অন্যদের বাঁচাতে গিয়ে হঠাত্ লাইনে পা আটকে গেল ‘রাবণের’...
দলবীরের ভাই বলবীর কিন্তু বলেন, সে সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছে। দলবীরের ভাইয়ের কথায়, “আমরা দশেরা দেখতে গিয়েছিলাম। ও গিয়েছিল ট্রফি জিততে (রাবনের অভিনয়)। কিন্তু অন্যদের বাঁচাতে গিয়েই তার প্রাণ গেল।”
নিজস্ব প্রতিবেদন: মাত্র ১০-১৫ সেকেন্ডের সময়। এক ঝটকায় প্রাণ চলে গেল কমপক্ষে ৬০ জনের। কারওর শরীর ছিন্ন-বিছিন্ন। কারও হাত নেই তো, কারওর পা। কেউ আবার গুরুতর জখম নিয়ে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন হাসপাতালে। শুক্রবার সন্ধে ৭ টা নাগাদ অমৃতসরের ধোবি ঘাটে রাবন দহন দেখতে গিয়ে এমনই ভয়াবহ দুর্ঘটনার সম্মুখীন হলেন বহু মানুষ।
এ দিন রামলীলার অভিনয় করতে গিয়ে ট্রেন দুর্ঘটনার মুখে পড়ে মৃত্যু হল ‘রাবণের’-ও। দলবীর সিং নামে ওই যুবক ধোবি ঘাটের রামলীলার অনুষ্ঠানে রাবনের ভূমিকায় অভিনয় করেন। বাড়ি ফেরার পথে দুর্ঘটনাটি ঘটে। তাঁর মা শরণ কাউরের কথায়, “রামলীলার অনুষ্ঠানে অভিনয় করার জন্য মুখিয়ে থাকত আমার ছেলে। রাবনের ভূমিকায় অভিনয় এই প্রথম । এর আগে, হনুমান, রাম, লক্ষ্মণের ভূমিকা অভিনয় করেছে। যাওয়ার সময় তার অভিনয় দেখতে সবাইকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল সে।”
আরও পড়ুন- গাফলতি ছিলই; ঘাতক ট্রেনটি হর্ন-ই দেয়নি, অমৃতসরের দুর্ঘটনায় দাবি সিধুর
দলবীরের ভাই বলবীর কিন্তু বলেন, সে সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছে। দলবীরের ভাইয়ের কথায়, “আমরা দশেরা দেখতে গিয়েছিলাম। ও গিয়েছিল ট্রফি জিততে (রাবনের অভিনয়)। কিন্তু অন্যদের বাঁচাতে গিয়েই তার প্রাণ গেল।” কিন্তু কীভাবে? বলবীর জানান, অভিনয় শেষে যখন সে ফিরছিল, দূর থেকে দেখতে পায় ট্রেনটি ছুটে আসছে। পাঁচ-ছয় জনকে লাইন থেকে সরিয়ে আনার চেষ্টাও করে। কিন্তু লাইনের ফাঁকে তার পা আটকে যায়। মুহূর্তের মধ্যে তাকে চাপা দিয়ে চলে যায় ট্রেনটি। বলবীর জানিয়েছেন, তাঁর সাহসিকতার কথা ভাবা উচিত সরকারের। দলবীরের স্ত্রীর জন্য সরকারি চাকরির দাবি জানিয়েছেন তাঁর মা। ৮ মাসের কন্যা সন্তান রয়েছে দলবীরের।
আরও পড়ুন- ট্রেনের গতি ছিল স্বাভাবিক, লাইনে বসে থাকা উচিত হয়নি: সাফাই রেলের
উল্লেখ্য, শুক্রবার সন্ধে ৭টা নাগাদ অমৃতসরের ধোবি ঘাট এলাকায় রেললাইনের উপরে বসে রাবণ দহন দেখছিলেন কমপক্ষে শ’খানেক মানুষ। ওই সময় ঘণ্টায় প্রায় ৬৭ কিলোমিটার বেগে ধেয়ে আসছিল ট্রেনটি। রাবণ পোড়ানোর কান ফাটানো বাজির আওয়াজ এবং আলোয় কারওরই হুঁশ ছিল না। তবে, চালক প্রাথমিকভাবে দাবি করেছেন, গ্রিন সিগন্যাল দেওয়া ছিল। তিনি বুঝতেই পারেননি, লাইনের উপর বসে রয়েছে কয়েক’শো মানুষ।