বাংলায় আর কাউকে প্রিয়জন না হারাতে হয়, শপথে মোদীকে বলবেন হতদের পরিজনরা
বুধবার হাওড়া স্টেশন থেকে রাজধানী ট্রেন ধরলেন ৫৬ জন মৃত সদস্যের ৭৩ জন পরিজন।
অঞ্জন রায়
কেউ হারিয়েছেন সন্তান। কেউ হারিয়েছেন বাবা। পরিজন হারানোর যন্ত্রণাকে সঙ্গী করে দিল্লি রওনা হলেন বাংলার নিহত বিজেপি কর্মীদের পরিজনরা। বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর শপথগ্রহণে আমন্ত্রিত তাঁরা। বুধবার দুপুরে হাওড়া স্টেশন থেকে রাজধানীতে চাপলেন মৃত বিজেপি কর্মীদের আত্মীয়রা। তাঁরা আমন্ত্রিত হওয়ায় শপথগ্রহণে যাচ্ছেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বুধবার হাওড়া স্টেশন থেকে রাজধানী ট্রেন ধরলেন ৫৬ জন মৃত সদস্যের ৭৩ জন পরিজন। প্রধানমন্ত্রীর শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার আনন্দের সঙ্গে মিশে রয়েছে বিষাদ। প্রিয়জন হারানোর যন্ত্রণা এখনও তাঁদের বুকে। এক মৃত বিজেপি কর্মীর বাবা বলেন,'নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দেখা হলে বলব, আর যেন বাংলায় কাউকে সন্তান হারা না হতে হয়'।
দাড়িভিটে পুলিসের গুলিতে মৃত দুই তরুণ তাপস এবং রাজেশের পরিবারও আমন্ত্রিত হয়েছে শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে। তেমনই আমন্ত্রিত হয়েছেন পুলওয়ামা বাবলু সাঁতরার মেয়ে পিয়া সাঁতরা।
কাশ্মীরের চেয়েও ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি বাংলা, নির্বাচনী প্রচারে গোটা দেশজুড়ে প্রচার করে বেরিয়েছে বিজেপি। খোদ নরেন্দ্র মোদীই জাতীয় সংবাদমাধ্যমে বলেছেন, বাংলায় বিজেপি কর্মীদের উপরে বর্বর অত্যাচার চালাচ্ছে শাসক দল। মেরে গাছে ঝুলিয়ে দেওয়া হচ্ছে। বারাণসীর সভায় নরেন্দ্র মোদী বলেছিলেন,''বাংলায় বিজেপি কর্মীরা বাড়ি থেকে বেরোনোর সময় বলে যান, মা আমি বিজেপির কাজে যাচ্ছি, আর নাও ফিরতে পারি। না ফিরলে কাল ছোট ভাইকে পাঠিয়ে দিও''। বেনজিরভাবে এই প্রথম কোনও প্রধানমন্ত্রীর শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে ডাক পেলেন সাধারণ কর্মীর পরিজনরা। রাজনৈতিক মহলের মতে, ২০২১-এর লড়াই শপথগ্রহণ থেকে শুরু করে দিলেন নরেন্দ্র মোদী। মৃতদের পরিজনকে আমন্ত্রিত করে নিচুস্তরের কর্মীদের পাশে থাকার বার্তা দেওয়া হল। একইসঙ্গে জাতীয়মঞ্চে বাংলার হিংসার চিত্রও তুলে ধরতে চাইছে বিজেপি।
বিজেপির মতলব বুঝেই মোদীর শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান বয়কট করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর দাবি, বাংলায় রাজনৈতিক হত্যা হয়নি। ব্যক্তিগত বিবাদ, রাজনীতি নয়, ব্যক্তিগত শত্রুতা, পারিবারিক বিবাদ ও অন্যান্য কারণে মৃত্যু হয়েছে। এমন কোনও রেকর্ড আমাদের কাছে নেই। নরেন্দ্র মোদী আমাকে অনুষ্ঠানে গরহাজির থাকতে বাধ্য করছেন। গণতন্ত্রের উজ্জাপন অনুষ্ঠানে রাজনৈতিক লাভ তোলার চেষ্টা করছে একটা রাজনৈতিক দল।
The oath-taking ceremony is an august occasion to celebrate democracy, not one that should be devalued by any political party pic.twitter.com/Mznq0xN11Q
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) May 29, 2019
বিজেপি নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয় দাবি করেন, যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো মানেন না মমতা। না যাওয়ার বাহানা খুঁজছিলেন। দিলীপ ঘোষ বলেন,''উনি কি মৃত্যু নিয়ে রাজনীতি করেননি! তাপসী মালিকের ধর্ষণ নিয়ে রাজনীতি করেছিলেন। তাপসী মালিকে ভুলে গেলেন? ধর্ষণের পর তরুণীকে নিয়ে কলকাতায় চলে এসেছিলেন। লাশ নিয়ে কলকাতায় আসছেন। মুখ্যমন্ত্রী পালিয়ে যাচ্ছেন। সত্যের মুখোমুখি ওনাকে হতেই হবে''।
আরও পড়ুন- পেট্রোল-ডিজেলের চেয়ে সাশ্রয়, ইলেকট্রিক গাড়িতে একবার চার্জেই ৩০০ কিলোমিটার