পুজোর ব্যোমকেশ ও ব্যোমকেশ-পুজো

Updated By: Sep 27, 2016, 10:27 PM IST
পুজোর ব্যোমকেশ ও ব্যোমকেশ-পুজো

শর্মিলা মাইতি

প্রতি পুজোয় ব্যোমকেশ আসছেন। চোখে কালো ফ্রেমের চশমা, পরণে সাধা ধুতি চাদর। যতই এগিয়ে যাক প্রযুক্তি-ফেসবুক-টুইটার-জিও, ব্যোমকেশের স্পেস-টাইম ফ্রেম জিতেই চলেছে। নেপথ্যের সত্যানুসন্ধানে ফিল্ম সমালোচক শর্মিলা মাইতি

ফি-বছর আমাদের বাংলা ইন্ডাস্ট্রিতে ব্যোমকেশ আসছেন পুজোতে। সাদা ধুতিপাঞ্জাবি গায়ে চাদর। বাঙালি ভিড় জমাচ্ছেন সিনেমাহলে। প্রযুক্তির দৌড়ে সিনেমাহলে ছবি দেখাটা নেহাত কালেভদ্রে ঘটে, সেই অভ্যেসটা জিইয়ে রাখতেই তিনি আসেন। অন্তত প্রযোজকের লক্ষ্মী ফেরতের স্বপ্নটা পুব আকাশে দেখাতে পারেন ইনি।

বাড়িয়ে বলার কিছু নেই। গত বছর ইনিই প্রাণপ্রতিষ্ঠা করেছিলেন বহুদিন ধরে লড়তে থাকা এক সুপুরুষ নায়কের। নাম যিশু সেনগুপ্ত। নন্দিতা-শিবপ্রসাদের বেলাশেষের পর যিশুর ব্যোমকেশই সবচেয়ে বেশি ব্যবসা দিয়েছিল ইন্ডাস্ট্রিকে।

যে সময়ে শরদিন্দু কলমকারুশিল্প শুরু করেছিলেন, সে সময়ে সবেমাত্র লেখ্য এবং কথ্য ভাষার মাঝের দেওয়ালটা ভাঙতে শুরু করেছে। সাধুর গাম্ভীর্য আর চলিতের ঔদার্য থাকবে, অথচ এমন স্মার্ট আধুনিক হবে যাতে ছেলে-বুড়ো সবাই যোগদান করতে পারে। পড়তে পড়তে জোর করে গভীরে ঢুকতে হবে না, অজান্তেই হয়ে পাঠক হয়ে উঠবেন একান্ত আপন। এমন লেখকের মস্তিষ্ক থেকেই যে ব্যোমকেশ বেরবেন, তাতে আর বিচিত্র কী?

একবাক্যে বাঙালি যেন ঠিক বাঙালি গোয়েন্দা পাচ্ছিলেন না, যিনি ধুতি-চাদর গায়ে দেবেন, কিন্তু পোশাকের অনাড়ম্বরই অলঙ্কৃত করবে তাঁর ধীশক্তিকে। বুদ্ধিবৃত্তিকে। দুই মলাটের ভেতর পাওয়া যাবে এমন এক পুরুষকে, যাকে উচ্ছ্বাসে বরণ করে নিতে কারওর কোনও দ্বিধা থাকবে না। যে দিন একটি প্রকাশনা সংস্থা থেকে ব্যোমকেশ প্রথম খণ্ড বের হয়েছিল, বিজ্ঞাপন ছাড়াই সে বাজারে বিক্রি হয়েছিল হটকেকের মতো। এই পুজোয় বাংলা ছবির উত্সব সমারোহে, প্রায় বিনা প্রমোশনেই নজর কাড়ছেন যে শালপ্রাংশু মহাভুজ রথী, তিনিই ব্যোমকেশ। সেই সাফল্যের ইতিহাসের ট্রাডিশন এখনও চলছে। বয়ে গেছে সময়। হয়েছে কত রক্তপাতবর্জিত ইগোর লড়াই। তবু সিনেমার রাজত্বে ব্যোমকেশ জিতেই চলেছেন, জিতেই চলেছেন।  

রহস্যের গন্ধ যাঁকে টানে। এর আগেও আমাদের কাছে গোয়েন্দা ছিলেন প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য। ব্যোমকেশ বক্‌সী ত্রিশের দশকে এক বুদ্ধিমান বাঙালী তরুণ। নেশায় ডিটেকটিভ। আমাদের সঙ্গে তার পরিচয় "সত্যান্বেষী"-তে। পিতৃস্বত্ত্বভোগী, কলকাতার মেসের বাসিন্দা সাহিত্যান্বেষী অজিতের সঙ্গে রুমমেট হয়ে ব্যোমকেশের পরিচয়। ব্যোমকেশ তখন অতুল মিত্র ছদ্মনামে। রহস্যভেদের সূত্রে অজিত আর ব্যোমকেশের মধ্যে এক আত্মীয়তার সম্পর্ক। যে সম্পর্ক শিল্পীর সঙ্গে শিল্পের। যে রোমান্টিকতা স্রষ্টার সঙ্গে সৃষ্ট-র। একজনের মস্তিষ্ক খুঁজে বেড়ায় সত্য। অন্যজনের সত্তা খোঁজে সাহিত্যের উপকরণ। ব্যোমকেশের কীর্তির কাহিনীকার হন অজিত। শার্লক হোম্‌সের যেমন ওয়াটসন।মিস মার্পলের যেমন রেমন্ড ওয়েস্ট। দোসর ফেলুদার যেমন লালমোহনবাবু। মোটের উপর, এই দুই চরিত্র যেন শরদিন্দুর ডান ও বাম মস্তিষ্কগোলার্ধ। দুজনেই সমানতালে এগিয়ে চলেছে।

এই বাঙালিত্বের ঘ্রাণই বোধহয় প্রতি পুজোয় এক ব্যোমকেশকে উপহার দেয়। সে যিশু সেনগুপ্তই হোক বা আবীর চট্টোপাধ্যায়। এই দুজনের নাম বললাম কারণ বাঙালি হৃদয়ে সঠিক সত্যানুসন্ধানের বীজটা এঁরাই পুঁতেছিলেন। আর সেই দিক থেকে শরদিন্দুর সঠিক বেত্তা অবশ্যই অঞ্জন দত্ত। আবীরকে আবিষ্কার করার পেছনে তাঁরই উদার হস্ত। এর আগে অবধি আবীর আম-অভিনেতার মতোই নানা ছবিতে চরিত্রের খোলসে ঢুকতেন বেরোতেন। একইভাবে যিশুর কেরিয়ারের ভাগ্যোদয়ের নেপথ্যেও কিন্তু ওই ব্যোমকেশ। এককথায় ফেলুদা-অনুগামীরা আরও এক প্রতিদ্বন্দ্বীকে পেয়েছিলেন কিন্তু এঁদের হাত ধরেই।

জনপ্রিয়তার নিরিখে অনেকটাই ব্রাত্য থেকে গেলেও বাংলা টেলিভিশনে ব্যোমকেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ ঘটে সুদীপ মুখোপাধ্যায়ের। তখনও মেগাসিরিয়াল কনসেপ্ট আসেনি। এবং শিক্ষিত মধ্যবিত্ত বাঙালির বুকর‌্যাকে সত্যজিত্ সমগ্রর পেছনে ঠাঁই পেয়েছিল শরদিন্দু অমনিবাস। হিন্দি সিরিয়ালে ব্যোমকেশ বক্সীর জনপ্রিয়তা প্রমাণ করে দেন এক অবাঙালি ভদ্রলোক, নাম রজত কাপুর। এখনও যিশু ও আবীর, দুজনকেই বলতে শুনি, ব্যোমকেশ বললেই য়ে চেহারাটা ভেসে ওঠে চোখের সামনে, সেটা রাজিত কাপুরেরই। আর এজন্য অবশ্যই আমরা চিরঋণী হৃষীকেশ মুখার্জির কাছে।

ব্যোমকেশ মিতভাষী। শিক্ষিত, মেধাবী, তীক্ষ্ণদৃষ্টি, সহৃদয়। সত্যান্বেষী খেতাবটা ডিটেকটিভের বিকল্প, ব্যোমকেশের নিজস্ব আবিষ্কার। আম বাঙালি ষুবকের মতো সে-ও প্রেমে পড়ে। অর্থনমর্থম কাহিনিতে শরদিন্দু তাঁকে সত্যবতীর সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ করলেনও। কারণ অকাট্য। বেচারা ব্যোমকেশ প্রেমে পড়ে গেল! আবার সজাগ যুক্তিতে শরদিন্দু এ-ও বলেছেন যে, বিয়ে হলে বাঙালীর ছেলের আর পদার্থ থাকে না, তাই ব্যোমকেশকে তখনই রিটায়ার করিয়ে দিয়েছিলাম"। বুঝুন ব্যাপারটা! এমন জায়গায় কলম থামালে তো আমাদের দর্শকমহল কত আকর্ষণীয় এক পুরুষের সান্নিধ্য থেকে বঞ্চিত হত! আসলে স্রষ্টা খানিক লিভ চেয়েছিলেন। একঘেয়েমি কাটানোর জন্য। মুম্বই গিয়ে চিত্রনাট্য চর্চা শুরু করেন। ব্যোমকেশ-অজিত ও তাদের পরিবার তখন তাঁর মনন থেকে উধাও হয়ে গিয়েছিল। মুম্বই থেকে ফিরে আসার পর পরিমল গোস্বামীর বাড়ীর ছেলেমেয়েরা তাঁর কাছে অভিযোগ করেন। কেন আপনি আর ব্যোমকেশকে নিয়ে লিখছেন না? বোধহয় শরদিন্দু তখন বুঝেছিলেন, ব্যোমকেশের জনপ্রিয়তার উচ্চতা। তারই ফলস্বরূপ, একাদশ কাহিনী "চিত্রচোর"-তে ব্যোমকেশকে ফেরৎ এনেছেন। সে গল্পে পত্নী সত্যবতীও উপস্থিত। বাঙালীর বিবাহোত্তর অধঃপতন সম্পর্কে শরদিন্দুর ধারণা যে ভুল হতে পারে, ব্যোমকেশকে দিয়ে তা বুঝতে পেরে তিনি তাকে নিয়ে আরো বাইশটি কাহিনি লেখেন। লোহার বিস্কুট গল্পে এসে শেষ হয়। শজারুর কাঁটা কাহিনিতে বৃদ্ধ ব্যোমকেশেরও দেখা মেলে।

এই সবকটি চরিত্রই কিন্তু চলচ্চিত্রায়িত। চলমান মিডিয়ায় ব্যোমকেশ বহরে ও কলেবরে ছাড়িয়ে গিয়েছেন ফেলুদাকেও। অন্য সব গোয়েন্দাদেরও। যদিও ব্যোমকেশের জন্ম কিন্তু কোনও দেশি গোয়েন্দার আদলে নয়। আগাথা ক্রিস্টি ও আর্থার কোনান ডয়েলের অসম্ভব গুণমুগ্ধ ভক্ত ছিলেন শরদিন্দু। টেকনিকটা আয়ত্ত করার পর তিনি বঙ্গীকরণ করতে চাননি নীহাররঞ্জন গুপ্তের মতো। তিনি নির্মাণ করলেন রক্তমাংসের সত্যান্বেষীকে। যে দুষ্টের দমন করে না। দুর্নীতিপরায়ণতার কারণ খোঁজেন। অনেকটাই সাইকোলজিস্টের মতো ডুব দেন দুর্বৃত্তের মস্তিষ্কের সমুদ্রে।

ব্যোমকেশ নিজে যেমন অসাধারণ, নামটির মধ্যেও তেমনি যেন অসাধারণত্ব থাকে। তাঁর বাবাও ছিলেন বড়ো ম্যাথামেটিসিয়ান। মা বৈষ্ণব বংশের মেয়ে। এই দুয়ের সংমিশ্রণে ব্যোমকেশের অঙ্কটা খুব স্ট্রং। বাঙালি মধ্যবিত্ত অঙ্কটাই আগে ভাল করে শেখে। জীবনের দরজাটা যাতে খুলে যায়, কেউ যেন ঠকাতে না পারে। তাই তো শেয়ার কেনা-বেচার শখেও বাঙালি এগিয়ে। সে যা-ই হোক। কলেজে প্রোফেসররা ব্যোমকেশকে নাকি bomb-case বলে ডাকতেন ("আদিম রিপু")। আসলে ব্যোমকেশের যা চিন্তাভাবনার মধ্যে শরদিন্দু নিজেকেই ছড়িয়ে দিয়েছেন। ব্যোমকেশ দৈহিক শক্তিপ্রয়োগ, গুলিগোলা-- এসব পছন্দ করে না। যে সব ব্যাপারে প্রাণসংশয় হতে পারে সে সবও তার পছন্দ নয়, অবশ্য সবসময়ে সেটা তার ইচ্ছে অনিচ্ছের ওপর নির্ভর করে না। শরদিন্দু বলছেন, "আমার মেজাজের সঙ্গে গুলিগোলা খাপ খায় না। তাছাড়া গোয়েন্দা কাহিনীকে আমি ইনটেলেকচুয়াল লেভেলে রেখে দিতে চাই।"

অবসর পত্রিকায় সাহিত্যিক সুমিত রায় লিখেছেন- সাতবার ব্যোমকেশকে ঘুষোঘুষি বা গোলাগুলির চক্করে পা দিতে হয়েছে, তিন বার অজিতকেও জড়িয়ে ফেলতে হয়েছে। ব্যোমকেশের ইচ্ছে মতো যদি সব করা যেতো তাহলে ও বোধহয় বৈঠকখানায় বসে শুধু বুদ্ধি খাটিয়েই সব রহস্যের কিনারা করে ফেলতো। তবে দরকার হলে, অর্থাৎ তথ্য সংগ্রহের জন্য অকুস্থল তো বটেই, আরো এদিক ওদিক যাওয়া, নানা লোকের সঙ্গে কথা বলা, ছদ্মবেশ ধারণ-- এসব কাজে তার কোনো শৈথিল্য কিন্তু আমরা দেখি না। আমাদের বিশেষ সৌভাগ্য যে শরদিন্দু তার একহাতে টর্চ, একহাতে পিস্তল ধরিয়ে জলের পাইপ বেয়ে ওঠাননি। শরদিন্দুর রহস্য কাহিনী সাধারণত বেশ ঠাসা বুনুনির, অনেক চরিত্র আনেন না, ছোটো গল্পে তো নয়ই। গল্প শেষও করেন নিপুণভাবে, সব আলগা সূত্র গুছিয়ে বেঁধে দিয়ে। ঘটনার যাথার্থ্য বোঝাবার জন্য যতোটা প্রাক্‌কথন দরকার ততোটুকুই রাখেন। ভুল সূত্রের, red herring সরাসরি ব্যবহার নেই বললেই হয় ("চোরাবালি'" গল্পে সরকারের ব্যাপারটা ব্যতিক্রম, আরো দুয়েকটা ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে)। শরদিন্দুর গল্প ছোটো ছোটো প্রায় অদৃশ্য সূত্র খুব মুন্সিয়ানার সঙ্গে আবছাভাবে দেখিয়ে তার অমোঘ পরিণামের দিকে এগিয়ে যায়, শ্লথতা নেই তাতে। একটু ভুল বলা হলো, মাঝে মাঝে ব্যোমকেশের দাম্পত্যজীবনের কিছু ছবি ঝলক দিয়ে যায়, কিন্তু তা সাধারণত এতো মধুর -- কম কথায় মধুর প্রেমের আভাস দেওয়া শরদিন্দুর রচনাশৈলীর একটা বৈশিষ্ট্য -- যে তা সামান্য বিক্ষেপ ঘটালেও তা কমিক রিলিফ মাত্র, তার বিপক্ষে নালিশ চলে না।

অত্যন্ত মনোযোগী এক দৃষ্টিকোণ থেকে ব্যোমকেশকে দেখেছেন এই সাহিত্যিক। এক জায়গায় লিখেছেন- (অপরিবর্তিত উদ্ধৃতি)

ব্যোমকেশের সব গল্প মেলালে আমরা দেখি যে পুলিশ প্রায় সবরকমভাবেই এসেছে-- সে সহপাঠী বন্ধু, বর্তমান পুলিশ ইন্‌স্পেক্টর এ কে রে ("মগ্নমৈনাক") অথবা বাল্যবন্ধু বর্তমান ডি এস্‌ পি শশাঙ্ক বাবু (ব্যোমকেশ ও বরদা) থেকে শুরু করে সপ্রশংস সহযোগী পুরন্দর পাণ্ডে (চিত্রচোর ও অন্যান্য) বা অসহনীয় আত্মম্ভরি বিধুবাবু (অর্থমনর্থম) পর্যন্ত। এর মধ্যে তো শশাঙ্কবাবুর সঙ্গে মতান্তর দীর্ঘস্থায়ী মনান্তরে পৌঁছে যেতে চলেছিলো। কাজেই পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রচলিত রহস্যকাহিনীর সঙ্গে ব্যোমকেশের কাহিনীর খুব একটা তফাৎ দেখা যাবে না। রহস্যকাহিনীর আর একটা বৈশিষ্ট্য হলো গোয়েন্দার ছদ্মবেশ ধারণ, গোয়েন্দা হতে গেলে এই কর্মে কুশলী হওয়াটা অপরিহার্য, তবে এ ভাঁওতাটা বেশী ব্যবহার করা যায়না। ব্যোমকেশও ব্যতিক্রম নয়, যদিও শরদিন্দু চিত্রজগতের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, মেকআপের ব্যাপারটা ভালো করেই জানতেন, তবুও তিন বারের বেশী ব্যোমকেশকে ছদ্মবেশ ধরাননি। "চিড়িয়াখানা" উপন্যাসের চলচ্চিত্র রূপ দেবার সময় পরিচালক এই সংযম দেখালে ভালো করতেন বলে আমাদের বিশ্বাস। অর্থাৎ ছদ্মবেশের ব্যাপারেও ব্যোমকেশ ব্যতিক্রম নয়। এ ছাড়া কোনো বিশেষ চরিত্রের কার্যকলাপের ওপর নজর রাখা বা বিশেষ কিছু খবর বার করার জন্য ছায়া-সহকারী ব্যবহার করার চল আছে গোয়েন্দাজগতে, যেমন হোম্‌সের বেকার স্ট্রীট ইরেগুলার্স। শরদিন্দু ব্যোমকেশকে তার থেকে বঞ্চিত করেননি, বিকাশ দত্ত প্রমুখ সহযোগীরা মাঝে মাঝেই ব্যোমকেশের আহ্বানে সাড়া দিয়ে এসে কাহিনীতে প্রয়োজনীয় তথ্য সরবরাহ করে গেছে।“

ব্যোমকেশ শাস্তি দিতে চায় না। সূত্র খোঁজে। অপরাধী তার কাছে পৃথিবীর সবচেয়ে খারাপ লোক নয়। অপরাধের পরিবেশ আর গুরুত্ব, অপরাধীর চরিত্র, আইনের সম্ভাব্য গতি, এসব বিচার করে নিজেই শাস্তির মাত্রা ধার্য করে। বিশেষ করে, তা যদি কোনো পাপের প্রতিহিংসা হিসেবে এসে থাকে তাহলে ব্যোমকেশ হত্যাকারীকে আইনের হাত এড়িয়ে পালিয়ে যাবার সুযোগ দেয়।

স্বল্প পরিসরে আরও অনেকের কথা বলা হল না। শজারুর কাঁটা-য় যে ধৃতিমানকে দেখেছিলাম, নাঃ মনে দাগ কাটেনি একেবারেই। নবীনের কাছে চ্যালেঞ্জে অনেকটাই পশ্চাত্পদ তিনি। বাঙালি মনে ব্যোমকেশ যে পুজোতেই ফিরে ফিরে আসবেন, তার একটাই কারণ। ব্যোমকেশকে যৌবনেই আবদ্ধ করে রাখতে চায় বাঙালি। তার দৃপ্ততায়, তার বুদ্ধিমত্তায় বাঙালি পায় জয়ের স্বাদ। বিজয়োত্সবের স্বাদ।

যত ছবিই মুক্তি পাক না কেন, যেমনই হোক প্রমোশনাল স্ট্র্যাটেজি। ব্যোমকেশ একাই বক্স অফিস! ব্যোমকেশ একাই একটা ইন্ডাস্ট্রি।

.