রাহুলকে সরিয়ে ভারতীয় ক্রিকেটকে একসঙ্গে নিয়ন্ত্রণ করার প্রস্তাব দিয়ে ছিলেন চ্যাপেল: আত্মজীবনীতে আক্রমণত্মক সচিন
যখন ব্যাট হাতে বিশ্বকে শাসন করেছেন, তখন মাঠের বাইরে চিরকালই ডিফেন্সিভ থেকেছেন সচিন তেন্ডুলকর। এমনকি আজহারউদ্দিনের ভারতীয় দলকে নিয়ে গড়াপেটা বিতর্কে যখন উত্তাল আসমুদ্রহিমাচল তখনও মুখে কুলুপ এঁটে রেখেছিলেন এই ক্রিকেটীয় কিংবদন্তী। সব বিতর্ক থেকে সব সময় নিজেকে শতহস্ত দূরে রাখতেই পছন্দ করতেন সচিন। এই নিয়ে কম সমালোচনার মুখেও পড়তে হয়নি তাঁকে। গত বছরই ২২গজকে বিদায় জানিয়েছেন তিনি। তারপরে মন দিয়ে ছিলেন নিজের আত্মজীবনী লেখায়। আত্মজীবনীর ক্ষেত্রেও কি একই রকম ডিফেন্সিভ থাকবেন সচিন? প্রশ্ন ছিল সেটাই।
নয়া দিল্লি: যখন ব্যাট হাতে বিশ্বকে শাসন করেছেন, তখন মাঠের বাইরে চিরকালই ডিফেন্সিভ থেকেছেন সচিন তেন্ডুলকর। এমনকি আজহারউদ্দিনের ভারতীয় দলকে নিয়ে গড়াপেটা বিতর্কে যখন উত্তাল আসমুদ্রহিমাচল তখনও মুখে কুলুপ এঁটে রেখেছিলেন এই ক্রিকেটীয় কিংবদন্তী। সব বিতর্ক থেকে সব সময় নিজেকে শতহস্ত দূরে রাখতেই পছন্দ করতেন সচিন। এই নিয়ে কম সমালোচনার মুখেও পড়তে হয়নি তাঁকে। গত বছরই ২২গজকে বিদায় জানিয়েছেন তিনি। তারপরে মন দিয়ে ছিলেন নিজের আত্মজীবনী লেখায়। আত্মজীবনীর ক্ষেত্রেও কি একই রকম ডিফেন্সিভ থাকবেন সচিন? প্রশ্ন ছিল সেটাই।
আগামী বৃহস্পতিবারই বাজারে আসছে সচিনের আত্মজীবনী 'প্লেয়িং মাই ওয়ে'। তার আগেই জানা গেল শেন ওয়ার্নকে শাসন করে স্ট্রেটডাইভে মাঠের বাইরে পাঠানোর মতই আত্মজীবনীতে রয়েছেন আক্রমণাত্মক সচিন।
২০০৭ সালে বিশ্বকাপের আগে রাহুল দ্রাবিড়কে সরিয়ে তাঁকে অধিনায়ক হওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন তৎকালীন ভারতীয় কোচ গ্রেগ চ্যাপেল।
সচিনের বাড়িতে এসে চ্যাপেল জানিয়েছিলেন ""একসঙ্গে আমরা দীর্ঘদিন ভারতীয় ক্রিকেটকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারি।'' মাস্টারব্লাস্টারের এই লেখাতেই স্পষ্ট হয়ে গেছে চ্যাপেলের ক্ষমতালোভী চরিত্র।
আত্মজীবনীতে অস্ট্রেলিয়ান চ্যাপেলের তীব্র সমালোচনা করেছেন সচিন। চ্যাপেলকে "রিং মাস্টার' আখ্যা দিয়ে সচিন জানিয়েছেন ""চ্যাপেল সব সময় নিজের ভাবনা ক্রিকেটারদের উপর চাপিয়ে দিতেন চ্যাপেল। খেলোয়াড়দের প্রতি বিন্দুমাত্র সহানুভূতি ছিল না তাঁর। কোনও দিন ভাবারও চেষ্টা করেননি তাঁর সিদ্ধান্তে খেলোয়াড়রা আদৌ স্বাচ্ছন্দ্য কিনা।''
সচিনের বাড়িতে চ্যাপেল অধিনায়ক্ত্বের প্রস্তাব নিয়ে যাওয়ায় মাস্টারব্লাস্টারের সঙ্গেই চমকে উঠেছিলেন তাঁর স্ত্রী অঞ্জলিও।
সচিন লিখেছেন ক্রিকেটের সবথেকে বড় টুর্নামেন্ট শুরু হওয়ার মাত্র এক মাস আগে চোখের সামনে এমন এক কোচকে দেখে তিনি অবাক হয়েছিলেন, যাঁর নিজের দলেরই ক্যাপ্টেনের প্রতি বিন্দুমাত্র সম্মানবোধ নেই।
সচিন তাঁর প্রস্তাব তৎক্ষণাৎ খারিজ করে দেওয়ার পর ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে সচিনকে বোঝানোর চেষ্টা করেছিলেন চ্যাপেল।
এই ঘটনায় মাস্টারব্লাস্টার এতটাই বিরক্ত হয়ে ছিলেন যে ২০০৭-এর বিশ্বকাপের আগে বিসিসিআই-কে প্রস্তাব দিয়েছিলেন চ্যাপেলকে ভারতে রেখেই দলকে ওয়েস্ট ইন্ডিজে পাঠানোর। সিনিয়র প্লেয়াররাই দলের দায়িত্ব নিয়ে দলের একতা বজায় রাখতে পারবেন বলেও বোর্ডকে জানিয়েছিলেন তিনি।
"যদিও বাস্তবে সেটা ঘটেনি। ২০০৭ সালে কী ভয়ানক পরিণতি হয়েছিল সেতো সবারই জানা।'' আত্মজীবনীতে স্পষ্ট ভাষায় একথা লিখেছেন সচিন।
""চ্যাপেলের সময় ভারতীয় ক্রিকেটের চরম অবনতি হয়েছিল।'' একথা বলতেই ছাড়েননি বিদ্বংসী সচিন।
এমনকি সৌরভের প্রতি চ্যাপেলের আচরণকেও সমালোচয় বিদ্ধ করেছেন তিনি। ""সৌরভের জন্যই চাকরি পাওয়ার কথা প্রকাশ্যে স্বীকার করলেও, পরবর্তী কালে তাঁর প্রতি চ্যাপেলের আচরণ অতন্ত খারাপ ছিল।'' সরাসরি স্বীকার করেছেন সচিন।
""সত্যি কথা বলতে ভারতের সর্বকালের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ক্রিকেটার সৌরভ। ভারতীয় দলের থাকার জন্য চ্যাপেলের কোনও অনুগ্রহের প্রয়োজন ছিল না সৌরভের।'' একদা সহকর্মী-বন্ধু সৌরভ সম্পর্কে নিজের আত্মজীবনীতে এমনটাই মন্তব্য করেছেন লিটল মাস্টার।
আর এখানেই তৈরি হয়েছে অন্য এক বিতর্ক। সৌরভ যখন বারবার চ্যাপেলের স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ এনেছিলেন তখন কেন চুপ ছিলেন বন্ধু সচিন?