অতিবৃষ্টিতে ডুবল বিহারের কিষাণগঞ্জ স্টেশন
ওয়েব ডেস্ক: অতিবৃষ্টিতে ডুবল বিহারের কিষাণগঞ্জ স্টেশন। জলের তলায় সিগন্যালিং ব্যবস্থা। তার জেরে জলবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ল উত্তরবঙ্গ ও উত্তর পূর্বাঞ্চল। পর পর স্টেশনে দাঁড়িয়ে পড়ল একের পর এক দূরপাল্লার ট্রেন। চূড়ান্ত হয়রানি যাত্রীদের। পুরোটাই প্রাকৃতিক বিপর্যয়? নাকি রয়েছে রেলেরও দায়? দুর্যোগের পূর্বাভাস সত্ত্বেও কেন প্রস্তুতি ছিল না। রেলের কর্মসংস্কৃতির দিকেও উঠছে আঙুল।
অতিবৃষ্টিতে বিপন্ন উত্তরবঙ্গ। লক্ষ লক্ষ মানুষ বানভাসি। এবার রেলপথও হল জলপথ। অতিবৃষ্টির জলে প্রায় ভেসে গেছে বিহারের কিষাণগঞ্জের রেলস্টেশন। উত্তরবঙ্গ তো বটেই, গোটা উত্তর পূর্ব ভারতের সঙ্গে রেল যোগাযোগের এই একটাই রুট। কিষাণগঞ্জের সিগন্যালিং পয়েন্টগুলি ডুবে যাওয়ায় ছিঁড়ে গেল রেলসূত্র।
রাঙাপানিতে দাঁড়িয়ে পড়ে শতাব্দী এক্সপ্রেস। রঙ্গিয়ায় কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস। বারসোইয়ে কামরূপ এক্সপ্রেস। পাহাড়িয়া এক্সপ্রেস দাঁড়িয়ে পড়ে নিমতিতায়। মালদা টাউনে আটকে যায় কাঞ্চনকন্যা ও উত্তরবঙ্গ এক্সপ্রেস। আপ পদাতিক এক্সপ্রেস দাঁড়িয়ে যায় রামপুরহাটে। মুরারইয়ে থমকে যায় দার্জিলিং মেল। হঠাত্ই রেলট্রাফিক থমকে যাওয়ায় স্টেশনে স্টেশনে চূড়ান্ত হয়রানির মুখে পড়েন যাত্রীরা।
পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক ২৪ ঘণ্টাকে জানান, যাত্রীদের যথাসাধ্য স্বাচ্ছন্দ্য দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। বাস্তবে তা হয়নি। বহু অনামী স্টেশনে দাঁড়িয়ে যায় নামী ট্রেন। কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই দেখা যায় জল ও খাবারের সঙ্কট। অসহযোগিতার অভিযোগে, মুরারই ও সাঁইথিয়া স্টেশনে শুরু হয় বিক্ষোভ। শিয়ালদহ থেকে মালদা টাউন পর্যন্ত পূর্ব রেলের অধীনে। আর মালদা টাউন থেকে NJP হয়ে উত্তর পূর্বে গেছে নর্থ ইস্ট ফ্রন্টিয়ার মেল।
প্রশ্ন উঠছে আবহাওয়া দফতর আগাম পূর্বাভাস দেওয়া সত্ত্বেও উত্তরবঙ্গের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে কেন সতর্ক হল না নর্থ ইস্ট ফ্রন্টিয়ার রেল? কিষাণগঞ্জের পরিস্থিতি যে গুরুতর সেই তথ্য কেন পূর্ব রেলের আধিকারিকদের কাছে আগাম জানানো হল না? আগাম তথ্য থাকলে, মাঝপথে আটকে পড়ার হয়রানি থেকে যাত্রীদের বাঁচানো যেত। বলছেন পূর্ব রেলের কর্তারা। এখন জরুরিভিত্তিতে ব্যবস্থা নিয়েছেন তাঁরা।
উত্তরবঙ্গ থেকে কলকাতা মুখী সবকটি ট্রেন দিনের মতো স্থগিত রাখা হয়েছে। উত্তরবঙ্গগামী যেসব ট্রেন বিভিন্ন স্টেশনে আটকে পড়ে সেগুলিতে শিয়ালদহ ও কলকাতা স্টেশনে ফিরিয়ে আনা হয়। রবিবার উত্তরবঙ্গগামী যেসব ট্রেন শিয়ালদহ ও কলকাতা থেকে ছাড়ার কথা ছিল সেগুলিও স্থগিত রাখা হয়েছে। সোমবার সকালে পরিস্থিতি দেখে উত্তরবঙ্গগামী ট্রেনগুলি ছাড়া হবে বলে পূর্বরেল সূত্রে খবর ।তবে শিগগিরই যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে এমন আশাও করা যাচ্ছে না। কারণ আগামী দুদিন উত্তরবঙ্গে আরও বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়ে রেখেছে আবহাওয়া দফতর।