জেলায় জেলায় চলছে 'দুয়ারে সরকার', তুঙ্গে 'স্বাস্থ্যসাথী'র চাহিদা, দিলীপের কটাক্ষ 'নির্বাচনী স্টান্ট'

৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে এই "দুয়ারে সরকার" অভিযান। প্রথম ধাপ চলবে ১ ডিসেম্বর থেকে ১১ ডিসেম্বর পর্যন্ত।

Updated By: Dec 1, 2020, 01:22 PM IST
জেলায় জেলায় চলছে 'দুয়ারে সরকার', তুঙ্গে 'স্বাস্থ্যসাথী'র চাহিদা, দিলীপের কটাক্ষ 'নির্বাচনী স্টান্ট'

নিজস্ব প্রতিবেদন : আজ থেকে শুরু হয়েছে 'দুয়ারে সরকার'  কর্মসূচি। রাজ্যের ২০ হাজার ব্লকে এই কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। বাঁকুড়া সফরে গিয়েই সরকারের এই নয়া অভিযান কর্মসূচি সম্পর্কে ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্য সরকারের মোট ১২টি প্রকল্পের সুবিধা মানুষকে আরও বিশদে জানাতে, তাঁদের অভাব-অভিযোগ শুনতে বা কেউ যদি কোনও প্রকল্প থেকে বাদ গিয়ে থাকে তবে তাঁর নাম নথিভুক্ত করার লক্ষ্যেই নয়া এই 'দুয়ারে সরকার' অভিযান কর্মসূচি।

একনজরে জেলায় 'দুয়ারে সরকার'
- 'দুয়ারে সরকার' প্রকল্পে দুর্গাপুর-ফরিদপুর ব্লকের ঝাঝড়া কম্যুউনিটি সেন্টারে দেখা গেল মানুষের লম্বা লাইন। মানুষ এসেছে বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে।
- মুর্শিদাবাদের মদনপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে শুরু হয়েছে 'দুয়ারে সরকার'। বার্ধক্য ভাতা এবং কৃষি ঋণ পাওয়ার জন্য অনেক বয়স্ক মানুষ। লোক শিল্পীদের দিয়ে গানের মাধ্যমে ক্যাম্পে প্রচার চলছে। ক্যাম্পে হাজির বিভিন্ন দফতরের আধিকারিকরা।
- কাটোয়াতেও শুরু হয়েছে 'দুয়ারে সরকার'। কাটোয়ার পুরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডে কাটোয়া বালিকা বিদ্যালয়ে এই শিবির বসেছে। এলাকার সাধারণ মানুষ নানান সরকারি সুবিধা পেতে লাইন দিয়েছে শিবিরে। স্বাস্থ্যসাথী ও বার্ধক্য ভাতার সুবিধা পেতে ভিড় চোখে পড়ার মত।
- হুগলি জেলার বিভিন্ন পঞ্চায়েত ও পুরসভা এলাকাতেও শুরু হয়েছে 'দুয়ারে সরকার'। হুগলি জেলায় মোট ১১টি জায়গায় ক্যাম্প হয়েছে। চুঁচুড়া পুরসভার এক ও দুই নম্বর ওয়ার্ডের কেওটা কমিউনিটি হলে স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের ফর্ম জমা দেওয়া ও নেওয়ার কাজ চলছে। সকাল থেকেই ভিড় জমিয়েছেন উপভোক্তারা।
- বীরভূমেও বিভিন্ন পুরসভার কমিউনিটি হলে ও পঞ্চায়েত এলাকার বিভিন্ন জায়গা চলছে ক্যাম্প। সকাল থেকে ভিড় জমিয়েছেন সাধারণ মানুষ।
-পূর্ব বর্ধমানের মোট ১৮টি শিবিরে আজ থেকে "দুয়ারে সরকার" কর্মসূচির কাজ শুরু হয়েছে। এর মধ্যে বর্ধমান শহরে রয়েছে ২টি ক্যাম্প। বেলা যত গড়াচ্ছে, তত ভিড় বাড়ছে ক্যাম্পগুলিতে। বর্ধমান পুরসভার তরফে ৩টি ভ্রাম্যমান গাড়িতে গোটা শহরে কর্মসূচির প্রচার চলছে। বিভিন্ন প্রকল্পের সুযোগ-সুবিধা তুলে ধরতে ক্যাম্পে টাঙানো হয়েছে ব্যানার ও ফ্লেক্স। স্বাস্থ্যসাথী নিয়ে উপভোক্তাদের মধ্যে আগ্রহ চোখে পড়ার মত।
-'দুয়ারে সরকার' কর্মসূচি শুরু হয়েছে নদিয়াতেও। হরিণঘাটা ব্লকের ফতেপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় চলছে এই কর্মসূচি। সাধারণ মানুষ তাঁদের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে ক্যাম্পে উপস্থিত হয়েছেন। আলাদা আলাদা কাউন্টার করা হয়েছে উপভোক্তাদের জন্য।
- বাঁকুড়া শহরের ২০ নম্বর ওয়ার্ডের ময়রাবাঁধ এলাকায় মহামায়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পালিত হচ্ছে 'দুয়ারে সরকার' কর্মসূচি। কর্মসূচিকে ঘিরে এলাকার মানুষের উৎসাহ তুঙ্গে। বিভিন্ন সরকারি পরিষেবা সংক্রান্ত বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে মানুষ হাজির হয়েছেন ওই বিদ্যালয়ে।

দিলীপ ঘোষ : 'নির্বাচনী স্টান্ট'
যদিও রাজ্য সরকারের এই 'দুয়ারে সরকার' কর্মসূচিকে 'নির্বাচনী স্টান্ট' বলে কটাক্ষ করেছেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, "ঘরে ঘরে মমতা কর্মসূচি আসলে নির্বাচনী স্টান্ট। মমতা বন্দোপাধ্যায়ের সরকার এর আগে এধরনের অনেক প্রকল্প ঘোষণা করেছেন। কিন্তু মানুষ কিছু পায়নি। এখন এরফলে যদি বিডিওরা মানুষের কাছে যান, তাহলে ভালো। ইলেকশনকে কেন্দ্র করে স্টান্ট হচ্ছে।"

সুজন চক্রবর্তী : 'পঞ্চায়েত ফেল, সরকারি টাকায় দলের প্রচার'
সিপিআইএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, "কোটি কোটি টাকা খরচ করে পার্টির প্রচার হচ্ছে।  দুয়ারে সরকার পৌঁছে দিতেই তো পঞ্চায়েত ব‍্যবস্থা ছিল। তার মানে সেই ব‍্যবস্থা এখন ফেল! পঞ্চায়েত চোরে ভরে গিয়েছে, এটা কি মেনে নিচ্ছেন? পঞ্চায়েত ব‍্যর্থ। একশো ভাগ কাজ করেছেন, সেটা যদি সত‍্যি হয়, তবে কেন দুয়ারে যেতে হচ্ছে? সরকারি টাকায় কেন দলের প্রচার করছেন?"

প্রসঙ্গত, ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে এই "দুয়ারে সরকার" অভিযান। প্রথম ধাপ চলবে ১ ডিসেম্বর থেকে ১১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। দ্বিতীয় ধাপ ১৫ থেকে ২৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত। তৃতীয় ধাপ ২ জানুয়ারি থেকে ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত। চতুর্থ ধাপ ১৮ থেকে ২৮ জানুয়ারি পর্যন্ত। ১০০ দিনের কাজের জব কার্ড, খাদ্যসাথী, জাতিগত শংসাপত্র, শিক্ষাশ্রী, জয় জোহার, তফসিলি বন্ধু, ঐক্যশ্রী, কন্যাশ্রী, কৃষক বন্ধু, জমি মিউটেশন, রূপশ্রী প্রকল্পের সুবিধা পাবেন সাধারণ মানুষ। এছাড়া রেশন কার্ডে নাম-ঠিকানাও পরিবর্তন করা হবে।

আরও পড়ুন, সরকারি প্রকল্পের সুবিধা বোঝাতে শুরু হল 'চলুন মাস্টারমশাই ঘুরি বাড়ি বাড়ি', যোগ দিলেন অনুব্রতও

.