'কিতল ফর ইসলাম', দ্বিতীয় হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে ফাঁস জঙ্গি নেটওয়ার্কের আরও সদস্য ও জেলার নাম!

হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের নামটির বাংলায় তর্জমা করলে দাঁড়ায় 'ইসলামের জন্য যুদ্ধ।'

Reported By: সুকান্ত মুখোপাধ্যায় | Edited By: সুদেষ্ণা পাল | Updated By: Sep 21, 2020, 01:23 PM IST
'কিতল ফর ইসলাম', দ্বিতীয় হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে ফাঁস জঙ্গি নেটওয়ার্কের আরও সদস্য ও জেলার নাম!
নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদন : রাজ্যে ধৃত ৬ জঙ্গিকে জেরা করে উঠে আসছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। গতকালই মুর্শিদাবাদ থেকে ধৃত জঙ্গি আবু সুফিয়ানের ফোন ঘেঁটে তদন্তকারীদের হাতে এসেছিল ২২ সদস্যের একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ। যে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের পুরো কথোপকথনই ছিল ডিলিটেড ফর্ম্যাটে। অর্থাত মুছে দেওয়া হয়েছিল পুরো কথোপকথনই। NIA-এর আইটি সেল সেই মুছে দেওয়া ডেটা উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছে। ইতিমধ্যেই তদন্তে খোঁজ মিলল জঙ্গিদের আরও একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের। 

নতুন এই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের নাম 'কিতল ফর ইসলাম।' যে গ্রুপের নামেই লুকিয়ে জেহাদি মনোভাব। 'কিতল' একটি আরবি শব্দ। এর মানে যুদ্ধ। অর্থাত, হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের নামটির বাংলায় তর্জমা করলে দাঁড়ায় 'ইসলামের জন্য যুদ্ধ।' নতুন এই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের হদিশ মিলতেই তা আরও উদ্বেগ বাড়িয়েছে  তদন্তকারীদের। এই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে জঙ্গি নেটওয়ার্কের আরও সদস্যের নাম পাওয়া গিয়েছে। পাশাপাশি, উঠে এসেছে আরও জেলার নাম। মুর্শিদাবাদকে 'এপিসেন্টার' করে এরাজ্যে আল-কায়দা কীভাবে জঙ্গি জাল বিস্তারের পরিকল্পনা করেছিল, তদন্ত যত এগোচ্ছে সেই ছবিটাই যেন আরও স্পষ্ট হয়ে উঠছে গোয়েন্দাদের কাছে।

এর আগেই জানা গিয়েছিল, ভারতে বড়সড় নাশকতার ছক কষেছিল আলকায়দার ভারতীয় উপমহাদেশীয় শাখা, যার নাম al-Qaeda in the Indian Subcontinent (AQIS)। আর এজন্য তারা ব্যবহার করতে চাইছে এখানকার বাসিন্দাদেরই। আলকায়দার ভারতীয় উপমহাদেশীয় শাখার লক্ষ্য-পাকিস্তান, আফগানিস্তান, ভারত, মায়ানমার ও বাংলাদেশ মিলে বৃহৎ ইসলামিক রাষ্ট্র গঠন।

প্রসঙ্গত বলে রাখি, এর আগে তদন্তে উঠে আসে যে জঙ্গিরা ডার্ক ওয়েবের মাধ্যমে একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ করত। ডার্ক ওয়েবের মাধ্যমেই চলত জঙ্গি সংগঠনের হয়ে নিয়োগ। ডার্ক ওয়েবের মাধ্যমেই করাচি থেকে আসত নির্দেশনামা। সেই অনুযায়ী এখানে কাজ করতেন 'লোন উল্ফ'রা। এবার তদন্তে উঠে এল যে শুধু ডার্ক ওয়েব নয়, তার থেকে আরও হাইটেক প্রযুক্তির 'ডিপ ওয়েব'-এরও ব্যবহার করত জঙ্গিরা।

পাশাপাশি, ইতিমধ্যেই তদন্তকারীদের হাতে এসেছে ধৃত জঙ্গি মইনুল মন্ডলের ফোন কলের রেকর্ডিং। মডিউলের কার্যকলাপ নিয়ে কিছু কথাবার্তা রয়েছে সেই রেকর্ডিংয়ে। কার সঙ্গে কথা বলছে সেটা এখনও পরিষ্কার নয়। তবে তদন্তকারীরা মনে করছেন, কথোপকথনটা হয়েছিল অন্য আরেক সদস্যের সঙ্গে। সে ‘শ্যাডো মেম্বার’দের মধ্যেই একজন। আর সে পশ্চিমবঙ্গেরই বাসিন্দা। তার খোঁজ পাওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন তদন্তকারী অফিসাররা।

উল্লেখ্য, আজ রাতে বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের ৩টি বিশেষ বিমানে করে ধৃত ৬ জঙ্গিকে ট্রানজিট রিমান্ডে দিল্লি  নিয়ে যাওয়া হবে। অন্যদিকে কেরল থেকে ধৃত ৩ জনকেও নিয়ে আসা হচ্ছে দিল্লিতে। দিল্লি উড়ে যাওয়ার আগে ধৃত জঙ্গিদের আরেক দফা জেরা করবে রাজ্যের এসটিএফ।

আরও পড়ুন,  ডিপ ওয়েবে চলত তথ্য লেনদেন, নেট ব্যাঙ্কিং; সে সব খুলছে না ধৃত জঙ্গিদের ফিঙ্গার প্রিন্টেও  

বাড়ির ভিতর গোপন সুড়ঙ্গে মজুত থাকত বোমা, ফোনে মিলল ২২ সদস্যের 'জঙ্গি নেটওয়ার্ক'!

মাদ্রাসার আড়ালে আল-কায়দায় নিয়োগ, জঙ্গি সংগঠনের জন্য অর্থ সংগ্রহ!

.