতে পারে।''  

আবার সঙ্ঘের 'সনাতন সংস্কৃতি'র আবেগ উস্কে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতির মন্তব্য, পাঁচ হাজার বছরের পুরনো সংস্কৃতিকে নষ্ট করার চেষ্টা হয়েছিল। তবে তা ধ্বংস করা সম্ভব হয়নি। এমনকি বিদেশি শক্তিরা এদেশের সঙ্গে একাত্ম হয়ে গিয়েছেন। এই প্রসঙ্গে রবিঠাকুরের রচনা টেনে প্রণববাবু বলেন, ''কেহ নাহি জানে কার আহ্বানে কত মানুষের ধারা দুর্বার স্রোতে এল কোথা হতে...''    

উল্লেখ্য, রাষ্ট্রপতি থাকাকালীন একাধিকবার বহুত্ববাদের পক্ষে সওয়াল করেছেন প্রণব মুখোপাধ্যায়ে। রাষ্ট্রপতি হিসেবে নিজের শেষ ভাষণেও সহিষ্ণুতার কথাই বলেছিলেন এই বঙ্গ সন্তান। অনেকেই বলছেন, এদিন প্রণবের বক্তব্যে 'নতুন কিছু নেই'। বরং আগের কথাই ফের বলেছেন। 

তবে বহু প্রতিক্ষীত বক্তৃতায় বৃহস্পতিবার প্রণব যা বললেন তাতে আরএসএস-এর উত্ফুল্ল হওয়ার মতো বিশেষ কোনও উপাদানই ছিল না। কিন্তু, কংগ্রেস নেতৃত্ব এখনও প্রণবের সমালোচনা থেকে বিরত হচ্ছেন না। তাদের প্রশ্ন, ধর্মনিরপেক্ষতা ও বহুত্ববাদের কথা বলতে গিয়ে আরএসএস-এর মঞ্চের কী দরকার ছিল? অন্যদিকে, সঙ্ঘের বক্তব্য, তাদের প্রধান অতিথি নিজের ভাবনার কথা বলেছেন এবং এটাই তারা চেয়েছিলেন।

আরও পড়ুন- আরএসএসের প্রতিষ্ঠাতাকে 'ভারত মায়ের মহান সন্তান' আখ্যা প্রণবের

.