অজানা প্রণব: পয়সার গাছ পুঁতে ছিলেন প্রণব, নিয়ম করে জলও দিতেন

 ওই ব্যক্তির দেওয়া পয়সাগুলো মাটিতে পুঁতে নিয়ম করে রোজ জল দিতেন।

Edited By: অধীর রায় | Updated By: Sep 1, 2020, 04:53 PM IST
অজানা প্রণব: পয়সার গাছ পুঁতে ছিলেন প্রণব, নিয়ম করে জলও দিতেন
ফাইল চিত্র

অধীর রায়

সোমবার প্রয়াত হয়েছেন ভারতীয় সংসদীয় রাজনীতির চাণক্য তথা প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়। রাজনীতিবিদ প্রণব থেকে কীর্ণাহারের প্রণব, তাঁর এই দীর্ঘ জীবনের নানা অজানা গল্প কত মানুষের মনের ভিতর লুকিয়ে রয়েছে। কিছু প্রকাশ্যে এসেছে। কিছু মনের ভিতরেই নিভৃতে যাপন করছে। আজ যখন প্রণব পঞ্চভূতে বিলীন হয়ে গেলেন, সেই গল্পগুলোও মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে বেরিয়ে আসার।  শৈশব, কৈশোর এমনকী যৌবনের গল্পরা ইতিউতি ভিড় করছে। মুখে মুখে ঘুরে বেড়ানো এমনই কিছু গল্প তুলে ধরা হলো এই প্রতিবেদনে।

** স্কুলজীবন

বীরভূমের কীর্ণাহার গ্রাম। ভারতীয় রাজনীতির ক্রাইসিস ম্যানেজারের শৈশব ও কৈশোর কেটেছে এই গ্রামেই। ছোটবেলা থেকেই অসম্ভব পরিশ্রমী ও লক্ষ্যে অবিচল ছিলেন। প্রণবের প্রথম স্কুল ছিল বাড়ি থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে। সেই স্কুলে যাওয়ার সেইরকম কোনও রাস্তা ছিল না। জমির আল দিয়ে প্রতিদিন সাড়ে ৩ কিলোমিটার যেতে হতো। বাকি দেড় কিলোমিটার রাস্তা ছিল। বর্ষাকালে স্কুলে যেতেন গামছা পরে। কারণ সাড়ে তিন কিলোমিটার জল ভেঙে ঝুঁকি নিয়ে স্কুল যেতে হতো তাঁকে। স্কুলে গিয়ে তারপর হাত পা ধুয়ে স্কুলের পোশাক পড়তে হতো। ছাত্রজীবনের অনেকটা সময় এই ১০ কিলোমিটার রাস্তা এইভাবেই যাতায়াত করেছেন ভারতের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি।

প্রণববাবু তাঁর স্মৃতি কথায় বলেছিলেন, তিনি খুব দুষ্টু ছিলেন। অধিকাংশ দিন স্কুল যেতেন না। স্কুলে যাওয়ার নাম করে খেলতে চলে যেতেন। এই খবর একদিন তাঁর মা জানতে পারেন। কিন্তু বকাবকি না করে প্রণবকে মা বুঝিয়ে ছিলেন খেলতে অবশ্যই যাবি, তা বলে পড়াশোনা করবি না কেন? প্রকৃত মানুষ হতে গেলে দুটোই করতে হবে। তারপর নিজেকে শুধরে নিয়েছিলেন তিনি।

** পয়সার গাছের গল্প

তখন খুব ছোট প্রণব। গ্রামের বাড়িতে একজন তাঁকে বেশ কিছু পয়সা দিয়ে বলেছিলেন পয়সার গাছ হলে আর কোন অভাব থাকবে না। তাঁর কথায়, পয়সার গাছ পুঁতে ছিলেন ছোট্ট প্রণব। ওই ব্যক্তির দেওয়া পয়সাগুলো মাটিতে পুঁতে নিয়ম করে রোজ জল দিতেন। আর দেখতেন গাছ হচ্ছে কিনা। ততদিনে ওই ব্যক্তি মাটি খুঁড়ে পয়সা তুলে নিয়েছিল। পরে প্রণববাবু আসল সত্যটা জানতে পারেন। ভাগ্যিস সে দিন বোকা বনে গিয়েছিলেন! সে দিনের সেই শিক্ষাই তাঁকে দেশের হেঁসেল চালাতে সাহায্য করেছিল।

দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে সংসদের দুটো কক্ষেই ছিল তাঁর অবাধ বিচরণ। ৩০ বছর রাজ্যসভার এবং ৮ বছর লোকসভার সাংসদ হয়ে সামলেছেন দেশের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রক। তবে রাজ্যসভার সাংসদ হিসেবেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর দায়িত্ব বেশি সামলেচ্ছেন। লোকসভা নির্বাচনে লড়ার নেপথ্যেও রয়েছে এক অন্য কাহিনি।

** লোকসভার প্রার্থী প্রণব:-

১৯৭৭ এবং ১৯৮০ সালের লোকসভা নির্বাচনে প্রণব মুখোপাধ্যায় পরাজিত হওয়ার পাশাপাশি দেশে কংগ্রেসের ভরাডুবিও হয়। এরপর আর লোকসভার নির্বাচনে লড়াইয়ের সাহস দেখাননি ভারতীয় সংসদীয় রাজনীতির ক্রাইসিস ম্যানেজার। রাজ্যসভার সাংসদ হয়েই সামলেছেন অর্থ, বিদেশ এবং প্রতিরক্ষার মত গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রক। কিন্তু প্রণববাবু ঘনিষ্ট মহল এবং সাংবাদিক বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলে উপলব্ধি করেন রাজ্যসভার সাংসদ হয়ে দেশের মন্ত্রী হওয়া উচিত নয়। দেশের জনগণ তাকে কতটা চাইছে সেটাও পরীক্ষা করা প্রয়োজন। জনগণের রায়ে মন্ত্রী হলে কেন্দ্রে

.