Exclusive, Junior Wimbledon: ঘাসের কোর্টে দাপট দেখাতে যাচ্ছেন প্রথম বঙ্গতনয়া ঐশী দাস
আগামী ২ জুলাই থেকে শুরু হবে জুনিয়র উইম্বল্ডন। ব্যক্তিগত ফিটনেস ট্রেনারকে নিয়েই ইংল্যান্ডে উড়ে যাবেন এই বঙ্গ তনয়া। শুরু হবে তাঁর নতুন লড়াই। আইডল রজার ফেডেরারকে সামনে রেখেই এগিয়ে যেতে চান ঐশী।
সব্যসাচী বাগচী
বিশ্ব ক্রীড়া জগতে পা রাখতে চলেছেন আর এক বাঙালি। নাম ঐশী দাস (Aishi Das)। ১৪ বছরের ঐশী আসন্ন জুনিয়র উইম্বল্ডনে (Junior Wimbledon) নামতে চলেছেন। ঐশীর জন্ম নিউজিল্যান্ডের (New Zealand) অকল্যান্ডে। বাংলা ভাষা এখনও রপ্ত করতে পারেননি। কিন্তু তাতে কি! ওঁর বাবা-মার শরীরে বইছে বাঙালির রক্ত। বাবা বিজন দাসের জন্ম পঞ্জাবে। মা অর্পিতা দাস জামশেদপুরে বেড়ে উঠেছেন। সেই সুবাদে ঐশীর পরিবারের পরতে পরতে রয়েছে বাঙালিয়ানা।
টেনিসের প্রতি প্যাশন ছোটবেলা থেকেই ছিল। মাত্র ছয় বছর বয়সেই হাতে তুলে নিয়েছিলেন র্যাকেট। নিজের দেশ ও অস্ট্রেলিয়াতে গিয়ে একাধিক জুনিয়র প্রতিযোগিতা খেলার পরেই টেনিস নিউজিল্যান্ডের কর্তাদের নজরে চলে আসেন দশম শ্রেণির ছাত্রী। গত বছর ক্যালোডেরিয়াতে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পরেই চলে আসে জুনিয়র উইম্বল্ডনে নামার সুযোগ।
গত বছর জুনিয়র উইম্বল্ডন জিতে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন আমেরিকা নিবাসী বঙ্গ তনয় সমীর বন্দ্যোপাধ্যায় (Samir Banerjee)। এ বার দ্বিতীয় বাঙালি ও প্রথম বঙ্গ তনয়া হিসেবে এই গ্রান্ডস্ল্যাম খেলতে নামছেন অকল্যান্ডের গর্ব। প্রথম বার জুনিয়র উইম্বল্ডন খেলতে নামার অনুভূতি কেমন জি ২৪ ঘণ্টাকে এক্সক্লুসিভ সাক্ষতকারে জানালেন ঐশী।
ঐশী বলেন, "এই মুহূর্তের জন্য এত বছর ধরে পরিশ্রম করছিলাম। উইম্বল্ডন একেবারে প্রথমসারির প্রতিযোগিতা। অনেক ইতিহাস জড়িয়ে আছে উইম্বল্ডনকে ঘিরে। সেখানে আমি খেলতে নামব, ভাবলেই দারুণ অনুভূতি দিচ্ছে। এখন শুধু ইংল্যান্ডে উড়ে গিয়ে উইম্বল্ডন খেলার অপেক্ষায় রয়েছি। এবং আমি নিজেকে উজাড় করে দিয়ে এই প্রতিযোগিতা জিততে চাই।"
বাবা বিজন দাস একটা সময় পঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়ের হয়ে ক্রিকেট খেলতেন। একমাত্র ছেলে অনিরুদ্ধও অকল্যান্ড অনূর্ধ্ব-১৭ দলের অধিনায়কত্ব করেছেন। কিন্তু কীভাবে শুরু হল টেনিসের পাঠ? এবং জুনিয়র উইম্বল্ডন জেতার সুযোগ কতটা? সেটাই টেলিফোনে জানালেন বিজন দাস।
তিনি বলছিলেন, "ওর যখন ছয় বছর বয়স ছিল, তখন থেকে টেনিস পাঠ নিচ্ছে। আমি একদিন মেয়ের সঙ্গে খেলা শুরু করে দিয়েছিলাম। সেখান থেকে শুধু নিজের চেষ্টায় এতদূর এসেছে। জুনিয়র উইম্বল্ডনে খেলতে নামার আগে নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়াতে ঐশী একাধিক প্রতিযোগিতা জিতেছে। এরমধ্যে ছিল গত বছর ক্যালোডেরিয়াতে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য জুনিয়র উইম্বল্ডনে খেলার সুযোগ চলে এল। তবে এখানেই থামলে চলবে না। কারণ ওর যাত্রা সবে শুরু হল।"
আগামী ২ জুলাই থেকে শুরু হবে জুনিয়র উইম্বল্ডন। ব্যক্তিগত ফিটনেস ট্রেনারকে নিয়েই ইংল্যান্ডে উড়ে যাবেন এই বঙ্গ তনয়া। শুরু হবে তাঁর নতুন লড়াই। আইডল রজার ফেডেরারকে সামনে রেখেই এগিয়ে যেতে চান ঐশী।
বঙ্গতনয়া যোগ করলেন, "টেনিস জগতে অনেক তারকা আছেন। তবে আমার প্রথম ও শেষ পছন্দ রজার ফেডেরার। কারণ উনি শুধু একজন লেজেন্ড নন। উনি দারুণ মনের মানুষ। আর সেটাই আমাকে আরও মুগ্ধ করেছে। ওঁর দেখেই ভবিষ্যতে এগিয়ে যেতে চাই।"
কেরিয়ারের প্রথম গ্রান্ডস্ল্যামে নামলেও, বাবা-মাকে কাছে পাবেন না ঐশী। সেটা নিয়ে ওঁর পরিবারেরও আক্ষেপ আছে। যদিও সেটা ঐশীর সামনে প্রকাশ করতে চান না মা অর্পিতা। বরং মেয়ের আত্মবিশ্বাস ও প্যাশনকে গুরুত্ব দিতে চান তিনি।
ঐশী বাড়িতে থাকলে ওর জন্য পনীরের বিভিন্ন পদ রান্না করতেই হবে। এছাড়া জিরা রাইস, আমের চাটনি তো আছেই। সেই মেয়েকে কয়েক সপ্তহের জন্য কাছে পাবেন না অর্পিতা। তবে মেয়ের কাছে না থাকলেও এই কিশোরীর উন্নতি চাইছেন। সেটাই অবশ্য স্বাভাবিক। অর্পিতার প্রতিক্রিয়া, "আসলে খেলায় সাফল্য পেতে গেলে শুধু ভাল খেললেই চলবে না। খেলাকে প্রতি মুহূর্তে এনজয় করতে হবে। সেটাই ওকে শিখিয়েছি। ঈশ্বরের কাছে একটাই প্রার্থনা ঐশী যেন এ বার নিজের যোগ্যতা অনুসারে খেলতে পারে। সেটাই আমার কাছে যথেষ্ট।"
অপেক্ষার প্রহর গুনছেন ঐশীও। জুনিয়র উইম্বল্ডনে অভিষেক ঘটিয়েই ট্রফি হাতে তুলতে চান। যেমনটা গত বছর প্রথমবার কোর্টে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন আর এক বঙ্গ সন্তান সমীর।
কারণ ওঁর লক্ষ্য যে বড়দের মহড়া নেওয়া। মনেপ্রাণে এখন থেকেই সেই স্বপ্ন দেখতে শুরু করে দিয়েছেন এই কিশোরী।
আরও পড়ুন: Bhuvneshwar Kumar: আখতারকে ছাপিয়ে গেলেন ভুবি, বল করলেন ঘণ্টায় ২০৮ কিমি গতিতে!
আরও পড়ুন: Hardik Pandya, Ireland vs India: কেন ওপেন করেননি রুতুরাজ? কারণ জানালেন হার্দিক