ইয়াকুবই কেন? কীভাবে ছাড়া পেল বাকি পরিবার? কারা এই মেমনরা?

কয়েক ঘণ্টা আগেই মৃত্যু হয়েছে ইয়াকুব মেমনের। ১৯৯৩ মুম্বই ধারাবাহিক বিস্ফোরণের অপরাধীদের মধ্যে একমাত্র ইয়াকুবেরই জীবন শেষ হয়েছে ফাঁসি কাঠে। মুম্বইয়ের অভিজাত মেমন পরিবারের সন্তান ইয়াকুব কোথায় বসে করেছিলেন বিস্ফোরণের পরিকল্পনা? কী ছিল পরিবারের অবদান? দেখে নেওয়া যাক মেমন পরিবারের ইতিহাস।

Updated By: Jul 30, 2015, 06:33 PM IST
ইয়াকুবই কেন? কীভাবে ছাড়া পেল বাকি পরিবার? কারা এই মেমনরা?

ওয়েব ডেস্ক: কয়েক ঘণ্টা আগেই মৃত্যু হয়েছে ইয়াকুব মেমনের। ১৯৯৩ মুম্বই ধারাবাহিক বিস্ফোরণের অপরাধীদের মধ্যে একমাত্র ইয়াকুবেরই জীবন শেষ হয়েছে ফাঁসি কাঠে। মুম্বইয়ের অভিজাত মেমন পরিবারের সন্তান ইয়াকুব কোথায় বসে করেছিলেন বিস্ফোরণের পরিকল্পনা? কী ছিল পরিবারের অবদান? দেখে নেওয়া যাক মেমন পরিবারের ইতিহাস।

মুম্বইয়ের মাহিমে মাখদুম শাহ বাবা দরগার কাছে আল-হোসেন বহুতলে থাকতেন ইয়াকুবের বাবা মা আবদুল রাজাক ও হানিফা মেমন। এই আট তলা বাড়িতে বসেই নাশকতার ছক কষেছিলেন মুস্তাক টাইগার মেমন ও দাউদ ইব্রাহিম। আল হুসেনি বিল্ডিংয়ে গ্যারেজে বিভিন্ন গাড়ি ও স্কুটারে আরডিএক্স রেখেছিল টাইগারের লোকেরা।

এই বিল্ডিংয়ের দ্বিতলে একটি ফ্ল্যাট রয়েছে সদ্যমৃত ইয়াকুবের। কীভাবে ছাড়া পেলেন মেমন পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা?

আবদুল রাজাক মেমন-মুম্বই লিগে খেলার সময় নবাব পতৌদির নামানুসারে 'টাইগার' বলে ডাকা হতো তাকে। ১৯৯৪ সালে মেমন পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে বিদেশ থেকে ফেরার পরই গ্রেফতার হন তিনি। জেলে অসুস্থ হয়ে পড়েন, কয়েক বছর পর জামিনও পেয়ে যান। অবশেষে ২০০১ সালে ৭৩ বছর বয়সে মারা যান তিনি।

হানিফা মেমন-বিস্ফোরণের মূলচক্রী টাইগার ও তার বন্ধুদের আশ্রয় দেওয়ার অপরাধে গ্রেফতার হন হানিফা। কয়েকবছর পর প্রমাণের অভাবে তার জামিন মঞ্জুর করে টাডা আদালত।

মুস্তাক মেমেন ওরফে টাইগার-টাইগারের মাধ্যমে ভারতে ব্যবসা চালাতেন দাউদ ইব্রাহিম। বিস্ফোরণের আগের দিন দুবাই পালিয়ে যান টাইগার। সেখান থেকে যান পাকিস্তান। পুলিসের অনুমান পাকিস্তানেই দাউদের সঙ্গে লুকিয়ে রয়েছেন ভারতের মোস্ট ওয়ান্টেড অপরাধী। বাবরি মসজিদ ধ্বংসের জবাবে দাউদের সঙ্গে মুম্বই বিস্ফোরণের ছক কষেছিলেন টাইগার।

ইয়াকুব মেমন-টাইগার মেমনের ব্যবসা সহ গোটা পরিবারের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের খেয়াল রাখতেন পেশায় চাটার্ড অ্যাকাউট্যান্ট ইয়াকুব। টাডা আদালতের তথ্য অনুযায়ী বিস্ফোরণে অপরাধীদের দুবাই হয়ে পাকিস্তানে যাওয়ার টিকিট করে দিয়েছিলেন ইয়াকুবই। ১৯৯৪ সালে গ্রেফতার হন ইয়াকুব। ২০০৬ সালে তাকে দোষী সব্যস্ত করে টাডা আদালত। ২০০৭ সালের ২৭ জুলাই তাকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা শোনায় টাডা আদালত। ২০১৩ সালের মার্চ মাসে মৃত্যুদণ্ডের সাজা বহাল রাখে শীর্ষ আদালত। ২০১৪ সালে তার প্রাণভিক্ষার আর্জি খারিজ করে দেন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি। ২০১৫ সালের ১০ এপ্রিল আর্জি খারিজ হয়ে যায় সুপ্রিম কোর্টেও। ২৯ এপ্রিল তার মৃত্যুদণ্ডের দিন ধার্য করে টাডা আদালত।

সুলেমন মেমন-ভাল ব্যবহার ও দরিয়া দিলের জন্য সকলের কাছে জনপ্রিয় ছিলেন ইয়াকুবের ভাই সুলেমন। বিস্ফোরণ ঘটাতে সাহায্য করার অপরাধে ১৯৯৪ সালে পরিবারের বাকি সদস্যদের সঙ্গে গ্রেফতার হন সুলেমনও। প্রমাণের অভাবে জামিন পান তিনি।

রাহিন মেমন-স্বামীর সঙ্গেই গ্রেফতার হয়েছিলেন ইয়াকুবের স্ত্রী রাহিনও। প্রমাণের অভাবে ২০০৬ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ছাড়া পেয়ে যান তিনি।

রুবিনা মেমন-বিস্ফোরণে ব্যবহৃত মারুতি ভ্যান নথিভুক্ত ছিল রুবিনার নামে। তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা শোনায় টাডা আদালত। ওরলিতে থেকে উদ্ধার হওয়া মারুতি ভ্যানে মিলেছিল একে-৫৬ রাইফেল ও গ্রেনেড। রুবিনা আদালতে জানান পরিবারের কিছু সম্পত্তি তার নামে থাকা মানেই বিস্ফোরণে তিনি যুক্ত ছিলেন তা প্রমাণ হয় না।

ইসা মেমন-গোটা পরিবারের সঙ্গে গ্রেফতার হয়েছিলেন টাইগারের অন্য ভাই ইসাও। টাডা আদালতে দোষী সব্যস্ত হন তিনি। আপাতত ঔরঙ্গাবাদ জেলে যাবজ্জীবন সাজা খাটছেন তিনি।

ইউসুফ মেমন-টাইগার মেমনের অন্য ভাই ইউসুফও গ্রেফতার হন পরিবারের সঙ্গেই। টাডা অদালতে দোষী সব্যস্ত হয়ে ঔরঙ্গাবাদ জেলে যাবজ্জীবন সাজা খাটছেন ইউসুফও। স্কিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত তিনি।

আয়ুব মেমন-ঘটনার পর থেকেই ফেরার আবদুল রাজাক-হানিফার সবথেকে বড় ছেলে আয়ুব। পুলিসের অনুমান তিনিও টাইগারের সঙ্গে পাকিস্তানে রয়েছেন।

 

 

.