Sanath Seth: ৯১ বছরে প্রয়াত হলেন ভারতীয় ফুটবলের 'লেভ ইয়াসিন'
ভারতীয় ফুটবলে একটি অধ্যায়ের শেষ হল।
নিজস্ব প্রতিবেদন: প্রয়াত হলেন কিংবদন্তি গোলরক্ষক সনৎ শেঠ (Sanath Seth)। বৃহস্পতিবার পানিহাটির নিজের বাড়িতে সকাল ১০টা ৪০ নাগাদ শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন ভারতীয় ফুটবলে লেভ ইয়াসিন (Lev Yashin) নামে খ্যাত এই প্রবাদপ্রতিম গোলকিপার। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৯৩ বছর।
অনেক বছর ধরে পায়ের ব্যথায় ভুগতেন। ঠিক মতো হাঁটতে পারতেন না। সঙ্গী ছিল ক্রাচ। একইসঙ্গে বার্ধক্যজনিত একাধিক অসুখেও ভুগছিলেন এই প্রবাদপ্রতিম। তাঁর স্ত্রীরও মৃত্যু হয়েছে বছরখানেক আগে। পুত্র, পুত্রবধূ ও দুই নাতনিকে নিয়েই পানিহাতিতে থাকতেন এই গোলকিপার।
আরও পড়ুন: Pele: ক্রিসমাসের আগেই হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরলেন 'ফুটবল সম্রাট'
আরও পড়ুন: Happy Birthday Neeraj Chopra: জন্মদিনে 'সোনার ছেলে' Neeraj-এর পাঁচ কীর্তি
পানিহাটি বটতলায় আপাত শান্ত পাড়ায় যদি আপনি কোনও বৃদ্ধ গলায় রবীন্দ্র সংগীত শুনতে পান বা রেডিয়োর আওয়াজ পান তাহলে জানবেন সেটা সনৎ শেঠের । লাল রঙের গেট খুলে বাড়িতে প্রবেশ করলে আগন্তুকের পরিচয় জানার আগে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গানে সম্ভাষণ করতেন। তবে বৃহস্পতিবারের পর থেকে এই মুহূর্তগুলো আর চোখের সামনে ভেসে উঠবে না।
সালটা ১৯৪৯। তখন সনৎ শেঠের বয়স মাত্র ১৯। উত্তর ২৪ পরগনা জেলা লিগে দাপিয়ে গোলকিপিং করছেন। হঠাৎ একদিন ডাক এল রেলওয়ে এফসি ফুটবল ক্লাব থেকে। কারণ মোহনবাগানের বিরুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ তাদের প্রথম গোলকিপার অসুস্থ। দ্বিতীয় গোলরক্ষকের চোট। পাড়ার পরিচিত ফুটবল কর্তা ফণী ভট্টাচার্যের মাধ্যমে তাঁকে ডেকে পাঠান স্বরাজ ঘোষ। সেই শুরু পথচলা। তারপর ধীরে ধীরে ময়দানে থিতু হতে থাকলেন পানিহাটির সনৎ। তিন কাঠির তলায় সনৎ শেঠ থাকা মানে দলের বাকি ১০ জন একেবারে নিশ্চিন্ত। ময়দানে কান পাতলে এখনও সেই গল্পগুলো শোনা যায়।
১৯৪৯ থেকে ১৯৬৮ সাল পর্যন্ত কলকাতা ময়দানে দাপিয়ে খেলেছেন গোলকিপার সনৎ শেঠ। স্টার্ন রেল, এরিয়ান, ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগানের হয়ে তিন কাঠির নিচে দাঁড়িয়ে অজস্র ম্যাচে দলকে নির্ভরতা দিয়েছেন। খেলেছেন বাংলার হয়ে। জাতীয় দলেও সুযোগ মিলেছিল। ১৯৫৪-র ম্যানিলা এশিয়ান গেমসে ভারতীয় দলে ছিলেন। তবে প্রথম একাদশে সুযোগ মেলেনি। তখনকার দিনে চতুর্দলীয় প্রতিযোগিতায় পরপর দুই বছর ভারতীয় দলে ছিলেন। ১৯৫৫ সালে রাশিয়া সফরেও গিয়েছিলেন তিনি। প্রবল স্মৃতিশক্তির অধিকারী এই মানুষটির কাছে ফুটবল ইতিহাস জানতে ছুটে যেতেন অনেকেই।