Bhaichung Bhutia : ফের ফেডারেশনের বিরুদ্ধে বিস্ফোরণ ঘটালেন 'পাহাড়ি বিছে', জবাব দিলেন সভাপতি কল্যাণ
Bhaichung Bhutia : গত ২ সেপ্টেম্বর ফেডারেশনের সভাপতি নির্বাচনে কল্যাণ চৌবের বিরুদ্ধে লড়েন বাইচুং। ১-৩৩ ব্যবধানে হেরে যান। বাইচুংকে সমর্থন করার পরেও সরে আসে রাজস্থান ফুটবল সংস্থা।
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: ফের একবার গর্জে উঠলেন বাইচুং ভুটিয়া (Bhaichung Bhutia)। কল্যাণ চৌবে (Kalyan Chaubey) সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের (All India Football Federation) সভাপতি (AIFF President) পদে বসার পরেই তাঁর ডেপুটি হয়ে চেয়ারে বসেছেন শাজি প্রভাকরণ (Shaji Prabhakaran)। এই মুহূর্তে এআইএফএফ-এর (AIFF) সেক্রেটারি জেনারেলের পদে রয়েছেন শাজি। এ বার এহেন শাজির নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিলেন ভারতীয় ফুটবলের আইকন। ফুটবল হাউসের সভাপতিকে চিঠি লিখে প্রশ্ন তুলে দিলেন 'পাহাড়ি বিছে'। ভারতের প্রাক্তন অধিনায়কের দাবি শাজির নিয়োগে নিরপেক্ষতার অভাব রয়েছে। তাই নতুন করে বিজ্ঞাপন দিয়ে নিয়োগ করা যেতে পারে বলে পরামর্শ দিয়েছেন বাইচুং। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে গোটা বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে। সেটা জানিয়েছেন সভাপতি কল্যাণ।
আগামি ১৯ সেপ্টেম্বর অর্থাৎ সোমবার কলকাতায় এআইএফএফ-এর কর্মসমিতির প্রথম বৈঠক আয়োজিত হবে। ফেডারেশনের প্রথম মিটিং-এ না থাকলেও, কলকাতার আলোচনা শিবিরে যোগ দেবেন। চিঠিতে নিজেই সেটা জানিয়েছেন কর্মসমিতির অন্যতম সদস্য বাইচুং। বিশিষ্ট ফুটবলার হিসাবে তাঁকে বেছে নেওয়া হয়েছে। নিয়েছেন কর্মসমিতির বাকি সদস্যরা। বাইচুং-এর চিঠির প্রতিলিপি জি ২৪ ঘণ্টার কাছে এসেছে। দেখে নেওয়া যাক চিঠিতে কী লিখেছেন বাইচুং?
ডিয়ার স্যর,
১২.০৯.২০২২ সেপ্টেম্বর শাজি প্রভাকরণের যে চিঠি (AIFF/EXCO Meet- 19th Sept/2022/492) পেয়েছি, তাতে ৩.৯.২০২২ তারিখে অনুষ্ঠিত এক্সিকিউটিভ কমিটির মিটিং-এর ড্রাফট উল্লিখিত আছে এবং আসন্ন ১৯.০৯.২০২২-এর এক্সিকিউটিভ কমিটির মিটিংয়ের অ্যাজেন্ডাও লেখা আছে।
ব্যক্তিগত কারণে আমি আগের মিটিংয়ে উপস্থিত থাকতে পারিনি। পরবর্তী মিটিংয়ে আমি উপস্থিত থাকব।
৩ সেপ্টেম্বরের মিটিংয়ের যে ড্রাফট আমি দেখেছি, তাতে বেশ কিছু অসঙ্গতি আমার নজরে এসেছে।
দেখা যাচ্ছে, রোল কলে শাজি প্রভাকরণের উপস্থিতি নথিভুক্ত করা নেই। কিন্তু ড্রাফটে দেখতে পাচ্ছি যে এক্সিকিউটিভ কমিটির সদস্য না হয়েও তিনি গোটা বৈঠকেই উপস্থিত ছিলেন।
আপনার অনুমোদনের প্রেক্ষিতেই এক্সিকিউটিভ কমিটি ডক্টর প্রভাকরণকে তাঁরই উপস্থিতিতে ফেডারেশনের সেক্রেটারি জেনারেল পদে নিয়োগ করেছে।
এটা অত্যন্ত উদ্বেগজনক একটা বিষয় বলেই আমার মনে হয়। এর ফলে গোটা নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন ওঠাই স্বাভাবিক, এমনকী সেটা পক্ষপাতদুষ্ট বলেই মনে হয়। এটা নির্বাচন প্রক্রিয়া ও ফেডারেশন চালানোর পন্থার পক্ষে মোটেও ভাল লক্ষণ নয়।
এই প্রেক্ষিতে আমার প্রস্তাব এক্সিকিউটিভ কমিটি পরবর্তী মিটিংয়ে সেক্রেটারি জেনারেল পদে নিয়োগ নিয়ে পুনর্বিবেচনা করুক। ফেডারেশেনর জেনারেল সেক্রেটারি পদটা সর্বক্ষণের। সেই কারণে আইনসম্মত চুক্তির মাধ্যমে এই নিয়োগ প্রক্রিয়া হওয়া উচিত। নিয়োগ প্রক্রিয়া হওয়া উচিত স্বচ্ছ। সেই কারণে চাকরির সম্পূর্ণ শর্ত উল্লেখ করে বিজ্ঞাপন দেওয়া হোক। এই বিজ্ঞাপনে বেতন এবং নিয়োগ প্রক্রিয়ার উল্লেখ থাকা জরুরি। এক্সিকিউটিভ কমিটি অনুমোদন দিলে উল্লিখিত পদের জন্য চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে আবেদন চাওয়া যেতে পারে।
এ দিকে ফেডারেশনের দৈনন্দিন কাজ যাতে বিঘ্নিত না হয় সেই দিকটাও দেখা দরকার। একাধিক লিগের সিইও হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন শ্রী সুনন্দ ধর। ভারতীয় ফুটবল চালানোর অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর। সেই কারণে যতদিন না নতুন সেক্রেটারি জেনারেল নিয়োগ করা হচ্ছে, ততদিন কার্যনির্বাহী সচিব হিসেবে কাজ করার জন্য সুনন্দ ধরকে পুনর্বহাল করা হোক।
উপরোক্ত বিষয়গুলি নিয়ে পরবর্তী মিটিংয়ে আলোচনা হোক, সেই অনুরোধ আমি জানাচ্ছি।
ধন্যবাদান্তে
বাইচুং ভুটিয়া
বাইচুং-এর এই নতুন দাবি কিংবা অভিযোগ নিয়ে বাড়তি কথা বলতে নারাজ কল্যাণ। নতুন সভাপতি শুধু বলেন, 'বাইচুং আমাদের কর্মসমিতির অন্যতম সদস্য। তাই তিনি কোনও দাবি তুলতেই পারেন। এমনকি মতামতও দিতে পারেন। তবে বাকিটা কর্মসমিতির আলোচনায় গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে আলোচনা হবে।' গত ২ সেপ্টেম্বর ফেডারেশনের সভাপতি নির্বাচনে কল্যাণ চৌবের বিরুদ্ধে লড়েন বাইচুং। ১-৩৩ ব্যবধানে হেরে যান। বাইচুংকে সমর্থন করার পরেও সরে আসে রাজস্থান ফুটবল সংস্থা। আর এরপর থেকে ফেডারেশন ও ফুটবল হাউসের নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে একের পর এক তোপ দেগে চলেছেন ভারতীয় ফুটবলের আইকন।