Jalpaiguri Man Carries Mom's Dead Body: মায়ের মৃতদেহ কাঁধে তুলে হাঁটা দিয়েছিল ছেলে, জলপাইগুড়িতে গ্রেফতার স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার প্রধান
এই গ্রেফতারি নিয়ে ইতিমধ্যেই সুর চড়িয়েছে বিজেপি। দলের জেলা সভাপতি বাপি গোস্বামী বলেন, তৃণমূলের রাজ্যে সবই বেআইনি কাজকর্ম হচ্ছে, এক জন সমাজসেবী যে সাহায্যে করল তাকেই গ্রেফতার?
প্রদ্যুত দাস: গত ৫ জানুয়ারি এক মর্মান্তিক দৃশ্যের সাক্ষী ছিল জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজ। হাসপাতালের অ্যাম্বুল্যান্স না পেয়ে মায়ের মৃতদেহ কাঁধে নিয়েই হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে পড়েছিলেন ক্রান্তির বাসিন্দা রামপ্রসাদ দেওয়ান। ওই ঘটনায় বিতর্ক তৈরি হয়েছিল, অ্যাম্বুল্যান্স পাননি নাকি অ্য়াম্বুল্য়ান্স ইউনিয়নের সঙ্গে কোনও যোগাযোগই করেননি? প্রতিবাদ করেছিল জলপাইগুড়ি জেলা অ্যাম্বুলেন্স চালক ইউনিয়ন এবং তৃণমূল কংগ্রেস প্রভাবিত আইএনটিটিইউসি। কিন্তু শেষপর্যন্ত ওই মহিলার মৃতদেহ বাড়ি পৌঁছে দেয় স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা গ্রিন জলপাইগুড়ি। সেই সংগঠনের সম্পাদক অঙ্কুর দাসকে গ্রেফতার করল পুলিস।
আরও পড়ুন-জঙ্গি কার্যকলাপে জড়িত! খিদিরপুর থেকে গ্রেফতার হাওড়ার ২ যুবক
ঘটনার দিনই অ্য়াম্বুল্যান্স না পাওয়ার বিষয়টি যে ঠিক নয় তা নিয়ে সরব হল জেলা অ্য়াম্বুল্যান্স চালক ইউনিয়ন। সংগঠনের প্রধান দিলীপ দাস বলেন, কারও কাছে টাকা না থাকলে আমরা ফ্রি-তে মরদেহ বাড়িতে পৌঁছে দিই। আমাদের কাছে এলে আমরা বডি পৌঁছে দিতাম।
এদিকে, কোনও কোনও মহল থেকে ওইদিনের ঘটনাকে চক্রান্ত বলে দাবি করা হয়। এদিন আইএনটিটিইউসি টাউন ব্লক প্রেসিডেন্ট পুণ্যব্রত মিত্র বলেন, সংবাদমাধ্যম ও অ্যাম্বুল্যান্স ইউনিয়ন থেকে খবর পেলাম একটি পেশেন্ট পার্টি একটি মৃতদেহ ঘাড়ে করে নিয়ে যাচ্ছে। ওই খবর পেয়েই ছুটে আসি। আসার পর শুনলাম পেশেন্ট পার্টি হাসপাতালের চারতলা বা পাঁচতলা থেকে মৃতদেহ নামিয়েছে। তারপর তা কাঁধে করে এখান থেকে কিছুটা দূরে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ মোড়ে একটি অ্যাম্বুল্য়ান্সে উঠেছে। সংবাদমাধ্যমও ছিল। এই ব্যাপারটার মধ্যে কিছু একটা চক্রান্ত রয়েছে। জেলার মানুষ জানেন যে কোনও ক্রাইসিসে আমরা এগিয়ে আসি। যে কোনও বিপর্যয়ে বিনামূল্যে আমরা পরিষেবা দিয়ে থাকি। যে পেশেন্ট পার্টি এসেছিলেন তারা যদি একটু সময় নিয়ে চেষ্টা করেতেন তাহলে তারা অ্য়াম্বুল্যান্স পেয়ে যেতেন।
কেন গ্রেফতার? এনিয়ে জেলা পুলিস সুপার বিশ্বজিত মাহাতো জানান, একটা স্পেসিফিক কেস হয়েছিল কোতোয়ালি থানায়। অভিযোগ, একটা শ্রেণিকে সেখানে ডিফ্রেম করা হয়েছিল। ঘটনা ষড়যন্ত্রের অভিযোগ রয়েছে। সেই মোতাবিক ভেরিফিকেশন করে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে তিনি সহযোগিতা করছেন না বলে পুলিস হেপাজতের আবেদন করা হয়। পুরো ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এদিকে, অঙ্কুর দাসের গ্রেফতারের খবর পেয়ে জলপাইগুড়ি ছুটে আসেন জয় কৃষ্ণ দেওয়ান। মৃতার স্বামী জয়কৃষ্ণ দেওয়ান এর বক্তব্য, নিজেই মৃতদেহ নিয়ে রওনা দিয়েছিলেন বাড়ির পথে। কেউ তাকে এভাবে বডি নিয়ে যাওয়ার জন্য প্ররোচনা দেয়নি।
এই গ্রেফতারি নিয়ে ইতিমধ্যেই সুর চড়িয়েছে বিজেপি। দলের জেলা সভাপতি বাপি গোস্বামী বলেন, তৃণমূলের রাজ্যে সবই বেআইনি কাজকর্ম হচ্ছে, এক জন সমাজসেবী যে সাহায্যে করল তাকেই গ্রেফতার? এটা অন্যায়।