সম্পত্তির লোভে মৃত্যুর আগেই মায়ের শ্রাদ্ধ করল সন্তানেরা
শুটুঙ্গা নদীর চড়ে একটি ঝুপড়ি তে আশ্রয় নিয়েছেন ৭৫ উর্ধ্ব ওই বৃদ্ধা
নিজস্ব প্রতিবেদন: সিনেমার কাহিনিকেও হার মানাবে সন্তানদের কীর্তি। জীবিত মায়ের শ্রাদ্ধ করে তাঁকে মৃত প্রমাণ করার চেষ্টা করল এক মেয়ে। অশীতিপর সেই মহিলার ঠাঁই এখন নদীর চরে। তাও নদীর চরে সেই ঝুপড়ি বানিয়ে দিয়েছেন এলাকার মানুষজন।
কী ভাবে হল এমন পরিণতি? জানা গেল ওই মহিলার মুখ থেকেই। একসময়ে প্রচুর বিষয় সম্পত্তি ছিল মাথাভাঙার নারায়ণী দাস নামে ওই মহিলার। স্বামী সহ তিন মেয়ে কে নিয়ে ছিল সুখের সংসার। দুই মেয়ের বিয়ের পর স্বামীও মারা যান। ছোট মেয়ে কে নিয়েই মাথাভাঙ্গার ৯ নং ওয়ার্ডে থাকতেন বৃদ্ধা। বেশ কিছুদিন পর তার ছোট মেয়ের বিয়ে দেন বিহারে। এরপর মাথাভাঙ্গার সমস্ত বিষয় সম্পত্তি বিক্রি করে মা নারায়ণী দাস কে নিয়ে বিহারে নিজের কাছে নিয়ে চলে যায় তার ছোট মেয়ে।
আরও পড়ুন-শোপিয়ানে গুলির লড়াইয়ে খতম ৬ জঙ্গি, শহিদ এক জওয়ান
সুখের সংসার ছেড়ে বিহার যাবার পরেই বিভীষিকা নেমে আসে বৃদ্ধা নারায়ণী দেবীর জীবনে। নিজের মাকে বাড়ি থেকে বার করে দেয় তার মেয়ে। প্রচুর সম্পত্তির অধিকারী বৃদ্ধা জীবনধারণের জন্যে শুরু করেন লোকের বাড়িতে পরিচারিকার কাজ।
এখানেই শেষ নয় গল্প। বছর খানেক পর পর বৃদ্ধার ছোট মেয়ে তার আত্মীয় পরিজনদের জানিয়ে দেন যে তার মা মারা গিয়েছেন। নিয়ম ও আচার মেনে সামাজিক মতে বৃদ্ধার শ্রাদ্ধ হয়ে যায় নারায়ণীর। ছোট মেয়ে ছাড়াও ওপর দুই মেয়ে মায়ের শ্রাদ্ধ করে নিজেদের বাড়িতে। কিন্তু শ্রাদ্ধর বেশ কিছুদিন পরে ওই বৃদ্ধা চলে আসেন মাথাভাঙ্গার ৯ নং ওয়ার্ডের তার মেজো মেয়ের বাড়িতে।
আরও পড়ুন-প্যারা গ্লাইডিং করতে গিয়ে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা, গাছে ধাক্কা লেগে মৃত্যু গাইডের
অভিযোগ ছোট মেয়ে ও তার জামাই ওই বৃদ্ধাকে পাটনা থেকে শিলিগুড়িতে নিয়ে এসে মাথাভাঙ্গার একটি বাসে তুলে দিয়ে চম্পট দেন।ওই বাসের কন্ডাক্টর মাথাভাঙ্গার শনি মন্দির মোর বৃদ্ধাকে নামিয়ে দিয়ে চলে যায়। চমকে ওঠে সকলে ।
মা কে পেয়ে উচ্ছাসিত হবার পরিবর্তে তার মেজো মেয়ে তাকে বাড়িতে স্থান দেন নি। অত্যন্ত অমানবিকতার এই ছবি যেকোনো ঘটনা কে হার মানাবে এই একবিংশ শতকে এসে ।
মেজো মেয়ের বক্তব্য , মায়ের শ্রাদ্ধ করে ফেলেছেন তারা । এখন কি করে তাকে বাড়িতে আশ্রয় দেবেন তারা । অবশেষে স্থানীয় কিছু মানুষের সহযোগিতায় মাথাভাঙ্গার শুটুঙ্গা নদীর চড়ে একটি ঝুপড়ি তে আশ্রয় নিয়েছেন ৭৫ উর্ধ্ব ওই বৃদ্ধা । ঝুপড়িটি বানিয়ে দিয়েছেন এলাকার মানুষ । বর্তমানে আশেপাশের মানুষের দয়ায় কোনো ক্রমে বেঁচে আছেন নারায়ণী দেবী । বয়স বাড়ার সাথে সাথে রোগ বেড়েছে তার শরীরে । তার কাতর আর্জি একটু চিকিৎসার । বৃদ্ধা জানান , তার জমি বিক্রি করে দিয়েছিল ছোট মেয়ে । এখন হাতে কিছুই নেই।