পান্তা ভাতে মিশেছিল আড়াই ইঞ্চি লম্বা সূচ, খেতে গিয়ে বিঁধল গলায়! তারপর...

এক্স-রে-তে ধরা পড়ে, গলার খাদ্যনালীতে বিঁধে থাকা সূচটি দ্রুত স্থান বদল করছে। যেকোনও সময় সূচটি গলার গুরুত্বপূর্ণ শিরা ও উপশিরাগুলিকে ভেদ করতে পারে।

Updated By: Jan 24, 2020, 05:09 PM IST
পান্তা ভাতে মিশেছিল আড়াই ইঞ্চি লম্বা সূচ, খেতে গিয়ে বিঁধল গলায়! তারপর...

নিজস্ব প্রতিবেদন : পান্তা ভাতের মধ্যে মিশে ছিল সূচ। খেতে গিয়ে ভাতের সঙ্গে মিশে থাকা সেই সূচ গিলে ফেলেছিলেন ফরিদা খাতুন। খাদ্যনালীতে গিয়ে আটকায় আড়াই ইঞ্চি মাপের সেই সূচ। তারপরই শুরু অসহ্য যন্ত্রণা। অবশেষে অস্ত্রোপচারে মিলল স্বস্তি। কার্ডিও থোরাসিক চিকিৎসকের অনুপস্থিতিতেই ঝুঁকিপূর্ণ অস্ত্রোপচারে সাফল্য হাসি হাসলেন বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসকরা। স্বস্তি পেলেন বছর পঞ্চাশের ফরিদা খাতুন।

জানা গিয়েছে, ২০ জানুয়ারি দুপুরে বাড়িতে পান্তা ভাত খাওয়ার সময়ই ফরিদা খাতুনের গলায় বিঁধে যায় সূচটি। পান্তা ভাতের মধ্যেই মিশে ছিল আড়াই ইঞ্চি লম্বা সূচটি। সেটি দাঁতে বা জিভে আটকানোর আগেই সোজা চলে যায় গলায় খাদ্যনালীতে। শুরু হয় যন্ত্রণা। খেতে গিয়ে গলায় কিছু একটা আটকে গিয়েছে বুঝতে পারেন ফরিদা খাতুন। কিন্তু তাই বলে আড়াই ইঞ্চি মাপের সূচ যে আটকে গিয়েছে, তা ভাবতেও পারেননি ফরিদা খাতুন বা তাঁর পরিবারের কেউই। এদিকে যন্ত্রণা বাড়তে থাকে। যন্ত্রণার চোটে কিছুক্ষণ পর অজ্ঞান হয়ে যান গৃহবধূ ফরিদা খাতুন।

পরিবারের লোকেরা জানিয়েছেন, এরপরই দ্রুত তাঁকে বিষ্ণুপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে এক্স-রে করে জানা যায়, গলার খাদ্যনালীতে আটকে রয়েছে একটি সূচ। অবিলম্বে অস্ত্রোপচার করে সেই সূচ বের করতে হবে। এদিকে বিষ্ণুপুর মহকুমা হাসপাতালে এই ধরনের অস্ত্রোপচারের পরিকাঠামো নেই। ফলে রোগীকে দ্রুত রেফার করে দেওয়া হয় বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজে। সেখানে পৌঁছানোর পর এক্স-রে-তে ধরা পড়ে, গলার খাদ্যনালীতে বিঁধে থাকা সূচটি দ্রুত স্থান বদল করছে। অত্যন্ত বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে সেটি। যেকোনও সময় সূচটি গলার গুরুত্বপূর্ণ শিরা ও উপশিরাগুলিকে ভেদ করতে পারে। সেক্ষেত্রে রোগীর জীবন সংশয় হতে পারে।

এখন এধরনের জটিল অস্ত্রোপচার কার্ডিও থোরাসিক চিকিৎসক ছাড়া একপ্রকার অসম্ভব। শুধু অসম্ভবই নয়, এই ধরনের অস্ত্রোপচার করা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণও বটে। কিন্তু হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজে কোনও কার্ডিও থোরাসিক চিকিৎসক নেই। এদিকে ওই অবস্থায় রোগীকে কলকাতায় স্থানান্তরিত করার চেষ্টা করলে সময় নষ্টও হবে। শেষে ঝুঁকি নিয়েই ফরিদার গলায় অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেন বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজের ইএনটি বিভাগের ৩ জন চিকিৎসকের একটি দল।

আরও পড়ুন, বাড়িতে চড়াও হয়ে অসুস্থ সন্তানকে নিয়ে নাচানাচি বৃহন্নলাদের, মৃত্যু সদ্যোজাতর

অবশেষে গতকাল, ২৩ জানুয়ারি হয় অস্ত্রোপচার। ২ ঘণ্টার ঝুঁকিপূর্ণ অস্ত্রোপচারে গলায় বিঁধে থাকা সেই সূচ বের করতে সক্ষম হন চিকিৎসকরা। কার্ডিও থোরাসিক চিকিৎসকের অনুপস্থিতিতে এধরনের জটিল অস্ত্রোপচারে সাফল্য অর্জন করে স্বস্তির হাসি বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজের ডাক্তারদের মুখে। অস্ত্রোপচার সফল হওয়ায় খুশি রোগীর পরিবারও।

.