করোনায় মৃত্যু সন্দেহে সত্কারে বাধা, বৃদ্ধার দেহ বাড়িতেই সমাধিস্থ করলেন প্রাক্তন শিক্ষক

সন্দেহ, পলিথিনে বাঁধা মৃতদেহ করোনা রোগীর

Updated By: May 25, 2021, 10:07 PM IST
করোনায় মৃত্যু সন্দেহে সত্কারে বাধা, বৃদ্ধার দেহ বাড়িতেই সমাধিস্থ করলেন প্রাক্তন শিক্ষক

নিজস্ব প্রতিবেদন: করোনা আতঙ্কে এলাকার শ্মশানে মৃতদেহ সত্কার করতেই দিলেন না স্থানীয়রা। সন্দেহ, পলিথিনে বাঁধা মৃতদেহ করোনা রোগীর। তাতেই শ্মশানযাত্রীদের সঙ্গে হাতাহাতি স্থানীয়দের। বাধ্য হয়েই বয়সজনিত কারণে মৃত মহিলার দেহ নিজের বাড়িতেই সত্কার করলেন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক। আজ এমন এক ঘটনা ঘটেছে হিঙ্গলগঞ্জের উত্তর মামুদপুর গ্রামে।

হিঙ্গলগঞ্জের ওই গ্রামে সন্তোষ গুড়িয়া নামে এক প্রাক্তন শিক্ষকের বাড়িতে দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে পরিচারিকার কাজ করতেন গৌরী মণ্ডল নামে বৃদ্ধা। বার্ধক্যজনিত কারণে গত কয়েকদিন ধরে বৃদ্ধা ঠিকঠাক খেতে পারছিলেন না। তা দেখে সোমবার দুপুরে তাকে স্থা‌নীয় হিঙ্গলগঞ্জের ৯ নম্বর সান্ডেলেরবিল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওই দিন সন্ধে ৭টা নাগাদ তিনি মারা যান।

আরও পড়ুন-Yaas-এর জন্য চূড়ান্ত সতর্কতা, বুধবার প্রায় ১২ ঘণ্টা বন্ধ কলকাতা বিমানবন্দর

মঙ্গলবার সকালে ওই বৃদ্ধার প্লাস্টিকে বাঁধা মৃতদেহ নিয়ে ওই শিক্ষক, তাঁর ছেলে ও পরিচিতরা স্থানীয় বেলতলা শ্মশানে নিয়ে যান সৎকারের উদ্দেশ্যে। সেখানে তখন নদী বাঁধের কাজ চলছিল। বাঁধের কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত দেহ সৎকার করা যাবে না বলে জানিয়ে দেওয়া হয়। তখন দেহ হিঙ্গলগঞ্জ শ্মশানে আনা হয়। মৃতদেহ প্লাস্টিকে মোড়া থাকায় স্থানীয় বাসিন্দাদের তা করোনা রোগীর মৃতদেহ বলে সন্দেহ হয়। তাঁদের দাবি, এই শ্মশানে করোনায় মৃতের দেহ দাহ করা যাবে না।

 ওই আপত্তি শুনেই শিক্ষক ও তাঁর সঙ্গে যাওয়া লোকজন স্থানীদের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন। বচসা শেষপর্যন্ত ধাক্কাধাক্কির পর্যায়ে চলে যায়। বৃদ্ধার মৃত্যু পর হাসপাতাল থেকে হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যু হয়েছে বলে দেওয়া শংসাপত্র হয়। তা দেখালেও কেউ তা মানতে চায়নি। তখন ওই শিক্ষক ঠিক করেন, দুটো শ্মশান ফেরত বৃদ্ধার দেহ নিজের বাড়ির পাশের জমিতেই সমাধিস্থ করবেন। সেই মতো বৃদ্ধাকে এ দিন শিক্ষকের বাড়ির পাশের একটি জায়গায় সমাধিস্থ করা হয়।

আরও পড়ুন-Cyclone Yaas: উত্তাল দীঘার সমুদ্র, উপকূলে আছড়ে পড়ছে বড় বড় ঢেউ

অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক সন্তোষবাবু বলেন, ‘ আপাতত সমাধিস্থল নেট দিয়ে ঘিরে রাখা আছে। পরে বাঁধিয়ে দেওয়া হবে। তবে দুঃখ একটাই যে, নব্বই উর্দ্ধ এক বৃদ্ধার দেহ শ্মশানে নিয়ে গিয়েও পোড়ানো সম্ভব হল না।'  তাঁর ছেলে অনির্বাণ বলেন, 'আমাদের দেখানো হাসপাতালের শংসাপত্র কেউ মানতে রাজি হল না। তাই দেহ বাড়ি ফিরিয়ে এনে গ্রামের সকলকে ডেকে বাবা নিজের জমিতে কবরস্থ করার ব্যবস্থা করেন।

.