আমার ভাষণের সিডি করে ব্লকে ব্লকে কর্মীদের ট্রেনিং দিন, নির্দেশ মমতার

লোকসভা নির্বাচনে, নদিয়ায় ফল ভাল হয়নি তৃণমূলের। একটি লোকসভা আসনের দখল রাখা গেলেও অধিকাংশ বিধানসভাতেই, বিজেপির পিছনে ঘাসফুল।

Reported By: সুতপা সেন | Updated By: Feb 5, 2020, 09:42 PM IST
আমার ভাষণের সিডি করে ব্লকে ব্লকে কর্মীদের ট্রেনিং দিন, নির্দেশ মমতার

নিজস্ব প্রতিবেদন: দলে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বরদাস্ত করা হবে না। পুরভোটের আগে নদিয়া জেলার নেতাকর্মীদের কড়া নির্দেশ দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নেতানেত্রীদের নাম করেই তাঁর বার্তা, ভাল কাজে, প্রশংসা যেমন মিলবে তেমনই খারাপ কাজে সইতে হবে শাসনও। নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল, নাগরিক পঞ্জিকে সামনে রেখেই বিজেপির মোকাবিলার প্রেসক্রিপশন দিয়েছেন তিনি।    

যতজন নেতা, ততগুলো গোষ্ঠী। তার ওপর নবীন প্রবীণ দ্বন্দ্ব। সব জেলাতেই কমবেশি এসব সমস্যা থাকলেও নদিয়ায় তৃণমূলে অসুখটা কিঞ্চিত হলেও বেশি! জেলার দায়িত্ব পেয়ে মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের এখন মূল কাজটাই হল, নেতাদের একতারে বেঁধে ফেলা। এদিন কৃষ্ণনগরে দলের কর্মিসভায় সেই বার্তাই দিলেন তৃণমূল নেত্রী। তাঁর কথায়,''আমার দলের কর্মীদের আমি শাসন করব। ভালোবাসবও। ব্লক অফিস খুলুন। কেউ অভিমান করে চলে গেলে ডেকে আনুন। কোনো ইনডিভিজুয়াল নেতা নয়। যৌথ নেতৃত্বে তৃণমূল দল চলবে। সব অভিযোগ ক্রস চেক করি।'' তাঁর ভাষণের সিডি ব্লকে ব্লকে কর্মীদের ট্রেনিংয়ের জন্য ব্যবহার করার নির্দেশও দেন তৃণমূল নেত্রী। 

লোকসভা নির্বাচনে, নদিয়ায় ফল ভাল হয়নি তৃণমূলের। একটি লোকসভা আসনের দখল রাখা গেলেও অধিকাংশ বিধানসভাতেই, বিজেপির পিছনে ঘাসফুল। দরজায় কড়া নাড়ছে পুরভোট। শহরের ভোটে রেজাল্ট ভাল না হলে, সামনে বছর বিধানসভাতেও তার প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা। নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে নানা স্তরে রয়েছে নানারকম অভিযোগ। কর্মিসভায় মমতা দলকে সতর্ক করলেন, কে কোথায় কী করছে সবই তাঁর জানা। ভাল কাজে প্রশংসা যেমন মিলবে তেমনই খারাপ কাজ করলে সইতে হবে শাসনও। এর পাশাপাশি তাঁর বক্তব্য ব্লকে ব্লকে প্রচার করার উপদেশও দিয়েছেন মমতা। বলেন,''আপনার ভাষণ নোট করেন তো? এই ভাষণ সিডি করে ব্লকে ব্লকে শোনাবেন। কর্মীদের ট্রেনিং হয়ে যাবে। তারপর তাঁরা এনআরসি, সিএএ নিয়ে মানুষকে বোঝাবেন।''   

নদিয়ার ভোটে বড় ফ্যাক্টর হল উদ্বাস্তু মতুয়া ভোট। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনে সমর্থনে মতুয়া মহলে প্রচারের কৌশল নিয়েছে বিজেপি। একইসঙ্গে জেলার অনেক মানুষের মনে নাগরিক-পঞ্জি নিয়ে আছে আশঙ্কাও। এদিন, কৃষ্ণনগরে সিএএ-এনপিআর-এনআরসি বাংলায় হতে দেওয়া হবে না বলে ফের দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী। বিজেপির বিরুদ্ধে সক্রিয়তার সঙ্গে দলকে প্রচারে নামার নির্দেশও দেন। মমতা বলেন, আমরা কাউকে দেশ থেকে যেতে দেবনা। আপনাদের চলে যেতে হবে। আমরা বাঘের বাচ্চার মতো লড়াই করি। NPR NRC ও CAA নিয়ে বাইরের কিছু সাম্প্রদায়িক দল সাম্প্রদায়িক তাস খেলছে। মতুয়া উদ্বাস্তু নমঃশূদ্র দের বলছি সব কলোনিকে বৈধ করে দিয়েছি।'' 

কয়েকদিনের মধ্যেই রাজ্যের প্রায় ১০০টি পুরসভায় ভোট। দলের যেসব স্থানীয় নেতা এই বার টিকিট পাবেন না তাঁদের ক্ষোভ যে থাকবে সেটাও মোটে অজানা নয় তৃণমূল নেত্রীর। রাজনৈতিক মহল বলছে, সমস্ত দিক মাথায় রেখেই এদিন দলের নিচুতলার অসুখ সারানর চেষ্টা করলেন তিনি। 

আরও পড়ুন- আপার প্রাইমারি নিয়োগ-দুর্নীতি মামলায় ৩০টি পদ খালি রাখতে নির্দেশ হাইকোর্টের

.