Mohammed Siraj: 'ক্রিকেট ছেড়ে বাবার সঙ্গে অটো চালাও'! ধোনি বদলে দেন সিরাজের জীবন
সিরাজ জানালেন যে ধোনির কথাই বদলে দেয় তাঁর জীবনদর্শন।
নিজস্ব প্রতিবেদন: ভারতের তারকা পেসার মহম্মদ সিরাজ (Mohammed Siraj) মুখ খুললেন। তিনি জানালেন যে, ২০১৯ সালে আইপিএলে খারাপ পারফরম্যান্সের পর তাঁর ওপর দিয়ে ঠিক কী গিয়েছিল। তাঁকে ক্রিকেট ছেড়ে বাবার সঙ্গে অটো চালানোর পরামর্শই দেওয়া হয়েছিল। হায়দরাবাদের বছর সাতাশের জোরে বোলারকে এখন অনেকেই বিশ্বের অন্যতম সেরা পেসার হিসাবে দেখছেন। কিন্তু তিন বছর আগেও সিরাজের রাস্তা ছিল কাঁটায় ভর্তি। আরসিবি-র (Royal Challengers Bangalore) পডকাস্টে সিরাজ জানালেন যে, এমএস ধোনির (MS Dhoni) পরামর্শেই বদলে যায় তাঁর জীবন।
২০১৯ সালে আরসিবি তাদের আইপিএল ইতিহাসে অন্যতম হতশ্রী পারফরম্যান্স দিয়েছিল। টানা ৬ ম্যাচ হেরেছিল বিরাট কোহলি অ্যান্ড কোং। সেবার কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিরুদ্ধে সিরাজ ২.২ ওভার বল করে ৩৬ রান দিয়েছিলেন। সিরাজ ওভারে দু'টি বিমার দেওয়ায় কোহলি বাধ্য হয়েছিলেন তাঁকে বোলিং থেকে সরিয়ে দিতে। সিরাজ সেবারের বিমারের প্রসঙ্গে বলছেন, "আমি বিমার দেওয়ার পর লোকে আমাকে বলেছিল ক্রিকেট ছেড়ে বাবার সঙ্গে অটো চালাতে। এছাড়াও আরও অনেক মন্তব্য সহ্য করেছিলাম। কেউ আমার লড়াইটা দেখেনি। কিন্তু মাহি ভাইয়ের কথা ভুলিনি কখনও। সে আমাকে বলেছিল কে কী বলছে, তা যেন আমি না শুনি। ভাল করে মানুষ প্রশংসা করবে, খারাপ করলে গালিগালাজ শুনতে হবে। ফলে এগুলো যেন কখনই সিরিয়াসলি না নিই আমি। মাহি ভাই একদম ঠিকই বলেছিল। যারা আমাকে ট্রোল করেছিল, তারাই পরে বলেছিল সিরাজ ভাই তুমি সেরা বোলার। কারোর মন্তব্য সিরিয়াসলি নিইনি। তখন যে সিরাজ ছিলাম, এখনও সেই সিরাজই আছি।"
গতবছর সিরাজ যখন অস্ট্রেলিয়ায় অভিষেক টেস্ট খেলছিলেন, তখনই তাঁর বাবাকে হারান তিনি। কোভিড বিধির জন্য বাবার শেষকৃত্যেও আসতে পারেননি। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে আগুন জ্বেলেছিলেন সিরাজ। জীবনের প্রথম টেস্ট, তাও আবার অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে তাদের দেশেই খেলেছিলেন তিনি। চার ম্যাচের টেস্ট সিরিজে ৫ উইকেট সহ-১৩ উইকেট পান সিরাজ। পডকাস্টে বাবার কথা বলতে গিয়ে সিরাজ আবেগি হয়ে পড়েন। তিনি বলেন, "২০২০ সাল থেকেই বাবার শরীর ভাল যাচ্ছিল না। যখনই আমাদের কথা হতো, আমরা দু'জনেই খুব কাঁদতাম। এই কারণেই বাবার সঙ্গে বেশি কথা বলতাম না। আমার খুব অসহায় লাগত। যখন আইপিএল শেষ হয়ে যায়, কেউ বলেনি যে, বাবা খুব অসুস্থ। সবাই বলত বাবা শুয়ে আছে বা বিশ্রাম নিচ্ছে। আমি তাদের বলতাম, ঠিক আছে আমি বিরক্ত করব না ফোন করে। যখন আমি অস্ট্রেলিয়ায় পা রাখি তখনই শুনি বাবার অবস্থা সঙ্কটজনক। গোটা পরিবারের সঙ্গে লড়াই করেছিলাম, আমাকে বাবার শরীরের কথা আগে না জানানোর জন্য। সবাই বলেছিল, আমার খেলা থেকে যাতে ফোকাস নষ্ট না হয়, সেজন্য এমনটা করেছিল তারা। আমি শুনে খুব রেগে গিয়েছিলাম। আগে জানলে হয়তো অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার আগে বাবার সঙ্গে দেখা করে আসতে পারতাম।"
আরও পড়ুন: Cheteshwar Pujara: রানে ফিরতে সৌরভের দাওয়াই নিয়ে রঞ্জিতে চেতেশ্বর পূজারা
সিরাজের বাবা স্বপ্ন দেখতেন ছেলে দেশের হয়ে খেলবে। সিরাজ আরও জানিয়েছেন যে, তাঁর ছবি খবরের কাগজে ছাপা হলে, বাবা সেগুলি কেটে যত্ন করে রাখতেন। সিরাজ জানান যে, ছেলেকে দেশের জার্সিতে দেখে যেতে পারেননি বাবা। তাই জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের সময় মাঠেই কেঁদে ফেলেন সিরাজ। তাঁর কানে বারবার বাবার বলে যাওয়া কথাগুলো ভাসছিল।